কায়রো, 16 অক্টোবর: 6 মাস ধরে সুদানের সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধাসামরিক গোষ্ঠীর মধ্যে যুদ্ধের বলি 9 হাজার জনেরও বেশি মানুষ ৷ এমনই বিস্ফোরক দাবি করলেন রাষ্ট্রসংঘের মানবিক বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস ৷ তিনি সাম্প্রতিককালের ইতিহাসে এই ঘটনাকে সবচেয়ে খারাপ দুঃস্বপ্ন বলে ব্যাখ্যা করেছেন । যুদ্ধের 6 মাস পূর্তি উপলক্ষে রাষ্ট্রসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল মার্টিন গ্রিফিথস এক বিবৃতি জারি করেন ৷ তাতে তিনি বলেন, "ছয় মাস ধরে সাধারণ নাগরিকরা রক্তপাত ও সন্ত্রাস থেকে কোনও নিস্তার পায়নি । ধর্ষণ এবং যৌন নির্যাতনের ভয়ঙ্কর তথ্য সামনে আসছে ।"
প্রসঙ্গত, সামরিক প্রধান জেনারেল আবদেল-ফাত্তাহ বুরহান এবং আধা-সামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল মহাম্মদ হামদান দাগালো প্রকাশ্য যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছেন ৷ এর জেরে সুদানে হাজারও মানুষের মৃত্যু হয়েছে । যুদ্ধটি প্রাথমিকভাবে খার্তুমে শুরু হয়েছিল ৷ তবে দ্রুত সেটি পূর্ব আফ্রিকান দেশ জুড়ে অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে ৷ যার মধ্যে ইতিমধ্যেই সংঘাত-বিধ্বস্ত পশ্চিম দারফুর অঞ্চল রয়েছে ।
মার্টিন গ্রিফিথসের দাবি, যুদ্ধে 9 হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে এবং লক্ষ লক্ষ লোক তাদের বাড়িঘর ছাড়া হয়েছেন ৷ তাঁরা সুদানের অভ্যন্তরে বা প্রতিবেশী দেশগুলিতে নিরাপদ এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন । তিনি বলেন, সংঘর্ষের ফলে সম্প্রদায়গুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে । মানুষের কাছে জীবন রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত খাবারের জোগান নেই ৷ প্রতিবেশী দেশগুলিতে বিভিন্ন জিনিসের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷ কারণ সেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে ।"
রাষ্ট্রসংঘের তথ্য অনুযায়ী, সুদানে 4.5 মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং 1.2 মিলিয়নেরও বেশি মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলিতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে । যুদ্ধের ফলে দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি প্রায় 25 মিলিয়ন মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন পড়েছে । এই দুর্যোগের সঙ্গে সুদানের রাজধানী এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে কলেরার প্রাদুর্ভাবের খবর পাওয়া গিয়েছে ৷ খার্তুম, কর্দোফান এবং কাদারিফ প্রদেশে হাজার জনেরও বেশির কলেরা ধরা পড়েছে ।
আরও পড়ুন: সুদানের ওমদুরমানে 'সেনাবাহিনীর' বিমান হামলা, কমপক্ষে 22 জনের মৃত্যু
খার্তুম, ওমদুরমান এবং খার্তুমের উত্তরের শহরগুলির যুদ্ধে ভয়াবহ অবস্থা ৷ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় লাগাতার বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণ হচ্ছে । খার্তুম এবং দারফুরে ধর্ষণ এবং গণধর্ষণের খবর পাওয়া গিয়েছে ৷ এই ঘটনায় বেশিরভাগই র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সকে দায়ী করা হয়েছে । আরএসএফ এবং এর সহযোগী আরব মিলিশিয়াদেরও রাষ্ট্রসংঘ এবং আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠী দারফুরে নৃশংসতার জন্য অভিযুক্ত করেছিল ৷ (সংবাদ সংস্থা- এপি)