ওয়াশিংটন, 13 জুলাই : করোনা মোকাবিলায় নতুন অস্ত্র হাতে পেলেন গবেষকরা ৷ তৈরি করলেন কোভিড ভাইরাসের একটি বিকৃত সিন্থেটিক সংস্করণ (Synthetic SARS-CoV-2) ৷ যা রুখে দেবে করোনার বাড়বাড়ন্ত ৷ সম্প্রতি পিয়ার জি (PeerJ) নামে একটি বিজ্ঞান পত্রিকায় এই সংক্রান্ত একটি সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ৷ তাতে গবেষকরা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টির একটি বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন ৷ তাঁরা বলছেন, সার্স-কোভিড ভাইরাস যখন কোনও কোষকে আক্রমণ করে, তখন সেই কোষের বাইরের আবরণের সঙ্গে সেটি আটকে যায় এবং ভাইরাসটি তার নিজস্ব জিনগত উপাদান (genetic material) ওই কোষে ঢুকিয়ে (injects) দেয় ৷ এর ফলে সংশ্লিষ্ট কোষটিই নতুন করে ওই ভাইরাসের জিনগত উপাদানগুলি তৈরি করে এবং তা অন্যান্য কোষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয় ৷
আরও পড়ুন : Covid 19 : চোখের নিমেষে ছড়াচ্ছে ডেল্টা, টানা চার সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী বিশ্বের করোনা গ্রাফ
আমেরিকার পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Pennsylvania State University) সহকারী অধ্যাপক মার্কো আরচেত্তি (Marco Archetti) এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের গবেষণায় আমরা দেখেছি, রোগ সৃষ্টিকারী কোভিড ভাইরাস (SARS-CoV-2) প্রকৃত অর্থেই আমাদের সিন্থেটিক ভাইরাসকে পুনরায় সৃষ্টি করতে এবং ছড়িয়ে দিতে সক্ষম ৷ সেই কারণেই, এটি নিজেই নিজের পতন নিশ্চিত করে ৷ এই সিন্থেটিক ভাইরাসের একটি সংস্করণই আত্মঘাতী অ্য়ান্টিভাইরাল থেরাপির জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে ৷’’
গবেষকদের দাবি, নির্দিষ্ট কোনও ভাইরাসের বিকৃত সিন্থেটিক সংস্করণ তৈরি হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয় ৷ এটা খুব সাধারণ একটা ঘটনা ৷ এই ধরনের সিন্থেটিক ভাইরাস তার বিকৃতির জন্যই মূল ভাইরাসের বংশবিস্তারে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ৷ তবে সংশ্লিষ্ট কোষটি যদি রোগ সৃষ্টিকারী কোনও ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়, একমাত্র তবেই এই ধরনের বিকৃত সিন্থেটিক ভাইরাস তৈরি হতে পারে ৷
আরও পড়ুন : Delta Variant : ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্টের বিরুদ্ধে কার্যকর হতে পারে স্পুটনিক ভি
করোনার ক্ষেত্রে গবেষকদের পর্যবেক্ষণ হল, বিকৃত সিন্থেটিক ভাইরাস অনায়াসে মূল ভাইরাসের সংক্রমণ করার ক্ষমতা কেড়ে নিতে সক্ষম ৷ মার্কো আরচেত্তির কথায়, ‘‘এই ধরনের বিকৃত সিন্থেটিক ভাইরাস আদতে রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের যম ৷’’ তাঁর দাবি, বিকৃত সিন্থেটিক ভাইরাস মূল ভাইরাসের তুলনায় অনেক দ্রুত গতিতে অ্য়ান্টিভাইরাস তৈরি করতে সক্ষম ৷ ফলে এর প্রয়োগের মাত্র 24 ঘণ্টার মধ্যেই রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের পরিমাণ কমিয়ে অর্ধেক করে দেওয়া সম্ভব ৷