হায়দরাবাদ : 'মুঘল-ই-আজ়ম'-এর প্রিন্স সেলিম হোক বা 'দিদার'-ছবির অন্ধ গায়ক বা একজন খেলনা বিক্রেতা । যে কোনও ধরনের চরিত্রকেই অত্যন্ত সহজ ও সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তুলতেন দিলীপ কুমার । প্রতিটি চরিত্রের সঙ্গেই নিজেকে একাত্ম করে তুলতেন তিনি । আর তার মাধ্যমেই স্ক্রিনে জীবন্ত হয়ে উঠত সেই সব চরিত্র ।
তবে কোনও প্রশিক্ষণ থেকে অভিনয়ের দক্ষতা পাননি তিনি । আসলে সাহিত্যের প্রতি বরাবরই ঝোঁক রয়েছে তাঁর । আর সাহিত্য পড়ার ফলেই অভিনয় রপ্ত করতে পেরেছিলেন তিনি ।
হিন্দি সিনেমার স্বর্ণ যুগের একটা অংশ দিলীপ কুমার । যাঁর অভিনয় মন জয় করেছিল দর্শকদের । এছাড়া তাঁর অভিনয় থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অভিনয় শুরু করেছিলেন বর্তমান প্রজন্মের একাধিক প্রথম সারির তারকা ।
তবে বিভিন্ন ধরনের ছবিতে অভিনয় করলেও বলিউডে 'ট্র্যাজেডি কিং' হিসেবে পরিচিত তিনি । আর এই ধরনের দুঃখীর চরিত্রে অভিনয় করতে করতে একটা সময় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন । সেই সময় চিকিৎসকের পরামর্শ মতো অন্য ছবি করা শুরু করেন । তারপরই তাঁকে 'আন', 'আজ়াদ' ও 'কোহিনুর'-এর মতো ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে ।
1998 সালে 'কিলা' ছবিতে শেষবার অভিনয় করেছিলেন দিলীপ কুমার । তারপরই বড় পরদা থেকে চিরতরে বিদায় নিয়েছিলেন তিনি । তবে আজও পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এভারগ্রিন হয়ে রয়েছে তাঁর অভিনয় । অমিতাভ বচ্চন থেকে শুরু করে শাহরুখ খান ও আয়ুষ্মান খুরানা সহ একাধিক তারকা আজও ফলো করেন দিলীপ কুমারের অভিনয়কে । তবে শুধুমাত্র অভিনেতারাই নন । তাঁর অভিনয় পদ্ধতি মেনে চলেন পরিচালকরাও ।
বাবার ইচ্ছেতে দাবা খেলা শিখেছিলেন তিনি । কিন্তু, ছোটোথেকেই ফুটবল খেলা বড়ই ভালো লাগত তাঁর । আর ফুটবলের মতো সিনেমার প্রতিও তাঁর টান ছিল । যদিও তাঁর পরিবারের কেউই সিনেমা জগতকে একেবারেই ভালো চোখে দেখতেন না । শুধুমাত্র ভালোলাগার ইচ্ছেডানায় ভর দিয়ে সিনেমায় অভিনয় শুরু করেছিলেন তিনি ।
হয়তো ভাগ্যই তাঁকে এই পথ দেখিয়ে দিয়েছিল । তা না হলে কেন তাঁর বাবা পেশওয়ার থেকে মুম্বইতে এসেছিলেন ? কেনই বা নৈনিতালের মার্কেটে বম্বে টকিজ়ের মালকিন দেবিকা রানির চোখে পড়লেন তিনি ? আসলে হিন্দি সিনেমাকে প্রাণ জুগিয়েছিলেন দিলীপ কুমার ।