ETV Bharat / sitara

জন্মদিনে ETV ভারতের সঙ্গে আলাপচারিতায় রাজেশ্বর - hollywood actor birthday

আজ রাজেশ্বরের জন্মদিন। তাঁর সম্পর্কে অনেক অজানা কথা তুলে ধরল ETV ভারত সিতারা, কথা বলল অভিনেতার সঙ্গেও।

author img

By

Published : Aug 21, 2020, 2:20 PM IST

কলকাতা : খুব ছোটোবেলায় সকলকে বিভিন্ন ছবির দৃশ্য নকল করে দেখাতেন । সেই সঙ্গে তাঁর ভালোবাসা ছিল সংগীত । ছোটো থেকেই ছিলেন পারকিউশনিস্ট । বাজাতেন তবলাও । রবীন্দ্র সংগীত শেখা শুরু করেন 16 বছর বয়স থেকে । কিন্তু বিনোদনজগৎ রাজেশ্বরকে চিনল একজন অভিনেতা হিসেবে । আজ তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা । শুধু এই দেশের সীমানায় আটকে নেই তাঁর প্রতিভা । কলকাতা, মুম্বই পেরিয়ে চলে গেছেন আমেরিকায়, অর্থাৎ হলিউডেও কাজ করেছেন । আজ তাঁর জন্মদিন। তাঁর সম্পর্কে অনেক অজানা কথা তুলে ধরল ETV ভারত সিতারা, কথা বলল রাজেশ্বরের সঙ্গেও।

দেশভাগের আগে রাজেশ্বরের পরিবার থাকত ওপার বাংলার সিলেটে। দিল্লিতে বড় হওয়া রাজেশ্বরের কথাতেই তাই এখনও ওপার বাংলার টান। ছোটোবেলা থেকেই বিভিন্ন থিয়েটারদলে নাটক করেছেন। এমনকী, নেশনাল স্কুল অফ ড্রামাতেও (NSD) প্রশিক্ষিত হয়েছেন। তবে হতে চেয়েছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক। মুম্বইয়ে সুভাষ ঘাইয়ের হুইস্টলিং উডস ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউটে পরিচালক হওয়ার ট্রেনিং নিয়েছিলেন। কাজ করেছেন সহকারী পরিচালক হিসেবেও। কিন্তু পারফর্মিং আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করবেন বলে অভিনয় শিখতে চাইতেন প্রথাগতভাবে। আর তারপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লি স্ট্রাসবার্গ স্কুল ফর থিয়েটার অ্যান্ড ফিল্মে গিয়ে মেথড অ্যাক্টিংয়ে ট্রেনিং নিলেন। তবে তার আগেই হলিউডের সুযোগ আসে। অর্থাৎ, আমেরিকান চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন এই বঙ্গতনয়।

হলিউডে রাজেশ্বর কাজ করেছেন 'চ্যাটার' ছবিতে। সেখানে ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তার আগের বছর ভারতেই হলিউডের ছবি 'বেবি সেলার্স'এ কাজ করেন। সেখানে অভিনয় করেছিলেন জেনিফার ফিনিগন। শিশু পাচারের সঙ্গে জড়িত ছবির বিষয়বস্তু। আমেরিকায় দেখানো হয়েছিল ২০১৩ সালে। একজন শিশু পাচারকারী ব্যক্তি জাভেদের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রাজেশ্বর। ছবিটি দেখানো হয়েছিল UN জেনারেল অ্যাসেম্বলিতেও।

sdf
.
কথায় আছে অভিনেতাদের কোনও নির্দিষ্ট গণ্ডি নেই। তাঁদের বিচরণ সর্বত্র। তাই এহেন রাজেশ্বর পরবর্তীতে অভিনয় করেছেন বাংলা সিরিয়াল 'আঁচল'এও। সেখানেও তাঁর নাম ছিল রাজেশ্বরই। একদিকে হলিউড, অন্যদিকে বাংলা টেলিভিশন, বিনয়ী এই অভিনেতা কোনওদিনই বাছবিচার করে কাজ করেননি। যে চরিত্র সামনে এসেছে, ভগবানকে ধন্যবাদ জানিয়ে গ্রহণ করেছেন। ইউটিউবের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সিরিজ 'জয় হিন্দ'এ কাজ করেছেন। সেটি ছিল দেশের প্রথম ওয়েব কমিক শো। সাতটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিতে কাজ করেছেন রাজেশ্বর। যেমন 'তেরি মেরি ক্রিসমাস', 'লভি ডভি', 'বিনোদিনী', 'আই'ম হোম', 'রিহ্যাব', 'কাবাব মে কাটাপ্পা', 'ফ্লিপসাইড'। এছাড়াও, অসংখ্য বাণিজ্যিক ছবিতে বিভিন্ন তারকাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। অসংখ্য মিউজিক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। করেছেন মডেলিংও। সম্প্রতি তিনি বিদুলা ভট্টাচার্যর 'তাসের ঘর' ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছেন। বাংলা, হিন্দি ও আমেরিকান ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে গিয়ে রাজেশ্বর আমাদের বলেন, "মুম্বই বরাবরই প্রফেশনাল। আমেরিকা আরও বেশি প্রফেশনাল। বাংলার ব্যাপারটা একটু অন্য। বাংলা তো আমার জায়গা, যতই প্রবাসী হই না কেন। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার একটা উষ্ণতা অনুভব করেছি সবসময়। ভীষণ বাড়িবাড়ি মনে হয়।"খুবই সাধারণ পরিবারের ছেলে রাজেশ্বর। মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে যা হয় আরকী। বাড়িভর্তি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল। তাঁদের মাঝে অভিনেতা হওয়া কিংবা পারফর্মিং আর্টস নিয়ে কাজ করলেন কেবল রাজেশ্বেরই, পেলেন বাড়ির সাপোর্টও। ইন্ডাস্ট্রিতে নেপটিজম নিয়ে তিনি আমাদের বলেন, "নেপটিজম আছে। শুধু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আছে, এমনটা কিন্তু নয়। এই জিনিসটা রয়েছে সব জায়গায়। এটা খুব আনফেয়ার একটা জিনিস। আমাদের মতো মানুষ অনেক বছর ধরে স্ট্রাগল করে। যদিও আমি সেভাবে নেপটিজমের সম্মুখীন হয়নি। অন্যভাবে হয়েছি। এত বছর ধরে কাজ করেও, মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে ঢুকতে পারছিলাম না। বাইরে বাইরে থেকে কাজ করতে হয়েছে। আমার মনে হয় নেপটিজমের থেকেও যেটা বড় বিষয়, সেটা হল ভাগ্য। সুশান্তও তো সুশান্ত সিং রাজপুত হয়েছেন বাইরে থেকে এসেই। যাঁরা এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে চান, তাঁদের একটা কথাই বলব। লেগে থাকতে হবে। মাঝপথে হাল ছেড়ে দিলে ব্যর্থতাই আসবে। সেইসঙ্গে বাড়ির সাপোর্টাও খুব জরুরী।"
sdf
.
এখন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে চাইছেন রাজেশ্বর। 'তাসের ঘর' দিয়ে ফের দর্শকমনে জায়গা করে নিতে চাইছেন। তাঁর এই ইচ্ছে সত্যি হোক, রাজেশ্বরের জন্মদিনে সেই কামনাই করে ETV ভারত সিতারা।

কলকাতা : খুব ছোটোবেলায় সকলকে বিভিন্ন ছবির দৃশ্য নকল করে দেখাতেন । সেই সঙ্গে তাঁর ভালোবাসা ছিল সংগীত । ছোটো থেকেই ছিলেন পারকিউশনিস্ট । বাজাতেন তবলাও । রবীন্দ্র সংগীত শেখা শুরু করেন 16 বছর বয়স থেকে । কিন্তু বিনোদনজগৎ রাজেশ্বরকে চিনল একজন অভিনেতা হিসেবে । আজ তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা । শুধু এই দেশের সীমানায় আটকে নেই তাঁর প্রতিভা । কলকাতা, মুম্বই পেরিয়ে চলে গেছেন আমেরিকায়, অর্থাৎ হলিউডেও কাজ করেছেন । আজ তাঁর জন্মদিন। তাঁর সম্পর্কে অনেক অজানা কথা তুলে ধরল ETV ভারত সিতারা, কথা বলল রাজেশ্বরের সঙ্গেও।

দেশভাগের আগে রাজেশ্বরের পরিবার থাকত ওপার বাংলার সিলেটে। দিল্লিতে বড় হওয়া রাজেশ্বরের কথাতেই তাই এখনও ওপার বাংলার টান। ছোটোবেলা থেকেই বিভিন্ন থিয়েটারদলে নাটক করেছেন। এমনকী, নেশনাল স্কুল অফ ড্রামাতেও (NSD) প্রশিক্ষিত হয়েছেন। তবে হতে চেয়েছিলেন চলচ্চিত্র পরিচালক। মুম্বইয়ে সুভাষ ঘাইয়ের হুইস্টলিং উডস ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউটে পরিচালক হওয়ার ট্রেনিং নিয়েছিলেন। কাজ করেছেন সহকারী পরিচালক হিসেবেও। কিন্তু পারফর্মিং আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করবেন বলে অভিনয় শিখতে চাইতেন প্রথাগতভাবে। আর তারপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লি স্ট্রাসবার্গ স্কুল ফর থিয়েটার অ্যান্ড ফিল্মে গিয়ে মেথড অ্যাক্টিংয়ে ট্রেনিং নিলেন। তবে তার আগেই হলিউডের সুযোগ আসে। অর্থাৎ, আমেরিকান চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন এই বঙ্গতনয়।

হলিউডে রাজেশ্বর কাজ করেছেন 'চ্যাটার' ছবিতে। সেখানে ছোট্ট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তার আগের বছর ভারতেই হলিউডের ছবি 'বেবি সেলার্স'এ কাজ করেন। সেখানে অভিনয় করেছিলেন জেনিফার ফিনিগন। শিশু পাচারের সঙ্গে জড়িত ছবির বিষয়বস্তু। আমেরিকায় দেখানো হয়েছিল ২০১৩ সালে। একজন শিশু পাচারকারী ব্যক্তি জাভেদের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রাজেশ্বর। ছবিটি দেখানো হয়েছিল UN জেনারেল অ্যাসেম্বলিতেও।

sdf
.
কথায় আছে অভিনেতাদের কোনও নির্দিষ্ট গণ্ডি নেই। তাঁদের বিচরণ সর্বত্র। তাই এহেন রাজেশ্বর পরবর্তীতে অভিনয় করেছেন বাংলা সিরিয়াল 'আঁচল'এও। সেখানেও তাঁর নাম ছিল রাজেশ্বরই। একদিকে হলিউড, অন্যদিকে বাংলা টেলিভিশন, বিনয়ী এই অভিনেতা কোনওদিনই বাছবিচার করে কাজ করেননি। যে চরিত্র সামনে এসেছে, ভগবানকে ধন্যবাদ জানিয়ে গ্রহণ করেছেন। ইউটিউবের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সিরিজ 'জয় হিন্দ'এ কাজ করেছেন। সেটি ছিল দেশের প্রথম ওয়েব কমিক শো। সাতটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিতে কাজ করেছেন রাজেশ্বর। যেমন 'তেরি মেরি ক্রিসমাস', 'লভি ডভি', 'বিনোদিনী', 'আই'ম হোম', 'রিহ্যাব', 'কাবাব মে কাটাপ্পা', 'ফ্লিপসাইড'। এছাড়াও, অসংখ্য বাণিজ্যিক ছবিতে বিভিন্ন তারকাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। অসংখ্য মিউজিক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। করেছেন মডেলিংও। সম্প্রতি তিনি বিদুলা ভট্টাচার্যর 'তাসের ঘর' ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছেন। বাংলা, হিন্দি ও আমেরিকান ছবিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে বলতে গিয়ে রাজেশ্বর আমাদের বলেন, "মুম্বই বরাবরই প্রফেশনাল। আমেরিকা আরও বেশি প্রফেশনাল। বাংলার ব্যাপারটা একটু অন্য। বাংলা তো আমার জায়গা, যতই প্রবাসী হই না কেন। বাংলা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার একটা উষ্ণতা অনুভব করেছি সবসময়। ভীষণ বাড়িবাড়ি মনে হয়।"খুবই সাধারণ পরিবারের ছেলে রাজেশ্বর। মধ্যবিত্ত বাঙালি পরিবারে যা হয় আরকী। বাড়িভর্তি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, উকিল। তাঁদের মাঝে অভিনেতা হওয়া কিংবা পারফর্মিং আর্টস নিয়ে কাজ করলেন কেবল রাজেশ্বেরই, পেলেন বাড়ির সাপোর্টও। ইন্ডাস্ট্রিতে নেপটিজম নিয়ে তিনি আমাদের বলেন, "নেপটিজম আছে। শুধু আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আছে, এমনটা কিন্তু নয়। এই জিনিসটা রয়েছে সব জায়গায়। এটা খুব আনফেয়ার একটা জিনিস। আমাদের মতো মানুষ অনেক বছর ধরে স্ট্রাগল করে। যদিও আমি সেভাবে নেপটিজমের সম্মুখীন হয়নি। অন্যভাবে হয়েছি। এত বছর ধরে কাজ করেও, মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির ভেতরে ঢুকতে পারছিলাম না। বাইরে বাইরে থেকে কাজ করতে হয়েছে। আমার মনে হয় নেপটিজমের থেকেও যেটা বড় বিষয়, সেটা হল ভাগ্য। সুশান্তও তো সুশান্ত সিং রাজপুত হয়েছেন বাইরে থেকে এসেই। যাঁরা এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে চান, তাঁদের একটা কথাই বলব। লেগে থাকতে হবে। মাঝপথে হাল ছেড়ে দিলে ব্যর্থতাই আসবে। সেইসঙ্গে বাড়ির সাপোর্টাও খুব জরুরী।"
sdf
.
এখন বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে চাইছেন রাজেশ্বর। 'তাসের ঘর' দিয়ে ফের দর্শকমনে জায়গা করে নিতে চাইছেন। তাঁর এই ইচ্ছে সত্যি হোক, রাজেশ্বরের জন্মদিনে সেই কামনাই করে ETV ভারত সিতারা।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.