ETV Bharat / international

দক্ষিণ এশিয়া ও বিশ্ব রাজনীতিতে 9/11 হামলার প্রভাব

লাদেন পাকিস্তানেই লুকিয়ে আছে জানতে পেরে সেখানে সামরিক অভিযান চালায় অ্যামেরিকা । সেখান থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব শুরু হয় । সাম্প্রতিক কালে কাশ্মীর ইশুতেও সেই দূরত্ব দেখেছে বিশ্ব । এক সময়ের বন্ধু অ্যামেরিকাকে কাশ্মীর ইশুতে পাশে পায়নি পাকিস্তান ।

দক্ষিণ এশিয়া ও বিশ্ব রাজনীতিতে 9/11 হামলার প্রভাব দক্ষিণ এশিয়া ও বিশ্ব রাজনীতিতে 9/11 হামলার প্রভাব
author img

By

Published : Sep 11, 2019, 4:00 AM IST

ম্যানহাটন, 11 সেপ্টেম্বর : সেদিনটা আর দশটা দিনের মতোই ছিল আমেরিকার নিউ ইয়র্কের ম্যানহ্যাটন সিটি । হঠাৎ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের আকাশ ছোঁয়া কাচের জানালা দিয়ে দেখা যায় বিশালকায় একটি প্লেন ধেয়ে আসছে । সেটি আছড়ে পড়ে টাওয়ারে । কিছুক্ষণ পর আরও একটি বিমান হামলা হয় । প্লেনগুলির আঘাতে টুইন টাওয়ার মাটিতে মিশে যায় । টুইন টাওয়ার ছাড়াও পেন্টাগনেও হামলা হয় সেসময় । জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়দার এই আক্রমণ পুরো বিশ্ব নাড়িয়ে দেয় । বিশ্ব রাজনীতিতে এর তুমুল প্রভাব পড়ে । অভিবাসন বন্ধ, অভিবাসীদের ওপর অত্যাচার, আফগানিস্তানে তালিবান অধ্যুষিত এলাকায় আল কায়দাকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা সহ প্রায় সব দেশেই এই হামলার প্রভাব পড়ে সেসময় ।

হামলার 9 দিন পরেই অ্যামেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের ডাক দেন । বিশ্ব রাজনীতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছিল অ্যামেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলা । ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের হামলা ছিল অ্যামেরিকার বুকে আঘাত করার মতোই । হামলা চালানোর জন্য দায়ি করা হয় আল-কায়দাকে । এরপর শুরু হয় অ্যামেরিকার সন্ত্রাস দমনের যুদ্ধ । প্রধান টার্গেট ছিল আল-কায়দা

9/11 হামলার চক্রান্তকারী আল কায়দার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করা ও বিচারের আওতায় আনার লক্ষ্যে আফগানিস্তানে সেনা নামায় অ্যামেরিকা । আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে জীবিত অথবা মৃত গ্রেপ্তার করতে চালানো হয় একের পর এক অভিযান । সেই যুদ্ধে অ্যামেরিকার সহযোগিতা করে ব্রিটেন, ফ্রান্স সহ একাধিক দেশ । শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে লুকিয়ে থাকা লাদেনকে খতম করে চূড়ান্ত জবাব দেয় অ্যামেরিকা ।

তারপর 2003 সালের 21 মার্চ ইরাকে সেনা পাঠান প্রেসিডেন্ট বুশ । তিনি দাবি করেন, CIA ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র খুঁজে পেয়েছে । ইরাকের নেতা সাদ্দাম হোসেন আল-কায়দাকে সাহায্য করছিলেন । সেখানেও যুদ্ধে অ্যামেরিকা জেতে । সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসিতে চড়ানো হয় । তবে এরপরও সেই অঞ্চলে শান্তি ফেরেনি । সাদ্দাম পরবর্তী ইরাকে জন্ম হয় জঙ্গি সংগঠন ISIS-এর ।

2001 সালে আফগানিস্তানে অ্যামেরিকার সামরিক অভিযান এবং ক্ষমতা থেকে তালিবানদের অপসারণের পর আল-কায়দার কেন্দ্রীয় কমান্ড ও প্রধান নেতারা হয় মারা যায় অথবা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় । আল-কায়দার বিরুদ্ধে অব্যাহত সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে সংগঠনের দুর্বলতা প্রকাশিত হলেও সাংগঠনিকভাবে আল-কায়দা সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত হয়নি । বরং সংগঠনটি সারা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে আজও বিভক্ত হয়ে তাদের কাজ কারবার চালিয়ে যাচ্ছে । বিশেষজ্ঞদের মত, আল-কায়দা পুনর্গঠনে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে 2003 সালে ইরাকে অ্যামেরিকান সামরিক হস্তক্ষেপ এবং পরবর্তী নৈরাজ্যকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি ।

দক্ষিণ এশিয়ায় 9/11 হামলার প্রভাব :

9/11 হামলার পর রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সহযোগিতায় সারা বিশ্ব সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠে । সে সময় থেকেই ভারত চেয়েছে যে পাকিস্তানের মাটিতে বেড়ে ওঠা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে শেষ করা হোক । পাশাপাশি পাকিস্তানের সেনা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ভারত বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে নিজেদের দেশের মাটিতে আশ্রয় দেওয়া থেকে নিরস্ত করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহল সক্রিয় হোক ।

2001 সালে জইশ-ই-মহম্মদের সংসদে হামলার পর ভারত সীমান্তে সেনা মজুত করেছিল এবং মিজ়াইল ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র সাজিয়ে ফেলেছিল । পাকিস্তানও সেনা মজুত করেছিল । এদিকে অ্যামেরিকার বুশ প্রশাসন ভেবেছিল এর জেরে পাকিস্তানের নজর আফগানিস্তান থেকে সরে যেতে পারে । সেরকম হলে তালিবান এবং আল কায়দার বিরুদ্ধে লড়াই বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেও ভেবেছিল তারা । ফলে বুশ প্রশাসন দুই দেশের মধ্যেকার পরিস্থিতি সামলাতে উঠে পড়ে লাগে । বাজপেয়ি সরকারের সঙ্গে তড়িঘড়ি কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু করেন সচিব কলিন পাওয়েল ।

তখন ভারতের কূটনৈতিক চাপের ফলে অ্যামেরিকা ভারতের পক্ষ নেয় । অ্যামেরিকার চাপের মুখে পড়ে তৎকালীন পাকিস্তানি রাষ্ট্রপ্রধান মুশারফ 12 জানুয়ারি, 2002-এ ভারতের সংসদ হামলাকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ আখ্যা দেন এবং তার সঙ্গে 9/11 হামলার তুলনা করেন । একই সঙ্গে লশকর-ই-তৈবা ও জইশকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন ।

এদিকে পাকিস্তানকে দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের বন্ধু ভেবে সাহায্য করলেও লাদেনকে খোঁজার বিষয়ে পাকিস্তান বিশেষ সাহায্য করেনি অ্যামেরিকাকে । এর জেরে ধীরে ধীরে পাকিস্তানের উপর ভরসা হারাতে শুরু করে অ্যামেরিকা । শেষ প্রর্যন্ত লাদেন পাকিস্তানেই লুকিয়ে আছে জানতে পেরে সেখানে সামরিক অভিযান চালায় অ্যামেরিকা । সেখান থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব শুরু হয় । সাম্প্রতিক কালে কাশ্মীর ইশুতেও সেই দূরত্ব দেখেছে বিশ্ব । এক সময়ের বন্ধু অ্যামেরিকাকে কাশ্মীর ইশুতে পাশে পায়নি পাকিস্তান ।

ম্যানহাটন, 11 সেপ্টেম্বর : সেদিনটা আর দশটা দিনের মতোই ছিল আমেরিকার নিউ ইয়র্কের ম্যানহ্যাটন সিটি । হঠাৎ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের আকাশ ছোঁয়া কাচের জানালা দিয়ে দেখা যায় বিশালকায় একটি প্লেন ধেয়ে আসছে । সেটি আছড়ে পড়ে টাওয়ারে । কিছুক্ষণ পর আরও একটি বিমান হামলা হয় । প্লেনগুলির আঘাতে টুইন টাওয়ার মাটিতে মিশে যায় । টুইন টাওয়ার ছাড়াও পেন্টাগনেও হামলা হয় সেসময় । জঙ্গি গোষ্ঠী আল কায়দার এই আক্রমণ পুরো বিশ্ব নাড়িয়ে দেয় । বিশ্ব রাজনীতিতে এর তুমুল প্রভাব পড়ে । অভিবাসন বন্ধ, অভিবাসীদের ওপর অত্যাচার, আফগানিস্তানে তালিবান অধ্যুষিত এলাকায় আল কায়দাকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা সহ প্রায় সব দেশেই এই হামলার প্রভাব পড়ে সেসময় ।

হামলার 9 দিন পরেই অ্যামেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের ডাক দেন । বিশ্ব রাজনীতিতে সরাসরি প্রভাব ফেলেছিল অ্যামেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলা । ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের হামলা ছিল অ্যামেরিকার বুকে আঘাত করার মতোই । হামলা চালানোর জন্য দায়ি করা হয় আল-কায়দাকে । এরপর শুরু হয় অ্যামেরিকার সন্ত্রাস দমনের যুদ্ধ । প্রধান টার্গেট ছিল আল-কায়দা

9/11 হামলার চক্রান্তকারী আল কায়দার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে খুঁজে বের করা ও বিচারের আওতায় আনার লক্ষ্যে আফগানিস্তানে সেনা নামায় অ্যামেরিকা । আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে জীবিত অথবা মৃত গ্রেপ্তার করতে চালানো হয় একের পর এক অভিযান । সেই যুদ্ধে অ্যামেরিকার সহযোগিতা করে ব্রিটেন, ফ্রান্স সহ একাধিক দেশ । শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে লুকিয়ে থাকা লাদেনকে খতম করে চূড়ান্ত জবাব দেয় অ্যামেরিকা ।

তারপর 2003 সালের 21 মার্চ ইরাকে সেনা পাঠান প্রেসিডেন্ট বুশ । তিনি দাবি করেন, CIA ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র খুঁজে পেয়েছে । ইরাকের নেতা সাদ্দাম হোসেন আল-কায়দাকে সাহায্য করছিলেন । সেখানেও যুদ্ধে অ্যামেরিকা জেতে । সাদ্দাম হোসেনকে ফাঁসিতে চড়ানো হয় । তবে এরপরও সেই অঞ্চলে শান্তি ফেরেনি । সাদ্দাম পরবর্তী ইরাকে জন্ম হয় জঙ্গি সংগঠন ISIS-এর ।

2001 সালে আফগানিস্তানে অ্যামেরিকার সামরিক অভিযান এবং ক্ষমতা থেকে তালিবানদের অপসারণের পর আল-কায়দার কেন্দ্রীয় কমান্ড ও প্রধান নেতারা হয় মারা যায় অথবা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় । আল-কায়দার বিরুদ্ধে অব্যাহত সামরিক অভিযানের প্রেক্ষাপটে সংগঠনের দুর্বলতা প্রকাশিত হলেও সাংগঠনিকভাবে আল-কায়দা সম্পূর্ণভাবে পরাস্ত হয়নি । বরং সংগঠনটি সারা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে আজও বিভক্ত হয়ে তাদের কাজ কারবার চালিয়ে যাচ্ছে । বিশেষজ্ঞদের মত, আল-কায়দা পুনর্গঠনে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে 2003 সালে ইরাকে অ্যামেরিকান সামরিক হস্তক্ষেপ এবং পরবর্তী নৈরাজ্যকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি ।

দক্ষিণ এশিয়ায় 9/11 হামলার প্রভাব :

9/11 হামলার পর রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সহযোগিতায় সারা বিশ্ব সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়ে ওঠে । সে সময় থেকেই ভারত চেয়েছে যে পাকিস্তানের মাটিতে বেড়ে ওঠা জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে শেষ করা হোক । পাশাপাশি পাকিস্তানের সেনা ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ভারত বিরোধী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিকে নিজেদের দেশের মাটিতে আশ্রয় দেওয়া থেকে নিরস্ত করার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহল সক্রিয় হোক ।

2001 সালে জইশ-ই-মহম্মদের সংসদে হামলার পর ভারত সীমান্তে সেনা মজুত করেছিল এবং মিজ়াইল ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র সাজিয়ে ফেলেছিল । পাকিস্তানও সেনা মজুত করেছিল । এদিকে অ্যামেরিকার বুশ প্রশাসন ভেবেছিল এর জেরে পাকিস্তানের নজর আফগানিস্তান থেকে সরে যেতে পারে । সেরকম হলে তালিবান এবং আল কায়দার বিরুদ্ধে লড়াই বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলেও ভেবেছিল তারা । ফলে বুশ প্রশাসন দুই দেশের মধ্যেকার পরিস্থিতি সামলাতে উঠে পড়ে লাগে । বাজপেয়ি সরকারের সঙ্গে তড়িঘড়ি কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা শুরু করেন সচিব কলিন পাওয়েল ।

তখন ভারতের কূটনৈতিক চাপের ফলে অ্যামেরিকা ভারতের পক্ষ নেয় । অ্যামেরিকার চাপের মুখে পড়ে তৎকালীন পাকিস্তানি রাষ্ট্রপ্রধান মুশারফ 12 জানুয়ারি, 2002-এ ভারতের সংসদ হামলাকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ আখ্যা দেন এবং তার সঙ্গে 9/11 হামলার তুলনা করেন । একই সঙ্গে লশকর-ই-তৈবা ও জইশকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন ।

এদিকে পাকিস্তানকে দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের বন্ধু ভেবে সাহায্য করলেও লাদেনকে খোঁজার বিষয়ে পাকিস্তান বিশেষ সাহায্য করেনি অ্যামেরিকাকে । এর জেরে ধীরে ধীরে পাকিস্তানের উপর ভরসা হারাতে শুরু করে অ্যামেরিকা । শেষ প্রর্যন্ত লাদেন পাকিস্তানেই লুকিয়ে আছে জানতে পেরে সেখানে সামরিক অভিযান চালায় অ্যামেরিকা । সেখান থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব শুরু হয় । সাম্প্রতিক কালে কাশ্মীর ইশুতেও সেই দূরত্ব দেখেছে বিশ্ব । এক সময়ের বন্ধু অ্যামেরিকাকে কাশ্মীর ইশুতে পাশে পায়নি পাকিস্তান ।

Bhubaneswar (Odisha), Sep 09 (ANI): Odisha Sports and Youth Secretary Vishal Dev flagged off the fourth Biju Patnaik Himalayan Expedition from Kalinga Stadium in Odisha on September 09. The expedition will see 15 local students summiting Mt Stok Kangri in Ladakh from September 12th to 24th. While speaking to media, Vishal Dev said, "This is the fourth year, we started in 2016. The idea was to expose the young boys and girls of our state to adventure sports. We have done it successfully three times. 15 boys and girls have been selected. They will be going to Mt. Stok Kangri with a height of 20,187ft in the Leh Ladakh region. They will get to learn lessons in leadership and teamwork. They will be back on September 27." Stok Kangri peak is staggering 6,000 meter above sea level. The expedition is organised by Odisha's Sports and Youth department in association with Tata Steel Adventure Foundation.
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.