জেরুজালেম, 13 অক্টোবর: আজ ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের ষষ্ঠ দিন ৷ গত শনিবার ভোরে ইজরায়েলে হাজার হাজার রকেট হামলা চালায় হামাস ৷ একেবারে আচমকা এই আক্রমণের উত্তর দিতে কিছুটা সময় লেগেছে ইজরায়েলের ৷ তবে বর্তমানে ইজরায়েলের পালটা আক্রমণে তছনছ হয়ে গিয়েছে গাজা ৷
সোশাল মিডিয়ায় হামাসের অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করে দিয়েছে এক্স (টুইটার) ৷ প্রায় একশোরও বেশি অ্যাকাউন্ট মুছে দেওয়া হয়েছে ৷ এই পদক্ষেপের পর এক্সের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এক্স হ্যান্ডেলে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের কোনও জায়গা নেই ৷
ভূমধ্য়সাগরের তীরে এই ছোট্ট দেশ গাজায় 23 লক্ষ মানুষের বাস ৷ কিন্তু দেশে নেই বিদ্যুৎ-পানীয় জল ৷ এমনকী জ্বালানির সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইজরায়েল ৷ যুদ্ধে অপহৃত 150 জনকে বন্দি করেছে হামাস জঙ্গিরা ৷ ওই বন্দিদের না-ছাড়া পর্যন্ত প্যালেস্তাইন ভূখণ্ড গাজায় বেঁচে থাকার কোনও রসদই ঢুকতে দেবে না ইজরায়েল ৷
আরও পড়ুন: 'হামাসের মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছি', স্বীকারোক্তি ইজরায়েলের সেনা প্রধানের
এদিকে যুদ্ধের প্রথম দিন থেকেই ইজরায়েলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে আমেরিকা ৷ বৃহস্পতিবারই যুদ্ধদীর্ণ ইজরায়েল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন আমেরিকার সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিনকেন ৷ এদিন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে একটি বৈঠক করেন ব্লিনকেন ৷
অন্যদিকে গাজায় বেঁচে থাকার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলির সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে ইজরায়েল ৷ এতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলি ৷ এই ক'দিনে হামাস এবং ইজরায়েল দু'পক্ষেরই কমপক্ষে 2 হাজার 800 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷
গাজার বর্তমান পরিস্থিতি: 7 অক্টোবর, শনিবার থেকেই গাজায় ক্রমাগত হামলা চালাতে শুরু করেছে ইজরায়েল ৷ রাষ্ট্রসংঘের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, ইজরায়েলের আক্রমণে প্রায় 4 লক্ষ 23 হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে ৷ তারা রাষ্ট্রসংঘের স্কুলগুলিতে আশ্রয় নিয়েছে ৷ গাজার দৈর্ঘ্য মাত্র 40 কিলোমিটার ৷ এর সীমান্তে একদিকে ইজরায়েল, অন্য়দিকে ভূমধ্যসাগর আর আরেকদিকে মিশরের সঙ্গে সীমান্ত ৷
ইজরায়েল অবশ্য আগে থাকতেই এয়ার স্ট্রাইকের কথা জানিয়ে দিচ্ছে ৷ তবে প্যালেস্তাইনের নাগরিকদের আক্ষেপ, দেশে লুকিয়ে থাকার কোনও জায়গা নেই ৷ বৃহস্পতিবারই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে জ্বালানি একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে ৷ আর ক'দিনের মধ্য়ে তা নিঃশেষ হয়ে যাবে ৷ গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতালের মর্গটি মৃতদেহে উপচে পড়ছে ৷ এত ঘন ঘন সেখানে মতৃদেহ আসছে যে, পরিজনরা দেহগুলি শনাক্ত করার সময়টুকুও পাচ্ছে না ৷
গাজা শহরের শিফা হাসপাতাল খুব বেশি হলে 30টি দেহ রাখা সম্ভব ৷ এদিকে ইজরায়েলের বিমান হামলায় এত মানুষের মৃত্যু হয়েছে যে, মর্গের বাইরে গাড়ি পার্ক করার জায়গাতেও মৃতদেহ রাখতে হচ্ছে ৷ আর দেহগুলিতে যাতে পচন না-ধরে তার জন্য় কুলার চালানো হচ্ছে ৷ কিছু দেহ কংক্রিটের মেঝের উপর ফেলে রাখতে বাধ্য হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷ এর মধ্যে গাজায় ইন্টারনেট যোগাযোগও প্রায় নেই বললেই চলে ৷ মঙ্গলবার থেকে এই সংযোগ বিচ্ছিন্ন ৷
আরও পড়ুন: যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইজরায়েল থেকে কেরলে ফিরলেন তীর্থযাত্রীরা, ধন্যবাদ ভারতীয় দূতাবাসকে