কলকাতা, 20 জুন: একটা সময় ছিল যখন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, তাপস পাল, চুমকী চৌধুরী, অঞ্জন বসু বা শতাব্দী রায়, দেবশ্রী রায়ের মতো চলচ্চিত্র অভিনেতা-অভিনেত্রীরা পর্দা কাঁপানোর পাশাপাশি দাপিয়ে বেড়িয়েছেন মঞ্চ ৷ গ্রাম-বাংলার বিভিন্ন প্রান্তরে জমে উঠত যাত্রা উৎসব ৷ কিন্তু কালের কলরবে সেই সব এখন অতীত ৷ এখন আর ছোট পর্দা ও বড় পর্দার তারকাদের দেখা যায় না যাত্রার স্টেজে ৷ অনীহা নাকি, আর্থিক সুবিধা না-পাওয়া, কারণ জানল ইটিভি ভারত ৷
নিয়ম করে রথযাত্রায় বুকিং শুরু হয়ে গেল যাত্রাপালার। একইসঙ্গে শুভ সূচনা হল চলতি বছরের যাত্রা মরশুমের। বাংলার বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম এই যাত্রা শিল্প। পাশাপাশি রাজ্যের অসংখ্য মানুষের রুটি-রুজি এই যাত্রা শিল্পকে ঘিরে ৷ ইন্দ্রনীল সেনের কথায় এখন 648 জন শিল্পী 25 হাজার টাকা করে অনুদান পান। রাজ্যের যাত্রা শিল্পকে আরও উন্নত করতে মরিয়া রাজ্য সরকার, সর্বোপরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এমন একটা সময় ছিল যখন বড় পর্দা এবং ছোটপর্দায় অভিনয়ের পাশাপাশি অভিনেতারা নিয়মিত যাত্রা করতেন। নামের তালিকা নেহাত ছোট নয়। মৌমিতা চক্রবর্তী থেকে সুদীপ্তা চক্রবর্তী, রূপসা চট্টোপাধ্যায়, পাপিয়া অধিকারী, লোকেশ ঘোষ, সমতা দাস, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়- আছে এরকম বহু নাম। কিন্তু এঁদের মধ্যে অনেকেই আজ আর আসেন না যাত্রাপাড়ায়। অভিনয় করেন না গ্রামেগঞ্জে। এ বছরও সেই একই ছবি ৷ কুলোর বাতাস বলতে অভিনেতা অনুভব দত্ত। কিন্তু কেন এই অবস্থা? কেন যাত্রা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন তাঁরা?
এই প্রসঙ্গে পশিমবঙ্গ যাত্রা সম্মলেনের যুগ্ম সম্পাদক তাপস কুমার দাস বলেন, "একটা সময় ছিল যখন সিনেমার আর্টিস্ট, থিয়েটারের আর্টিস্টদের যাত্রায় দেখার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়ে গিয়েছিল। এখন সেই আগ্রহে ভাটা পড়েছে। আবার এটাও ঠিক, সিনেমা এবং থিয়েটার শিল্পীদের চাহিদা অনুযায়ী কমিটি টাকা দিতে পারছে না। তাই তাঁরাও আর আসছেন না কাজ করতে।"
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রসদনে বসবে যাত্রার আসর, ইন্দ্রনীলের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন অরূপের
যাত্রাশিল্পী অনুভব দত্ত বলেন, "যারা ভালো যাত্রা করতেন একটা সময়ে তারা হয়ত এখন ক্লান্ত। তাই আর করেন না। কিন্তু এরপর বেশিরভাগই যাত্রা করতে এসে ভেবেছিলেন, অনেক টাকা খুব সহজে রোজগার করা যাবে। লোকে এখন প্রোডাকশন দেখে। স্টার দেখে না। একবার একজন বড় স্টার চ্যারিটি শো করতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর অভিনয় দেখে দর্শক উঠে গিয়েছেন। টানা তিন ঘণ্টা দর্শককে বসিয়ে রাখা সহজ কথা নয়। এটা যাত্রা শিল্পীরাই পারে। তাই আজকাল যাত্রায় শুধুমাত্র যাত্রা শিল্পীর অভিনয়ই দর্শক পছন্দ করছে।"