গান্ধিনগর, 29 জানুয়ারি : দেশ থেকে কি মানুষ পাচারের চক্র চলছে ? আমেরিকা-কানাডা সীমান্তে গুজরাট নিবাসী পরিবারের মৃত্যুতে এই প্রশ্ন সামনে এসেছে । গুজরাট পুলিশ এই চক্রে জড়িত এজেন্টদের সন্ধানে নেমেছে । 19 জানুয়ারি আমেরিকা-কানাডার সীমান্তবর্তী মানিটোবা নামক জায়গায় অত্যধিক ঠান্ডায় মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের । এরা সবাই গুজরাটের কলোলে ধিনগুঞ্ছা গ্রামের বাসিন্দা (Gujarati family death in Manitoba on the US-Canada border) ।
মৃতরা হলেন জগদীশ বলদেবভাই প্যাটেল (39), তাঁর স্ত্রী বৈশালীবেন জগদীশকুমার প্যাটেল (37) এবং তাঁদের দুই সন্তান, 11 বছরের কন্যা ভিহাঙ্গি, 3 বছরের ছেলে ধার্মিক । -35 ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় একটানা 10 কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা হেঁটেছিলেন সবাই । তাঁরা আমেরিকায় ঢোকবার চেষ্টা করছিলেন ।
এই ঘটনায় আমেরিকার কর্তৃপক্ষ সে দেশেরই এক নাগরিকের বিরুদ্ধে মানুষ পাচারের অভিযোগ তুলেছে । সূত্র অনুযায়ী, 18 জনের একটি দল যাচ্ছিল । সেখান থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এই পরিবারটি । মনে করা হচ্ছে, তাঁরা তুষারঝড়ের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল । এতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁদের । মৃতদের মধ্য়ে একজনের ব্যাগে শিশুর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যায় । পরিবারটি স্থানীয় কোনও এজেন্টের সাহায্য নিয়েছিল কি না, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে গুজরাটের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (Gujarat Criminal Investigation Department) ।
আরও পড়ুন : Human Trafficking : মানব পাচারচক্রের জাল থেকে উদ্ধার 4 নাবালিকা সহ 6, গ্রেফতার 1
সূত্র জানাচ্ছে, গুজরাটে এজেন্ট এবং দালালদের চক্র কাজ করছে । এরা লক্ষ লক্ষ মানুষকে শপিং মল অথবা রাস্তার ধারে সরাইখানায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দেয় । তাঁদের অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করে । এরা বিদেশে বৈধ অথবা অবৈধ উপায়ে কাজ করতে ইচ্ছুক মানুষদের ফাঁদে ফেলে । তাঁদের ভুয়ো পাসপোর্ট এবং ভিসার জোগান দেয় ।
গুজরাট সরকার মানিটোবায় হওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনার দায়িত্ব দিয়েছে সিআইডি ক্রাইমের উপর । একদিকে আমেরিকা ও কানাডার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর তদন্ত করছে । অন্যদিকে গুজরাটে সিআইডি ক্রাইম-এর ‘অ্যান্টি-হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিট’ (Anti-Human Trafficking Unit, AHTU) সে রাজ্যে সক্রিয় এই মানব পাচার চক্রের সন্ধান শুরু করেছে, জানিয়েছেন ডিজিপি আশিস ভাটিয়া ।
তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত গুজরাট পুলিশ এই তদন্তে পুরোপুরি অংশগ্রহণ করেনি । তবে আমরা অ্যান্টি-হিউম্যান ট্র্যাফিকিং ইউনিটকে এই বিষয়টি দেখতে বলেছি । আমরা জানি, গুজরাটে বেশির ভাগ মানুষ অন্য দেশে কাজ করতে গেলে সাধারণত বৈধ উপায়ে যায় । বেআইনি ভাবে মানুষকে বাইরে পাঠাচ্ছে, এমন কোনও এজেন্টকে ধরতে পারলে তার বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ করা হবে ।”
মৃত পরিবারটি অবৈধ ভাবে কানাডায় ঘুরছিল, নাকি বৈধ টুরিস্ট ভিসা নিয়ে, তাও স্পষ্ট জানা যায়নি বলে জানান ডিজিপি । এএইচটিইউ এই ব্যাপারে খোঁজখবর নেবে । রিপোর্ট অনুযায়ী, আমেরিকা-কানাডা সীমান্তে 7 জন গুজরাটবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।