ETV Bharat / entertainment

জাকির হোসেন থেকে রাহুল দেশপান্ডে, তিন দিন ধরে কলকাতা মজে রইল স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালে - কলকাতা মজে রইল স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালে

Swar Samrat Festival: জাকির হোসেন থেকে রাহুল দেশপান্ডের সুরে-তালে মজে রইল কলকাতা ৷ স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালের 11তম বর্ষে পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণের ডাকে হাজির সারা দেশের গুণী শিল্পীরা ৷

Swar Samrat Festival Complete its 11th Year
তিন দিন ধরে কলকাতা মজে রইল স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালে
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 18, 2023, 6:28 PM IST

কলকাতা, 18 ডিসেম্বর: দেখতে দেখতে এগারো বছরে পা দিল 'স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যাল'। দেশের অন্যতম সেরা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের উৎসব বলে সারা দেশেই সমাদৃত এই সুরের উৎসব । দেশের তাবড় তাবড় সঙ্গীত ওস্তাদরা এই উৎসবে শামিল হন । এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও তিন দিন ধরে নজরুল মঞ্চে চলেছিল এই সঙ্গীতের আসর। দীর্ঘ এগারো বছর ধরে দেশের অন্যতম সরোদ বাদক পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার এবং তাঁর পরিবার অর্থাৎ মানসী মজুমদার ও পুত্র ইন্দ্রায়ুধ মজুমদার 'স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যাল'-এর আয়োজন করে আসছেন । সমগ্র ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে শ্রী রঞ্জনী ফাউন্ডেশন ।

পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ তাঁর গুরু স্বর সম্রাট ওস্তাদ আলি আকবর খানের নামেই এই উৎসব করে আসছেন । বলা যেতে পারে এই উৎসব এক শিষ্যের গুরুদক্ষিণা । উৎসব প্রসঙ্গে তেজেন্দ্র নারায়ণ বলেন, "এই ফেস্টিভ্যালের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ আমার পরিবার এবং দর্শকের ভালোবাসা । এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে আমি আমার গুরুর প্রতি শ্ৰদ্ধা জানাই । আমি চাই আমার গুরুর প্রতি আপনাদের শ্রদ্ধা যেন আরও বাড়ে । আরও বড় মঞ্চে, আরও বড় আকারে এই ফেস্টিভ্যালকে নিয়ে যেতে চাই আমরা । তাই আপনাদের কাছে আশীর্বাদ কাম্য ।"

Swar Samrat Festival Complete its 11th Year
ছিলেন বহু কিংবদন্তি শিল্পী

এ বছর স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালে সঙ্গীত পরিবেশন করেন অন্যতম জনপ্রিয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী রাহুল দেশপান্ডে । তিনি মাওড়া বন্দিস দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন। শেষ করেন ভজন দিয়ে । প্রায় দেড় ঘণ্টা কলকাতা বুঁদ হয়ে রইল রাহুলের গায়কীতে। পরের বছর আবার শিল্পীকে নিয়ে আসবেন এমনই প্রতিশ্রুতি দেন তেজেন্দ্র নারায়ণ । প্রথম দিনে তবলা বাদক পণ্ডিত সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের একক তবলার অনুষ্ঠানও ছিল অনবদ্য । তাঁর গুরু পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের তৈরি করা বহু সুর তবলার বোলে শোনান তিনি ।

Swar Samrat Festival Complete its 11th Year
স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালে মজল কলকাতা

তিনি জানান পণ্ডিত জ্ঞান প্রকাশ ঘোষের তৈরি করা রাগ-রাগিনীকেই পণ্ডিত রবি শঙ্কর 'কলকাতা ঘরানা' নামে অভিহিত করে গিয়েছেন । প্রথম দিনে বিদুষী এন রাজম এবং বিদুষী সঙ্গীতা শঙ্করের ভায়োলিন যুগলবন্দিও ছিল মনে রাখার মতো । তবলায় সঙ্গত করেন মায়েস্ত্র কুমার বোস । দ্বিতীয় দিনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ওস্তাদ শাহিদ পারভেজের সেতার বাদন । কলকাতার শ্রোতা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁর বাজনা শুনেছে । এই বছর জীবনকৃতি পুরস্কার দেওয়া হয় বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী সঙ্গীতাচার্য অমিয় রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে । ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আঙিনায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য । জীবনকৃতি পুরস্কার গ্রহণ করার পর তাঁর অনুষ্ঠান ছিল দ্বিতীয় দিনের সেরা প্রাপ্তি । তিনি বলেন, "আমার জন্য যে এত কিছু আয়োজন করা হয়েছে, তাতেই আমি কৃতজ্ঞ।" এই বয়সেও তাঁর গায়কীতে মজে রইলেন শ্রোতারা ৷

সরোদ বাদক পন্ডিত দেবজ্যোতি বোস এবং তবলায় মায়েস্ত্র পণ্ডিত স্বপন চৌধুরীর যুগলবন্দিও দ্বিতীয় দিনে দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে । সেই দিন পণ্ডিত কুমার বসের আত্মজীবনী 'তবলাওয়ালা'-র প্রচ্ছদ উন্মোচিত হয় । শেষদিনের মূল আকর্ষণ বলাই বাহুল্য স্বয়ং জাকির হোসেন ৷ নজরুল মঞ্চ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ । স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালে এই নিয়ে দশ বছর ধরে বাজিয়ে চলেছেন জাকির হোসেন । এবারেও তিনি বাজালেন এবং জয় করে নিলেন কলকাতার হৃদয় । তিনি বলেন, "শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এমন সমঝদার দর্শক কলকাতার মতো আর কোথাও নেই।" তিনি রাগ যোগ দিয়ে শুরু করেন। আর শেষ করেন মহাদেবের ডমরু এবং শঙ্খের ধ্বণি শুনিয়ে । গোটা নজরুল মঞ্চ তখন কানায় কানায় ভরা । শীতের আমেজ কাটিয়ে তখন কেবল জাকির-উষ্ণতা।

আরও পড়ুন:

  1. এবার আইপিএস এর ভূমিকায় গৌরব মণ্ডল, সুঠাম চেহারা ও নতুন লুক দেখে আপ্লুত ভক্তরা
  2. প্রভাসের খুনসুটি! 'সালার' মুক্তির আগে রাজামৌলির প্রশ্নবাণের মুখোমুখি 'বাহুবলী'
  3. বড়দিনে জোর টক্কর, দেশে অগ্রিম বুকিংয়ে শাহরুখের ডাঙ্কির থেকে সামান্য এগিয়ে প্রভাসের সালার

কলকাতা, 18 ডিসেম্বর: দেখতে দেখতে এগারো বছরে পা দিল 'স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যাল'। দেশের অন্যতম সেরা শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের উৎসব বলে সারা দেশেই সমাদৃত এই সুরের উৎসব । দেশের তাবড় তাবড় সঙ্গীত ওস্তাদরা এই উৎসবে শামিল হন । এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও তিন দিন ধরে নজরুল মঞ্চে চলেছিল এই সঙ্গীতের আসর। দীর্ঘ এগারো বছর ধরে দেশের অন্যতম সরোদ বাদক পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ মজুমদার এবং তাঁর পরিবার অর্থাৎ মানসী মজুমদার ও পুত্র ইন্দ্রায়ুধ মজুমদার 'স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যাল'-এর আয়োজন করে আসছেন । সমগ্র ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে শ্রী রঞ্জনী ফাউন্ডেশন ।

পণ্ডিত তেজেন্দ্র নারায়ণ তাঁর গুরু স্বর সম্রাট ওস্তাদ আলি আকবর খানের নামেই এই উৎসব করে আসছেন । বলা যেতে পারে এই উৎসব এক শিষ্যের গুরুদক্ষিণা । উৎসব প্রসঙ্গে তেজেন্দ্র নারায়ণ বলেন, "এই ফেস্টিভ্যালের সবচেয়ে বড় স্তম্ভ আমার পরিবার এবং দর্শকের ভালোবাসা । এই উৎসবের মধ্যে দিয়ে আমি আমার গুরুর প্রতি শ্ৰদ্ধা জানাই । আমি চাই আমার গুরুর প্রতি আপনাদের শ্রদ্ধা যেন আরও বাড়ে । আরও বড় মঞ্চে, আরও বড় আকারে এই ফেস্টিভ্যালকে নিয়ে যেতে চাই আমরা । তাই আপনাদের কাছে আশীর্বাদ কাম্য ।"

Swar Samrat Festival Complete its 11th Year
ছিলেন বহু কিংবদন্তি শিল্পী

এ বছর স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালে সঙ্গীত পরিবেশন করেন অন্যতম জনপ্রিয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী রাহুল দেশপান্ডে । তিনি মাওড়া বন্দিস দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করেন। শেষ করেন ভজন দিয়ে । প্রায় দেড় ঘণ্টা কলকাতা বুঁদ হয়ে রইল রাহুলের গায়কীতে। পরের বছর আবার শিল্পীকে নিয়ে আসবেন এমনই প্রতিশ্রুতি দেন তেজেন্দ্র নারায়ণ । প্রথম দিনে তবলা বাদক পণ্ডিত সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের একক তবলার অনুষ্ঠানও ছিল অনবদ্য । তাঁর গুরু পণ্ডিত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের তৈরি করা বহু সুর তবলার বোলে শোনান তিনি ।

Swar Samrat Festival Complete its 11th Year
স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালে মজল কলকাতা

তিনি জানান পণ্ডিত জ্ঞান প্রকাশ ঘোষের তৈরি করা রাগ-রাগিনীকেই পণ্ডিত রবি শঙ্কর 'কলকাতা ঘরানা' নামে অভিহিত করে গিয়েছেন । প্রথম দিনে বিদুষী এন রাজম এবং বিদুষী সঙ্গীতা শঙ্করের ভায়োলিন যুগলবন্দিও ছিল মনে রাখার মতো । তবলায় সঙ্গত করেন মায়েস্ত্র কুমার বোস । দ্বিতীয় দিনের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ওস্তাদ শাহিদ পারভেজের সেতার বাদন । কলকাতার শ্রোতা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে তাঁর বাজনা শুনেছে । এই বছর জীবনকৃতি পুরস্কার দেওয়া হয় বর্ষীয়ান সঙ্গীতশিল্পী সঙ্গীতাচার্য অমিয় রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়কে । ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আঙিনায় তাঁর অবদান অনস্বীকার্য । জীবনকৃতি পুরস্কার গ্রহণ করার পর তাঁর অনুষ্ঠান ছিল দ্বিতীয় দিনের সেরা প্রাপ্তি । তিনি বলেন, "আমার জন্য যে এত কিছু আয়োজন করা হয়েছে, তাতেই আমি কৃতজ্ঞ।" এই বয়সেও তাঁর গায়কীতে মজে রইলেন শ্রোতারা ৷

সরোদ বাদক পন্ডিত দেবজ্যোতি বোস এবং তবলায় মায়েস্ত্র পণ্ডিত স্বপন চৌধুরীর যুগলবন্দিও দ্বিতীয় দিনে দর্শকদের আনন্দ দিয়েছে । সেই দিন পণ্ডিত কুমার বসের আত্মজীবনী 'তবলাওয়ালা'-র প্রচ্ছদ উন্মোচিত হয় । শেষদিনের মূল আকর্ষণ বলাই বাহুল্য স্বয়ং জাকির হোসেন ৷ নজরুল মঞ্চ ছিল কানায় কানায় পূর্ণ । স্বর সম্রাট ফেস্টিভ্যালে এই নিয়ে দশ বছর ধরে বাজিয়ে চলেছেন জাকির হোসেন । এবারেও তিনি বাজালেন এবং জয় করে নিলেন কলকাতার হৃদয় । তিনি বলেন, "শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের এমন সমঝদার দর্শক কলকাতার মতো আর কোথাও নেই।" তিনি রাগ যোগ দিয়ে শুরু করেন। আর শেষ করেন মহাদেবের ডমরু এবং শঙ্খের ধ্বণি শুনিয়ে । গোটা নজরুল মঞ্চ তখন কানায় কানায় ভরা । শীতের আমেজ কাটিয়ে তখন কেবল জাকির-উষ্ণতা।

আরও পড়ুন:

  1. এবার আইপিএস এর ভূমিকায় গৌরব মণ্ডল, সুঠাম চেহারা ও নতুন লুক দেখে আপ্লুত ভক্তরা
  2. প্রভাসের খুনসুটি! 'সালার' মুক্তির আগে রাজামৌলির প্রশ্নবাণের মুখোমুখি 'বাহুবলী'
  3. বড়দিনে জোর টক্কর, দেশে অগ্রিম বুকিংয়ে শাহরুখের ডাঙ্কির থেকে সামান্য এগিয়ে প্রভাসের সালার
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.