কলম্বো, 6 এপ্রিল : জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে নিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ৷ 1 এপ্রিল দ্বীপরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি ৷ মঙ্গলবার রাতে একটি গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার কথা জানান প্রেসিডেন্ট (Sri Lankan President Gotabaya Rajapaksa revoked the state of emergency on 5 April night) ৷ঋণ জর্জরিত শ্রীলঙ্কা এখন চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে ৷ সঙ্গে রয়েছে বিদেশি ঋণের বোঝা ৷ দেশে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ, দৈনন্দিন সামগ্রী ৷ বৃহস্পতিবার, 31 মার্চ বিক্ষুব্ধ জনতা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে তাঁর বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ৷ এরপর 1 এপ্রিলই দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট ৷ এর জন্য প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষেকে (President Gotabaya Rajapaksa) দায়ী করেছে শ্রীলঙ্কাবাসী ৷ 3 এপ্রিল দেশজুড়ে আরও বড় আকারে আন্দোলনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল ৷ তা রুখতেই এই 'পাবলিক সিকিউরিটি অর্ডিন্যান্স' জারি করেছিলেন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে ৷ কার্ফু ছিল সারা দেশে ৷
বৃহস্পতিবার রাতে প্রেসিডেন্টের বাড়ির সামনে দু'টি সেনার গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা ৷ তারা সেখানে থাকা ব্যারিকেড তুলে ফেলে দেয় ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে টিয়ার গ্যাস এবং জলকামান চালাতে হয়েছে ৷ বহু লোককে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ কার্ফু সত্ত্বেও প্রতিবাদ চলেছে ৷ বিক্ষুব্ধ জনতা শীর্ষ নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করে আর্থিক সমস্যা সমাধানের দাবি জানিয়েছে ৷ এখন শ্রীলঙ্কায় দিনের মধ্যে 13 ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না ৷ জ্বালানি ও দৈনন্দিন সামগ্রী জোগাড় করতে মানুষকে নাজেহাল হয়ে যেতে হচ্ছে ৷ মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে 18.7 শতাংশ ৷
রবিবার, শ্রীলঙ্কায় 26 জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন ৷ মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কার শাসকদলের সদস্যরা একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ডাক দিয়েছে ৷ দেশের আর্থিক সমস্যার জন্য তাঁরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগ দাবি করেছে ৷ সংসদের সদস্যরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য অধ্যক্ষকে সব দলকে নিয়ে আলোচনা করার কথা জানিয়েছেন ৷ যদিও বৃহত্তম বিরোধী দল সামাগি জানা বালাওয়েগাওয়া বা এসজেবি (Samagi Jana Balawegaya, SJB) অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব সমর্থন করেনি এবং এখুনি প্রেসিডেন্টের ইস্তফা দাবি করেছে ৷
শ্রীলঙ্কার সংসদে 225 আসনের মধ্যে 54টি এসজেবি-র ৷ জোটবদ্ধ শাসকগোষ্ঠীর হাতে 150টি আসন ছিল ৷ কিন্তু সেই আসন হারিয়েছে শাসকদল ৷ রাজাপক্ষে অবশ্য পিঠ বাঁচাতে তাঁর সরকারের পক্ষ নিয়ে জানিয়েছেন, এই বিপুল বিদেশি ঋণের দায় তাঁর নয় এবং এই আর্থিক সংকট অতিমারির জন্য ৷ করোনা প্যানডেমিকে শ্রীলঙ্কার পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দেশের নিজস্ব আয় কমে গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন : State of Emergency in Sri Lanka : আর্থিক সঙ্কটে উত্তাল দ্বীপরাষ্ট্র, জরুরি অবস্থা ঘোষণা প্রেসিডেন্টের