নয়াদিল্লি, 4 জানুয়ারি: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে প্রতিবেদন প্রকাশিত হল চিনের গ্লোবাল টাইমস-এ ৷ ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অধীনে অর্থনৈতিক, সামাজিক শাসন ও বিদেশনীতির ক্ষেত্রে ভারতের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে ৷ এই নিয়ে ভারতের প্রশংসা করা হয়েছে সেখানে ৷ ভারত উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও কৌশলগতভাবে আত্মবিশ্বাসী এবং সক্রিয় হয়ে উঠেছে । ভারত তাদের নিজস্ব একটি ব্যাখ্যাও তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন ৷
গ্লোবাল টাইমস, চিনে রাষ্ট্র পরিচালিত একটি মিডিয়া আউটলেট৷ সেখানেই এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে ৷ সাংহাইয়ের ফুদান ইউনিভার্সিটির সেন্টার সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের ডিরেক্টর ঝাং জিয়াডং এই প্রতিবেদনটি লিখেছেন ৷ ওই প্রতিবেদনে গত চার বছরে ভারতের উল্লেখযোগ্য সাফল্যগুলিকে তুলে ধরা হয়েছে । এটি ভারতের শক্তিশালী অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, শহুরে শাসন ব্যবস্থার উন্নতি ও চিন-সহ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের প্রতি মনোভাবের পরিবর্তনের কথাও উল্লেখ করেছে ৷
প্রতিবেদনে ঝাং জিয়াডং লিখেছেন, "উদাহরণস্বরূপ, চিন এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা নিয়ে আলোচনা করার সময়, ভারতীয় প্রতিনিধিরা আগে প্রাথমিকভাবে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা কমাতে চিনের পদক্ষেপের উপর দৃষ্টি দিতেন । কিন্তু এখন তারা ভারতের রফতানি সম্ভাবনার উপর বেশি জোর দিচ্ছেন ৷" ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে দ্রুত অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিকাশের সঙ্গে ভারত আরও কৌশলগতভাবে আত্মবিশ্বাসী ও নিজস্ব ব্যাখ্যা তৈরি করতে এবং সেটার বিকাশে আরও সক্রিয় হয়ে উঠেছে ।
গত 2 জানুয়ারি ওই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় ৷ সেখানে আরও লেখা হয়েছে, "রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে, ভারত গণতান্ত্রিক রাজনীতির 'ভারতীয় বৈশিষ্ট্য' তুলে ধরার জন্য পশ্চিমের সঙ্গে তার গণতান্ত্রিক ঐক্যমত্যের উপর জোর দেওয়া থেকে সরে এসেছে । বর্তমানে, গণতান্ত্রিক রাজনীতির ভারতীয় উৎসের উপর আরও বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে ৷" এই পরিবর্তন সম্বন্ধে লেখক জানিয়েছেন, এর থেকে বোঝা যাচ্ছে যে ভারত তার ঐতিহাসিক ঔপনিবেশিক ছায়া থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে ৷ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ‘বিশ্ব পরামর্শদাতা’ হিসাবে কাজ করার চেষ্টা করছে ভারত ।
ওই প্রতিবেদবনে প্রধানমন্ত্রী মোদির অধীনে ভারতের বিদেশনীতির কৌশলেরও প্রশংসা করা হয়েছে ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও রাশিয়ার মতো বড় শক্তিগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক জোরদার হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে । রাশিয়া ও ইউক্রেন সংঘাতে ভারতের অবস্থানের বিষয়টি নিয়েও লেখা হয়েছে সেখানে ৷ প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে বিদেশনীতিতে ভারতের কৌশলগত চিন্তাভাবনা অন্য একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এবং স্পষ্টতই একটি মহান শক্তি হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ।
প্রতিবেদনে ঝাং জিয়াডং আরও লিখেছেন, "প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় বসার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, রাশিয়া ও অন্যান্য দেশ এবং আঞ্চলিক সংস্থাগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে উন্নীত করে বহু-সংখ্যাবদ্ধ কৌশলের পক্ষে কথা বলছেন ৷ ভারত সবসময় নিজেকে একটি বিশ্বশক্তি বলে মনে করে । যদিও, ভারতের বহু-ভারসাম্য থেকে বহু-সারিবদ্ধতায় স্থানান্তরিত হওয়ার ঘটনা মাত্র 10 বছরেরও কম সময় হয়েছে ৷ আর এখন এটি বহু মেরুর বিশ্বে একটি মেরুতে পরিণত হওয়ার কৌশলের দিকে দ্রুত রূপান্তরিত হচ্ছে । আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসে এমন পরিবর্তনের গতি খুব কমই দেখা যায় ।"
একেবারে শেষে লেখক ঝাং জিয়াডং লিখেছেন, "বোঝা যাচ্ছে যে একটি রূপান্তরিত, শক্তিশালী এবং আরও দৃঢ় ভারত একটি নতুন ভূ-রাজনৈতিক ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে, যা অনেক দেশকে বিবেচনা করতে হবে ।"
সংবাদসংস্থা - পিটিআই
আরও পড়ুন: