রাষ্ট্র সংঘ, 30 এপ্রিল : COVID-19 প্রাদুর্ভাবের কারণে লকডাউন চলছে প্রায় বিশ্ব জুড়ে। আর এরফলে শ্রমদানের সময় ক্রমাগত নষ্ট হচ্ছে । এর ফলে আগামীদিনে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক শ্রমিক, অর্থাৎ প্রায় 1.6 বিলিয়ন কর্মী তাদের জীবিকা হারাতে চলেছে । আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা এই কথা জানিয়েছে । একই সঙ্গে খুচরো ও উৎপাদন ঝুঁকির মতো ''হার্ড-হিট'' খাতে যুক্ত 430 মিলিয়নেরও বেশি সংখ্যক উদ্যোগও চরম ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে বলে রাষ্ট্র সংঘ সূত্র জানিয়েছে ।
বুধবার প্রকাশিত হয়েছে আইএলও মনিটরের( ILO Monitor) তৃতীয় সংস্করণ: COVID-19 অ্যান্ড ওয়াল্ড অব ওয়ার্ক । কাজের জগৎ নিয়ে এই ফলাফলগুলি প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রায় 3.3 বিলিয়ন শ্রমিক রয়েছে। তার মধ্যে দুই বিলিয়নের 'ইনফর্মাল' অর্থনীতির অধীনে চাকরি করে। 'ইনফর্মাল' অর্থাৎ করের আওতাধীন নয় কিংবা সরকারের নিয়ন্ত্রিত নয় এমন অর্থনীতির ক্ষেত্রে শ্রমবাজারে তারাই সবচেয়ে দুর্বল শ্রমিক।
সংস্থাটি বলেছে যে COVID-19 মহামারী ফলে উদ্ভুত অর্থনৈতিক মন্দার ফলে 'ইনফর্মাল' অর্থনীতিতে কাজ করা 1.6 বিলিয়ন শ্রমিকের জীবিকা নির্বাহ করা কষ্টকর। এই শ্রমিকেরা হার্ড-হিট সেক্টরগুলিতে কাজ করে । ILO-র হিসাব অনুসারে, লকডাউনের ফলে বিশ্বব্যাপী এইসব সেক্টরগুলিতে প্রথম মাসে আয়ের পরিমাণ 60 শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
ILO জানিয়েছে, আফ্রিকা ও অ্যামেরিকার 80 শতাংশেরও বেশি, ইউরোপ ও মধ্য এশিয়ায় 70 শতাংশ এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে 21.6 শতাংশ সংস্থার আয় হ্রাস পেয়েছে । ILO ডিরেক্টর জেনারেল গাই রাইডার বলেন, মহামারী এবং চাকরির সংকট যখন মাথাচাড়া দিচ্ছে,, বিশ্বের এই শ্রমিকদের রক্ষার প্রয়োজনও তত বাড়ছে।
UN এজেন্সি অনুমান করেছে যে প্রাক-সংকটের তুলনায় বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে (কিউ 2) কাজের সময়ের 10.5 শতাংশ কম হবে,যা 305 মিলিয়ন পূর্ণকালীন কাজের সমতুল। পূর্ববর্তীতে এই সংখ্যাটি 6.7 শতাংশ বা 195 মিলিয়ন পূর্ণকালীন কর্মীর সমান ।
অ্যামেরিকাতে শ্রমদানের সময় 12.4 শতাংশ এবং ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ায় 11.8 শতাংশ কম হয়েছে। অন্যান্য সমস্ত অঞ্চল 9.5 শতাংশের উপরে শ্রম দানের সময় নষ্ট হয়েছে।
ILO মনে করে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য একটি কর্ম-সমৃদ্ধ পদ্ধতির অনুসরণ করা উচিত। জোরদার কর্মসংস্থান নীতি এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা বিস্তার করা প্রয়োজন । আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় শ্রমিকদের জন্য উচ্চমানর প্যাকেজ এবং ত্রাণ ব্যবস্থা সম্পর্কে গুরুত্ব দিতে হবে।