খারকিভ, 28 ফেব্রুয়ারি : ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পঞ্চম দিনের মাথায় আলোচনার টেবিলে বসেছে দু'পক্ষ ৷ ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে যে বার্তা এসে পৌঁছেছে সেখানে জানানো হয়েছে, ইউক্রেন থেকে অবিলম্বে সেনা প্রত্যর্পণ করে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করুক রাশিয়া ৷ শান্তি বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয় হবে এটাই ৷ তারমধ্যেই ভয়ঙ্কর বিস্ফোরণ ঘটল খারকিভে । রাশিয়ান মিসাইল আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে 11 জনের, আহত হয়েছেন অনেকে (11 killed in blast in Ukraine Kharkiv) ।
ইউক্রেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, রাশিয়ার আক্রমণে ইতিমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন 198 জন ৷ ছবির মতো সুন্দর দেশের আকাশ বিষিয়ে গিয়েছে কালো ধোঁয়ায় । রুশ ক্ষেপনাস্ত্র, বোমারু হেলিকপ্টার, ঝাঁকে ঝাঁকে মিসাইল হানায় জীবন বিপন্ন৷ প্রাণ বাঁচাতে বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন দেশের বাসিন্দারা ৷
ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে প্রিপ্যাট নদীর পাশে আলোচনার টেবিলে বসার যে প্রস্তাব রাশিয়ার তরফে ইউক্রেনের কাছে গিয়েছিল, প্রাথমিকভাবে সেই প্রস্তাবে রাজি ছিলেন না জেলেনস্কি (Ukraine had earlier refused to hold talks near Belarus) ৷ কারণ বেলারুশ সীমান্ত থেকেই রুশ সেনারা প্রথম আঘাত হেনেছিল ইউক্রেনে ৷
আরও পড়ুন : বিপদে দেশ, রুশ আগ্রাসন ঠেকাতে হাতে বন্দুক তুলে নিচ্ছেন ইউক্রেনীয় সুন্দরীরা
তাই পরিবর্তে শান্তি বৈঠকের জন্য পরিবর্তে পোল্যান্ডের ওয়ারশ, হাঙ্গেরির বুদাপেস্ট, স্লোভাকিয়ার ব্রাতিস্লোভা, তুরস্কের ইস্তানবুল কিংবা আজারবাইজানের রাজধানী বাকুর নাম প্রস্তাব করেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ৷ তবে দেশের কথা ভেবে আলাপ-আলোচনায় শেষ পর্যন্ত বেলারুশেই বৈঠকে সম্মতি প্রদান করেন জেলেনস্কি ৷
দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অলেক্সি রেজনিকোভের নেতৃত্বে এদিন শান্তি বৈঠকে অংশগ্রহণ করে ইউক্রেন ৷ বৈঠকের আগে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে যে বার্তা প্রতিনিধি দলের কাছে এসে পৌঁছয় সেখানে বলা হয়, ইউক্রেন থেকে অবিলম্বে সেনা প্রত্যর্পণ করে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করুক রাশিয়া ৷ শান্তি বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয় হোক এটাই ৷ বৈঠকের মাঝে ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোকে পুতিন জানান, জেলেনস্কির দাবি তিনি মেনে নিতে প্রস্তুত তবে সেক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় সেনাদের নিরস্ত্রীকরণ করতে হবে এবং ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে (Putin is ready to end the fight if Ukraine demilitarises and recognises Russian sovereignty over Crimea) ৷
বৈঠকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দাবি করে দুঃসময়ে তারা ইউক্রেনকে আর্থিক এবং মানসিক দিক থেকে সমর্থন জুগিয়ে যাবে ৷ একইসঙ্গে অবিলম্বে রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে বলে তারা ৷ রাষ্ট্রপতি জেলেনস্কি এদিন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাশিয়ার সদস্যপদও দাখিল করেন ৷ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পাল্টা দিয়ে রাশিয়া জানায়, তারা এই শত্রুতা শুরু করেনি ৷ বরং যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই তাতে রাশ টানতে সমঝোতার পথ খুঁজে আসছে তারা ৷