তেহরান, 8 জানুয়ারি : প্রত্যাঘাতের কথা জানিয়েছিল ইরান ৷ সেইমতোই হল আক্রমণ ৷ ইরাকে অ্যামেরিকার দুটি সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে মিজ়াইল বর্ষণ করল ইরান ৷ এদিকে ইরাক, ইরান ও পার্সিয়ান গল্ফে অ্যামেরিকার বিমান চলাচলে জারি করা হল বিধিনিষেধ ৷ মিজ়াইল বর্ষণের পরই ইরানকে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ বললেন, ''অল ইজ় ওয়েল ৷ কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ কাল আমি বিবৃতি দেব ৷'' বিশ্বের সেরা সামরিক বাহিনী রয়েছে, এমনও বলেন তিনি ৷ এর পরই পালটা ট্রাম্পকে জবাব দিলেন ইরানের জনপ্রিয় নেতা আয়েতোল্লা আলি খামেনেই ৷ তিনি বলেন, ''এই হামলা আসলে অ্যামেরিকাকে সপাটে একটি চড় মারার মতো ৷ ''
ইরান সংবাদমাধ্যমের তরফে জানানো হয়েছে, ইরানের মিজ়াইল হামলায় প্রায় 80 জন মারা গিয়েছে ৷ তবে, নিহতদের সংখ্যা ঠিক কতটা তা সঠিকভাবে জানা যায়নি বলেও জানিয়েছে তারা ।
ভারতের তরফে তার নাগরিকদের ইরাকে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়ানোর জন্য বলা হয়েছে ৷ নাগরিক বিমান পরিবহণ অধিদপ্তরের জেনেরাল ভারতের সকল বিমান সংস্থাগুলিকেও সজাগ থাকতে বলেছে ৷ পাশাপাশি, ইরান, ইরাক, ওমান উপসাগর ও পারস্য উপসাগরের উপর দিয়ে আকাশসীমাতে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে ৷
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার টুইট করেন, "ইরাকের ট্র্যাভেল অ্যাডভাইজ়ারি ইরাকের বিরাজমান পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে ভারতীয় নাগরিকদের পরবর্তী নির্দেশিকা জারি না হওয়া পর্যন্ত ইরাকে সমস্ত অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়াতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৷ ইরাকে বসবাসরত ভারতীয় নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ৷ তারা ইরাকের ভিতরে ভ্রমণ এড়াতে পারে ৷"
ইরানের সেনাবাহিনীর জেনেরাল কাসেম সোলেইমানি শুক্রবার ভোরে ড্রোন হামলায় নিহত হন । আমেরিকার তরফে এই হামলা চালানো হয়েছিল, নির্দেশ দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প । সেই ঘটনার পরেই ইরান জানিয়েছিল সোলেইমানির মৃত্যুর উপযুক্ত প্রতিশোধ নেওয়া হবে । এরপর বালাদে মার্কিন ঘাঁটি ও অ্যামেরিকার দূতাবাসের পাশে রকেট হামলা হয় । তারপরই মিজ়াইল বর্ষণ হল অ্যামেরিকার সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে ৷
গত 29 ডিসেম্বর অ্যামেরিকান বিমান হানায় ইরানের মদতপুষ্ট এক বিদ্রোহী সংগঠনের প্রায় 12 জনকে হত্যা করা হয় ৷ এরপরেই হাশ্দ আল-শাবি নামের এক দলের সমর্থকরা নিরাপত্তা বলয়ের ঘেরাটোপে থাকা অ্যামেরিকান দূতাবাস চত্বরে ঢুকে পড়ে ৷ ইরাক থেকে অ্যামেরিকান সেনা তুলে নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ৷ আগুন লাগানো হয় দূতাবাসে ৷ স্লোগান ওঠে 'অ্যামেরিকার মৃত্যু হোক' ৷ অ্যামেরিকার অভিযোগ, ওই সমস্ত ঘটনার পিছনে ইরানের সেনার অন্যতম কমান্ডার কাশেম সোলেইমানির হাত ছিল । এরপরেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প টুইট করে পুরো ঘটনায় ক্ষোভ উগড়ে দেন ইরানের উপর ৷ বিক্ষোভকারীদের ও ইরানের প্রশাসনকে দায়ী করেন গোটা ঘটনার জন্য ৷ পাশাপাশি দূতাবাসকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ ইরাকের প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ট্রাম্প ৷
অ্যামেরিকান প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক এসপার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, 82 নম্বর এয়ারবর্ন ডিভিশনের ব়্যাপিড রেসপন্স ইউনিটের প্রায় 750 টি দলকে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বাগদাদে মোতায়েন করা হবে ৷তারপর শুক্রবার ভোরে অ্যামেরিকার ড্রোন হামলায় নিহত হন কাসেম সোলেইমানি সহ মোট আটজন । সোলেইমানির মৃত্যুর পর ইরানের তরফে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছিল এই মৃত্যুর উপযুক্ত বদলা নেবে তারা। ৷