বেথলেহেম (ইজরায়েল), 17 ডিসেম্বর: জৌলুসহীন বড়দিন যীশুর জন্মস্থান বেথলেহেমে ৷ যেখানে কোনও আলোর সাজসজ্জা ও ক্রিসমাস ট্রি নেই । বেরং বেথলেহেমের ঐতিহ্যবাহী ম্যাঞ্জার স্কোয়ারে ৷ চলছে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধে। সেই যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব ইজরায়েল অধিকৃত প্যালেস্তাইনের ঐতিহাসিক বেথেলহম শহরে। যে শহরের অলি-গলি আলোকিত থাকে বড়দিন উপলক্ষে প্রতি বছর ।
ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের কারণে যিশু খ্রিস্টের জন্মস্থানের কর্তারা বড়দিন উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ বড়দিনে বেথলেহেম শহরে পর্যটন-নির্ভর অর্থনীতি ব্যাপকভাবে ফুলে-ফেঁপে ওঠে ৷ এই সময় বেথলেহেম শহরে বিদেশ থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন ৷ কিন্তু, বড়দিনের উৎসব পালন না করার সিদ্ধান্তে সেই পর্যটন শিল্পে বড় আঘাত এসেছে ৷
এ নিয়ে বেথলেহেমের মেয়র হানা হানিয়াহ জানিয়েছেন, গাজায় বসবাসকারী প্যালেস্তেনিয়দের অপরিসীম দুর্ভোগের সময়ে আনন্দ উল্লাস কখনই শোভা দেয় না ৷ অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে বলে সংবাদসংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে জানিয়েছেন তিনি ৷ হানা হানিয়াহ বলেন, ‘‘আমাদের এখানকার মানুষের সঙ্গে গাজার প্যালেস্তেনিয়দের দুর্দশার কোনও তুলনা হয় না ৷’’ গাজায় জঙ্গি সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের বায়ুসেনা ও সেনার হামলায় 19 হাজারের বেশি প্যালেস্তেনিয়র মৃত্যু হয়েছে এখনও পর্যন্ত ৷ আর আহতের সংখ্যা 50 হাজারের উপরে ৷ এমনই তথ্য দিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ ৷
শুধু প্রাণহানি বা জখম নয় ৷ গাজার 2.3 মিলিয়ন বাড়িঘরের 85 শতাংশ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ৷ তবে, এই যুদ্ধের সূচনা করেছিল জঙ্গি সংগঠন হামাস ৷ 7 অক্টোবর আকাশপথে দক্ষিণ ইজরায়েলে গোলাবর্ষণ শুরু করে তারা ৷ যে হামলায় ইজরায়েলের প্রায় 1200 জনের মৃত্যু হয় ৷ তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক ছিলেন ৷ আর 249 জনকে যুদ্ধবন্দি করে হামাস জঙ্গিরা ৷ সেই সময় থেকে বেথলেহেম এবং অন্যান্য প্যালেস্তাইন শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে ৷ মূলত, ইজরায়েলের দখলে থাকা পশ্চিম প্রান্তের সঙ্গে বাইরের জগতের কোনওরকম যোগাযোগ নেই ৷
পরিস্থিতি এমনই যে, গাজা-মিশরের সীমান্তের চেক পোস্টে লাইন দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে ৷ কিন্তু, রসদ এবং অন্যান্য জরুরি সামগ্রী নিয়ে গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না ট্রাকগুলি ৷ এমনকি গাজায় বসবাসকারী প্যালেস্তেনিয়দের কাজের জন্য ইজরায়েলে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে ৷ তাই এই পরিস্থিতিতে এবছরের বড়দিনে যীশু খ্রিস্টের জন্মস্থান বেথলেহেমের ম্যাঞ্জার স্কোয়ারে কোনও উৎসব পালন করা হবে না ৷
আরও পড়ুন: