কুইন্সল্যান্ড, 21 মার্চ: মানব সভ্যতা ও বিজ্ঞানের চাপে বদলে যাচ্ছে রাতের আকাশ (Changes in Night Sky) ! অভিজ্ঞ মহলের দাবি, বিশ্বজুড়ে বৈদ্যুতিক আলোর দাপাদাপিতে দূষিত হচ্ছে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ৷ আর তার জেরেই বদলে যাচ্ছে রাতের আকাশের চরিত্র ৷ পাশাপাশি, মহাকাশে দূষণ ছড়াচ্ছে পৃথিবী থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাঠানো কৃত্রিম উপগ্রহ এবং এইসব উপগ্রহ ও অন্য়ান্য মহাকাশযানের বর্জ্য (Satellites and Space Debris) ৷ এর ফলে পৃথিবীকে ঘিরে থাকা আকাশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ৷ খালি চোখেও যার প্রমাণ পাওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা ৷ তাঁদের বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট কারণগুলির জন্যই রাতের আকাশ আর আগের মতো ঘন অন্ধকার দেখায় না ৷ তার ঔজ্জ্বল্য বেড়েছে (Night Sky is becoming more and more Bright) ৷ আর এই উজ্জ্বলতা আড়াল করছে গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্রদের ৷ এতে গবেষণার কাজে সমস্যা হচ্ছে ৷
আগেই এই বিষয়ে একাধিক গবেষণা হয়েছে ৷ তাতে দেখা গিয়েছে, কৃত্রিম উপগ্রহ এবং বিভিন্ন মহাকাশযানের বর্জ্য রাতের আকাশের সামগ্রিক উজ্জ্বলতা বাড়িয়েছে ৷ এই তত্ত্ব বা দাবি কতটা সঠিক, তা জানতে নতুন একটি সমীক্ষা করা হয় ৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, উল্লেখিত সমস্য়াগুলির কারণে রাতের আকাশের স্বচ্ছতা কমেছে 7.5 শতাংশ ! এর ফলে গবেষণার কাজে খরচ বেড়েছে 21.8 মিলিয়ন মার্কিন ডলার !
তথ্য বলছে, যত দিন যাচ্ছে, পৃথিবীর কক্ষপথের আশপাশে কৃত্রিম উপগ্রহের সংখ্যা ততই বাড়ছে ৷ 2019 সাল থেকে এই সংখ্য়া দ্বিগুন বেড়ে হয়েছে প্রায় 7 হাজার 600 ৷ এর প্রধান কারণ হল, স্পেসএক্সের মতো সংস্থাগুলির যোগাযোগ সংক্রান্ত ব্যবসা ৷ বিশ্বের বাজার মুঠোয় পুরতে এই সংস্থাগুলি তাদের গ্রাহকদের সেরা মানের যোগাযোগব্যবস্থা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয় ৷ শক্তিশালী কৃত্রিম উপগ্রহ ছাড়া যা কোনও মতেই সম্ভব নয় ৷ আর তার জেরেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে ভিড় বাড়ছে এইসব উপগ্রহের ৷
আরও পড়ুন: মঙ্গলে সূর্যাস্ত ! মহাজাগতিক মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করল নাসার পাঠানো যান
বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, 2030 সালের মধ্য়েই পৃথিবীর কক্ষপথের চারপাশে ঘুরে বেড়ানো কৃত্রিম উপগ্রহের সংখ্যা হবে অন্তত 1 লক্ষ ! সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়বে বর্জ্য়ের পরিমাণ ৷ এর ফলে সৌরালোকের প্রতিফলন বাড়বে এবং রাতের আকাশ ক্রমশ আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে ৷ তাতে কাজ করতে সমস্যা হবে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের ৷