ইসলামাবাদ, ৮ মার্চ : ন'দিনে তিনবার। প্রথম দু'বার ছিল প্রতিকূল আবহাওয়া ও সাংগঠনিক কারণ। আর এবার তা হল নিরাপত্তাজনিত সমস্যা। আর এই কারণ দেখিয়ে বালাকোটের মাদ্রাসা ও আশপাশের বাড়িগুলিতে এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের ঢুকতে দিল না পাকিস্তানের প্রশাসন।
১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় ৪০ জন CRPF জওয়ান শহিদ হন। তারপর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর ও পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ডের বালাকোটে জইশের তিনটি ট্রেনিং ক্যাম্প গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় বায়ুসেনার ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান। কত জঙ্গি খতম হয়েছে তা নিয়ে ভারতের তরফ থেকে সরকারিভাবে কোনও সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। ভারতীয় বিদেশসচিব বিজয় গোখেল বলেন, "জইশের প্রথম সারির একাধিক জঙ্গি, সিনিয়র কমান্ডার, ট্রেনার, জ়েহাদিদের খতম করা হয়েছে।" যদিও প্রথম থেকেই পাকিস্তান সেই দাবি উড়িয়ে দিচ্ছে। তাদের পালটা বক্তব্য বোমার আঘাতে এলাকায় একটি বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। কয়েকটি পাইন গাছ নষ্ট হয়েছে। কোনও প্রাণহানি হয়নি। যদিও নিজেদের দাবিতে অনড় ভারত।
বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ঘটনাস্থানে গিয়ে জানিয়েছিল, বোমা পড়লেও এলাকায় ধ্বংসের কোনও চিহ্ন নেই। তাদের দাবি, ১০০ মিটার দূর থেকেও তাঁরা মাদ্রাসাটি দেখতে পেয়েছেন। ভারতের তরফে বলা হয়, সেটি আদতে জইশের ট্রেনিং ক্যাম্প ছিল। তাই সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের বক্তব্য ছিল, মাদ্রাসায় কোনও ধ্বংসের ছবিও নেই। তাতে সায় দেয় পাকিস্তান। তারপরও ইসলামাবাদে মিলিটারি প্রেস উইংয়ের তরফে বলা হয়েছে, আগামী কয়েকদিন ওই এলাকায় নিরাপত্তার কারণে বাইরের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।
আর এখানেই পাকিস্তানের দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের প্রশ্ন, যদি ভারতের অভিযানে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হয় তাহলে কেন সংবাদমাধ্যমকে আটকানো হচ্ছে? বিশেষত সেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের যাদের তরফে কার্যত পাকিস্তানের দাবিকেই সমর্থন করা হচ্ছে? তাহলে কি কিছু লুকোতে চাইছে পাকিস্তান? আর এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে আন্তর্জাতিক মহলে!