কলকাতা, 7 মার্চ: কিশোরী থেকে যুবতী হওয়ার সন্ধিক্ষণে বোনকে শেষবার দেখেছিলেন মায়া চক্রবর্তী ৷ এক্কা-দোকার উঠোনে দু'বোন একে অপরের গলা জড়িয়ে ধরেছিল সেদিন ৷ এরপর 70 বছর ধরে বোনকে খুঁজেছেন মায়া দেবী ৷ পাননি ৷ এখন মায়াদেবীর চুলে রুপোলি রং ৷ বয়স প্রায় নব্বই (Women in Ninty finds her relative in Bangladesh through Ham Radio) ৷
তখন দেশে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের আগুন জ্বলছে ৷ 1940 সাল ৷ ভারত-বাংলাদেশের মাঝে কাঁটাতার নেই ৷ অবিভক্ত বাংলাদেশ থেকে অধুনা ঝাড়খণ্ডের ধানবাদে চলে আসেন মায়া চক্রবর্তী ৷ বীণাপানি চক্রবর্তী থেকে যান বাংলাদেশে ৷ ভারতে ঠোক্কর খেতে খেতে মায়াদেবীর ঠাঁই হয় দক্ষিণ 24 পরগনায় ৷ এখন তিনি প্রায় নব্বইয়ে ৷
মায়ার সংসারে কোনও অভাব নেই ৷ তিনি কলকাতায় সিঁথির মোড় এলাকায় থাকেন ৷ পুত্র কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধী বিভাগে কর্মরত ৷ তবে শৈশবে হারিয়ে যাওয়া বোন বীণাপানি চক্রবর্তী তাঁর সঙ্গে নেই ৷ এই আক্ষেপ গত 70 বছর ধরে তাড়া করেছে মায়াদেবীকে ৷ ছেলে শুভেন্দুকে তিনি মাসির খোঁজ করতে বলেছিলেন ৷ কর্মক্ষেত্রর যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ব্যর্থ হন ৷
আরও পড়ুন: বিশেষভাবে সক্ষম অন্ধ্রের নিখোঁজ প্রৌঢ়কে বাড়ি ফেরাল হ্যাম রেডিও
এদিকে মায়ের বয়স এবং দিদির সঙ্গে যোগাযোগের টান ক্রমেই বেড়ে চলেছে ৷ তাই হ্যাম রেডিয়োর সঙ্গে যোগাযোগ করেন শুভেন্দু ৷ মাসিকে খুঁজে দেওয়ার অনুরোধ রাখেন তাদের কাছে ৷ এতেই সন্ধান মেলে ৷ বাংলাদেশের হবিগঞ্জে খোঁজ মিলল বীণাপানিদেবীর পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের ৷ বীণাপাণির পুত্রের নাম রণজিৎ চক্রবর্তী ৷ হ্যামের মাধ্যমে শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর মাসতুতো ভাই রণজিতের কথা হয় । দুই ভাইয়ের দেখা হলেও কিন্তু দুই বোনের দেখা হল না ৷ কলকাতায় বসে মায়াদেবী শুনলেন তাঁর বোন বেঁচে নেই ৷ শত দুঃখের মুখেও হাসি ফুটল যখন মায়াদেবী শুনলেন, শুভেন্দু যখন বীণাপাণি দেবীকে খুঁজছিলেন, তখন রণজিৎও তাঁর মাসিকে খুঁজেছেন ৷ এর জন্য বারকয়েক ভারতেও এসেছিলেন রণজিৎ ৷ ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাস বলেন, "অ্যামেচার রেডিয়ো সোসাইটি বাংলাদেশ (এআরএসবি)-এর সদস্য সোহেল রানা খুব সহযোগিতা করেছেন ৷ বৃদ্ধার ইচ্ছা পূরণ করতে পেরে খুশি আমরা ৷"