রোম, 6 মে : কোরোনার সংক্রমণ রুখতে ভ্যাকসিন তৈরির উদ্যোগ নতুন বিষয় নয় । প্রায় প্রত্যেকটি দেশই এই চেষ্টা চালাচ্ছে । ভারতে বিভিন্ন IIT-র সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে বেশ কয়েকটি সংস্থা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। এরই মধ্যে ইট্যালির একদল গবেষক কোরোনার ভ্যাকসিন তৈরি করে ফেলেছেন বলে দাবি করলেন । যা নাকি মানুষের শরীরে প্রয়োগের পর কোরোনামুক্ত করা সম্ভব হবে । ইট্যালির এক সংবাদ সংস্থার খবর অনুযায়ী, টাকিস নামে এক সংস্থার গবেষকরা এই সংক্রান্ত গবেষণা চালাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিশ্বজুড়ে কোরোনার যে সকল ভ্যাকসিন নিয়ে পরীক্ষা চলছে, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে ।
এই ভ্যাকসিনের মধ্যে এমন অ্যান্টিবডি রয়েছে যা ইঁদুরের মধ্যে থাকে। যা মানব কোষেও কাজ করবে। রোমের স্প্যালানজানি হাসপাতালে এই সংক্রান্ত পরীক্ষা চলছে বলে জানা গেছে (এই রিপোর্টটি সত্যতা যাচাই করেনি ETV ভারত)। ভ্যাকসিনটি মানুষের DNA প্রোটিন "স্পাইক" -এর জেনেটিক উপাদানগুলির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হচ্ছে । রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভ্য়াকসিনটি "স্পাইক" প্রোটিনের বিরুদ্ধে বিশেষত ফুসফুসের কোষগুলিতে অ্যান্টিবডি তৈরির জন্য কাজ করবে । যা কোরোনা ভাইরাসের প্রভাবকে কমাতে সাহায্য করবে ।
টাকিস নামক ওই সংস্থাটির প্রধান লুইগি অরিসিচিয়োর কথায়, এই ভ্যাকসিনের আরও দ্রুত উন্নয়নের জন্য তাঁরা আন্তর্জাতিক সহযোগিতার চেষ্টা চালাচ্ছেন ।সাধারণত কোনও ভ্যাকসিন তৈরিতে পাঁচ বছর সময় লেগে যায়। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এক্ষেত্রে সময় কম লাগতে পারে। এবিষয়ে বিল গেটস জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটি এভাবে তৈরিতে 9 মাস লাগতে পারে, আবার দু'বছরও লাগতে পারে । প্রসঙ্গত, তাঁর সংস্থাও কোরোনার মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছে । কিছুদিন আগেই তিনি বলেছিলেন, ভ্যাকসিন তৈরিতে DNA এবং RNA-র ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে । ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রেও এমন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু কাজ করেনি । তবে, COVID -19 হয়ত প্রথম এমন রোগ, যেক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে সাফল্য মিলতে পারে ।
গেটস আরও বলেছিলেন, "কারোর শরীরে প্যাথোজেনের অ্যান্টিজেন ইনজেক্ট করার পরিবর্তে সেই অ্যান্টিজেন নিজেই তৈরি করার জন্য দেহকে জেনেটিক কোড দেওয়া হোক। অ্যান্টিজেনগুলি কোষের বাইরের অংশে থাকালে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সেগুলিকে আক্রমণ করে। এই প্রক্রিয়ায় শরীর কীভাবে ভবিষ্যতের অনুপ্রবেশকারীদের পরাস্ত করা যায় তা শিখে ফেলবে। এবং শরীরের ভিতরেই ভ্যাকসিন তৈরির ক্ষমতা তৈরি হয়ে যাবে । "
তবে, গেটস বলছেন, একটি সুরক্ষিত ও যথাযত প্রভাব সম্পন্ন ভ্যাকসিন তৈরি করার প্রক্রিয়া দীর্ঘ । কারণ, ভ্যাকসিন তৈরি করা, তার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ এবং পরে বৃহৎ পরিমাণে তার উৎপাদন করতে অনেকটা সময় লাগবে ।