কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি : শুধু চিনের স্বাস্থ্যে নয়, বিশ্ব অর্থনীতিতেও কোরোনা ভাইরাসের প্রভাব হতে পারে ভয়ংকর ৷ এখনও পর্যন্ত চিনে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন 811 জন ৷ বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা 36 হাজার 690 ৷ যে হারে চিনে এই ভাইরাসের প্রভাবে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে তা বিশ্ব অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে ৷
2003-র পর থেকে বিশ্ব ব্যবসায় চিনের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ৷ আইফোন থেকে শুরু করে তেল, কপার সবই বিশ্বব্যাপী সরবরাহ করে চিন ৷ এছাড়া দেশের বহু ধনী উপভোক্তা ব্যয়বহুল পণ্য, ভ্রমণ ও গাড়ি ব্যবসাতে খরচ করে থাকেন ৷ 2003 সালে বিশ্ব GDP-তে চিনের অর্থনীতির হার ছিল চার শতাংশ ৷ যা বর্তমানে 16 শতাংশে পৌঁছেছে ৷
2003 সালে বিশ্বজুড়ে সেভায়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (SARS) ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল 774 জনের ৷ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল 8,098 ৷ কোরোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা তাকেও ছাপিয়ে গেল ৷ ইউহান-সহ বেশ কয়েকটি শহরকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু, তারপরও ছড়িয়ে চলেছে এই ভাইরাস ৷ অর্থনীতিবিদ নিল শিয়ারিং জানান, বিশ্বায়নের ফলে বিশ্বব্যাপী সংস্থাগুলি বিভিন্ন দেশে বণ্টন শৃঙ্খলা তৈরি করেছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিকে আরও মজবুত করেছে ৷ বর্তমানে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বিশ্ব অর্থনীতি ও বিশ্ব বাজারে ভয়ংকর প্রভাব ফেলার ক্ষমতা রাখে ৷ কিন্তু, এই ভাইরাস কতটা ছড়াচ্ছে তার উপরই এর প্রভাবের পরিমাণ নির্ভর করছে ৷
গত কয়েক বছরে বিভিন্ন দেশ বহু পণ্যর জন্য চিনের উপর নির্ভরশীল ৷ কিন্তু, কোরোনা ভাইরাসের ফলে শুধু চিনের স্বাস্থ্য নয় ভেঙে পড়তে শুরু করেছে অর্থনীতিও ৷ একে একে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বহু শহর ৷ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে একাধিক উড়ান পরিষেবা ৷ যা প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতেও ৷
গতমাসেই অ্যামেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করেছেন৷ অ্যামেরিকার অর্থনীতিতে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে চিন ৷ অন্যদিকে, ভারত, বাংলাদেশ, চিন, মায়ানমারের মধ্যে একটি বাণিজ্য শৃঙ্খলা চলছে গত কয়েক বছর ধরে ৷ এই দেশগুলিতে বিভিন্ন বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করাও হচ্ছে ৷ কিন্তু, ভাইরাসের প্রভাব বাড়তে থাকলে একটি চিন্তার বিষয় হয়ে উঠবে ৷ ব্যবসার কাজে বিভিন্ন দেশের মানুষ বিভিন্ন দেশ গিয়ে থাকে ৷ এসব যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে দেশের পরিকাঠামো ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনাগুলিতেও প্রভাব পড়বে ৷
ইতিমধ্যে, চিনের বিমান পরিষেবাকেও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ভ্রমণ সংস্থাগুলির উপর ৷ এভাবে চলতে থাকলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্কে প্রভাব পড়বে ৷ বাড়তে থাকবে আমদানি-রপ্তানি শুল্ক ৷ পণ্য সরবরাহের পরিমাণও কমত থাকবে ৷ অ্যামেরিকা, ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, মায়ানমারে বিনিয়োগও চিনের ব্যবসা কমে যেতে পারে ৷ যা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে ৷