সিঙ্গাপুর, 14 মে: উল্লেখযোগ্য অসুস্থতা ছাড়াই ভাইরাস বহন করার জন্য বাদুড়ের অস্বাভাবিক ক্ষমতা রয়েছে ৷ সেই নিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে এ বার বিজ্ঞানীরা এমন একটি প্রোটিন আবিষ্কার করেছেন, যা মানুষের মধ্যে জ্বালা ধরানো বা ইনফ্লামেটরি রোগ এবং বার্ধক্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য নতুন কৌশল হয়ে উঠতে পারে ৷ গবেষণাটি সেল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ।
এই গবেষণায় ইনফ্ল্যামাসোম নামক মাল্টি-প্রোটিন কমপ্লেক্সের উপর ফোকাস করা হয়েছে, যা অত্যধিক সক্রিয় ইনফ্লামেশন বা জ্বালা-পোড়ার জন্য দায়ী, যা অনেক রোগে গুরুতর উপসর্গ সৃষ্টি করে । ইনফ্ল্যামাসোমগুলি বার্ধক্যকেও ত্বরান্বিত করে ৷ গবেষক দলটি আবিষ্কার করেছে যে, এএসসি2 নামক একটি ব্যাট প্রোটিন প্রদাহকে বাধা দেওয়ার শক্তিশালী ক্ষমতা রাখে, এর ফলে প্রদাহ সীমিত হয় ।
ডিউক-এনইউএস সিঙ্গাপুরের ইমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজেস (ইআইডি) প্রোগ্রামের অধ্যাপক ওয়াং লিন-ফা বলেন, "বাদুড় কোভিড-19 অতিমারির জন্য দায়ী সার্স-কভ-2 ভাইরাসের সম্ভাব্য জলাধার হিসেবে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল । কিন্তু ভাইরাল সংক্রমণ থেকে বাঁচার এই অনন্য ক্ষমতা মানুষের স্বাস্থ্যের উপরও খুব ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, যদি আমরা বুঝতে পারি যে কীভাবে তারা সেই ক্ষমতা অর্জন করতে পারে, এবং বুঝে তা কাজে লাগাতে পারি তবেই এটা সম্ভব ।"
এই গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, বাদুড় প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে রাখে ৷ ইঁদুরের মধ্যে পরীক্ষা করা বাদুড়ের প্রোটিন ভালো কার্যকরী হয়েছে । জিনগতভাবে পরিবর্তিত ইঁদুরের মধ্যে ব্যাট প্রোটিনের অভিব্যক্তি প্রদাহকে কমিয়ে দেয় এবং ভাইরাস-সহ বিভিন্ন রোগের তীব্রতা কমিয়ে দেয় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা ৷ এএসসি2 প্রোটিনের বিস্তারিত পরীক্ষায় অণুতে চারটি অ্যামিনো অ্যাসিড সনাক্ত করা হয়েছে যা এটি তৈরির চাবিকাঠি ছিল । ব্যাট প্রোটিন তার অনুরূপ মানব প্রোটিনের চেয়ে মানুষের চিকিৎসায় প্রদাহ কমাতে বেশি কার্যকরী।
অধ্যাপক ওয়াং-এর কথায়, "আমরা এই কাজের উপর ভিত্তি করে পেটেন্ট দাখিল করেছি এবং ওষুধ আবিষ্কারের জন্য বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের সন্ধান করছি । আমরা প্রদাহ-চালিত মানব রোগের জন্য একটি নতুন শ্রেণির প্রদাহবিরোধী ওষুধ তৈরি করার আশা রাখছি ৷"
আরও পড়ুন: বাদুড়ের দেহে 24 নয়া প্রজাতির করোনা ভাইরাসের সন্ধান দিলেন চিনা বিজ্ঞানীরা