কলকাতা, 13 নভেম্বর: একেনবাবু, গোয়েন্দা প্রিয় বাঙালির বিশ্বে তিনি এখন নতুন আইকন । হঠাৎ করে তাঁকে দেখলে গোবেচারা, ভোলাভালা বাঙালি বলে মনে হতেই পারে । ঠিক এটাই তাঁর ইউএসপি । কারণ এই ছদ্মবেশের আড়ালেই রয়েছে তীক্ষ্ণ ক্ষুরধার মগজাস্ত্র । এমনিতে যিনি একেবারে অগোছালো, ভুলভাল প্রবাদ বলে সকলের বিরক্তি কারণ হন, খাবার দেখলেই শুরু করেন বেপরোয়া হ্যাংলামি তিনিই আবার তুড়ি মেরে সমাধান করেন একের পর এক কেস । তার মধ্যে দিয়েই হয়তো কোথাও জয় পেয়ে বাঙালির জটায়ু । এহেন একেনবাবু বাপি আর প্রমথকে নিয়ে এবার চলেছেন টুংকুলুং-এর জঙ্গলে । রহস্য রোমাঞ্চ কতটা জমল? এবার ইটিভি ভারতকে জানালেন পর্দার একেনবাবু অনির্বাণ চক্রবর্তী ।
প্রশ্ন: এবারে একেনবাবুর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে জঙ্গল আর অ্যাডভেঞ্চার । সিরিজ নিয়ে ভাবনাটা যদি একটু বলেন?
উত্তর: একেনবাবু তো প্রতিবারই নতুন নতুন জায়গায় যায় সেই হিসাবে কিন্তু জঙ্গল আমরা এর আগে কখনও যাইনি । এখানে খানিকটা স্বাধীনতা নির্মাতারা নিয়েছেন । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আসল গল্পগুলির পটভূমি আমেরিকা বা বিদেশের মাটি । সেখানে আমরা একটু স্বাধীনতা নিয়ে থাকি । সেই সূত্র ধরেই জঙ্গলটা ঠিক করা হয় । এটা একটা কাল্পনিক জায়গা টুংকুলুং । নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তে একটি গ্রাম । আমার কাছে বিষয়টা অনেক পরে আসে। তবে যখন জানলাম বেশ ভালো লাগল । কারণ নতুন জায়গা মানেই নতুন অ্যাডভেঞ্চার শুধু নয় সেখানকার সংস্কৃতি, খাবারদাবারও বিষয়টার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে । ঢুকে পড়ে কিছু ইতিহাসও । আমি একেনবাবু হিসাবে এমন গল্পে অভিনয় কখনও করিনি। পাহাড়ে আমাদের কাজ হয়ছে । দার্জিলিংয়ে একেনবাবু রহস্য সমাধান করেছে তবে এই গল্পটা একেবারে আলাদা ।
প্রশ্ন: সুজন(দাশগুপ্ত)বাবুকে কতটা মিস করছেন । উনি তো শুটিংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে ভালোবাসতেন ।
উত্তর: বেশ কয়েকবার উনি শুটিংয়ে এসেছিলেন । সবসময়ই ওনাকে আমরা মিস তো করবই । উনি শুটিং না থাকলেও প্রায়ই কথা হত । শুটিং কোন পর্যায়ে পৌঁছল বা গল্প কীভাবে এগোচ্ছে তা নিয়ে উনি খোঁজখবর রাখতেন । ওনার সঙ্গে নানান সময়ে যে আড্ডা হত তা তো মিস করবই । তবে ওনার লেখা প্রচুর একেনবাবুর গল্প রয়েছে । তাই একেনবাবুর কাহিনি এগিয়ে চলবে ।
প্রশ্ন: বেশ অনেকবার আপনি একেনবাবুর চরিত্রে অভিনয় করে ফেললেন । একেনবাবুকে একটু অন্যরকমভাবে মানুষের সামনে আনার কোনও পরিকল্পনা কি রয়েছে?
উত্তর: একেনকে যদি খুব নতুন করে তুলে ধরি তাহলে দর্শকেরও পছন্দ হবে না । একেনের যে চারিত্রিক বৈশিষ্ট সেগুলো দেখেই মানুষ তাঁকে ভালোবেসেছেন । সেক্ষেত্রে একেন রি-ইন্টারপ্রেট করতে গিয়ে যদি একটা অন্য মানুষের মতো গড়ে তোলা হয় তাহলে দর্শকের সেটা পছন্দ হবে কি না তা নিয়ে আমি নিশ্চিত নই । এই চরিত্রটা বারবার করার ফলে একটু সহজ হয়ে গিয়েছে আমার কাছে । তবে যাতে একঘেঁয়ে না লাগে সেজন্য আমি বিভিন্ন নতুন পরিস্থিতিতে এই চরিত্রটি কীভাবে মোকাবিলা করবে সেটা আবিষ্কার করার চেষ্টা করি ।
প্রশ্ন: এই নতুন গল্পটা কতখানি চিত্তাকর্ষক?
উত্তর: আমার ভীষণ ভালো লেগেছে । একেনবাবুর গল্পগুলো ধীরে ধীরে একটু জটিল হচ্ছে । আমরা চেষ্টা করলেও গল্পগুলো খুব বেশি জটিল করতে পারি না । কারণ একেনবাবু বাচ্চাদেরও খুব প্রিয় । তাই শেষের দিকে যখন পুরো রহস্যটা ভেদ করা হয় সেটা বাচ্চারা যাতে বুঝতে পারে সেদিকে নজর রাখতেই হয় । আবার সবার কাছেই যাতে বিষয়টা উপভোগ্য হয় সেটাও খেয়াল রাখতে হয় । এবারের গল্পটা নতুন ধরনের । এ ধরনের রহস্য একেনবাবুও আগে সমাধান করেনি ।
প্রশ্ন: গল্প নিয়ে একটু আভাস কি দেওয়া যায় আমাদের পাঠকদের জন্য?
উত্তর: গোয়েন্দা গল্প নিয়ে কিছু বলা তো বারণ । তবে শুধু এটুকু বলতে পারি বেশিরভাগ গোয়েন্দারাই তো বাড়ি থেকে রহস্য সমাধান করবেন বলে বের হয় না বরং তারা পরিস্থিতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে । এখানেও ঠিক তাই একেনবাবু তার দুই সঙ্গী বাপি এবং প্রমথবাবুকে টুংকুলুং-এ যায় । কথা ছিল সেখানে তাঁকে সম্বর্ধনা দেওয়া হবে । এরপর কীভাবে সে রহস্যের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে তা জানতে দেখতে হবে এই সিরিজ ।
আরও পড়ুন: