হিরোশিমা, 20 মে: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর জেলেনস্কির সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ আর এই বৈঠকের পরই আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে জল্পনা শুরু হয়েছে ৷ শনিবার জাপানের হিরোশিমাতে জি-7 শীর্ষ সম্মেলনের মাঝেই দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দেখা করলেন মোদি। এই প্রথম দুই নেতা ব্যক্তিগতভাবে বৈঠক করছেন বলে খবর। তবে কী দীর্ঘদিনের বন্ধু রাশিয়ার হাত ছেড়ে ইউক্রেনের দিকে ঝুঁকছে ভারত ?
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের সূত্রপাত হয়। প্রধানমন্ত্রী মোদি রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কির সঙ্গে বেশ কয়েকবার কথা বলেছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সেই বৈঠকের ছবি শেয়ার করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে জেলেনস্কি এবং মোদির বৈঠকে রয়েছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালও । জাপানের আমন্ত্রণে জি-7 শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে এদিন হিরোশিমায় পৌঁছেছেন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ৷
ভারত এর আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের একটি স্থায়ী এবং কূটনৈতিক সমাধান চেয়েছে ৷ এক্ষেত্রে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির মৃদু সমালোচনাও শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী মোদির গলায় ৷ গত বছরের সেপ্টেম্বরেই তিনি সাফ জানিয়েছিলেন, যে বর্তমান সময়, যুদ্ধের যুগ নয়। পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি পুতিনের কাছে হিংসা বন্ধ করে সব পক্ষের আলোচনায় বসার আবেদনও করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ তাঁর দাবি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব ৷
সেই মর্মে তিনি দু'পক্ষকেই আলোচনার টেবিলে বসার আবেদনও জানিয়েছিলেন ৷ স্পষ্টভাবে ভারত এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ অবস্থানেই থাকতে চেয়েছে ৷ রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদির ফোনালাপের উপর জোর দিয়ে, দিল্লির তরফে দাবি করা হয়েছে, এখন ইউক্রেন সঙ্কটে কৌশলগত অবস্থানেই থাকছে ভারত ৷ বিশ্বে সামগ্রিক জটিলতা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বের বিষয়ে দিল্লি নিজস্ব অবস্থান প্রতিফলিত করেছে ৷ অমীমাংসিত সীমানা সম্পর্কে নিজেদের উদ্বেগের কথাও স্পষ্ট করেছে ভারত ৷
আরও পড়ুন: হিরোশিমায় মহাত্মা গান্ধির আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন, আপ্লুত প্রধানমন্ত্রী মোদি
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কির সঙ্গেও এরপর অক্টোবরে ফোনে কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ৷ সূত্রের খবর, সেই সময় জেলেনস্কিকে মোদি জানিয়েছিলেন, সীমান্ত সমস্যায় কোনও সামরিক সমাধান হতে পারে না ৷ ভারত যে কোনও অবস্থায় শান্তি প্রতিষ্টায় অবদান রাখতে প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী মোদির দাবি, ভারত কূটনীতি এবং আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করা উচিত বলেই মনে করছে। এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী মোদি জি-7 সম্মেলনে যোগ দিতে জাপানে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী 19 মে থেকে 21 মে পর্যন্ত জি-7 শীর্ষ সম্মেলনের জন্য হিরোশিমায় থাকবেন ৷ তিনি খাদ্য, সার এবং শক্তি নিরাপত্তা-সহ বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের বিষয়ে কথা বলবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, জাপানে এসে জেলেনস্কি টুইট করে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের যারা হিতাকাঙ্খী এবং বন্ধু, তাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হবে বলে আশা। তিনি লিখেছেন, 'আমাদের জয়ের জন্য নিরাপত্তা এবং সহযোগিতার জন্য প্রার্থনা করব ৷'