কলকাতা, 20 মে: স্থগিতাদেশের পরেও কেটে গিয়েছে তিনটে দিন ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাংলার কোনও হল পেল না 'দ্য কেরালা স্টোরি' ৷ এই বিষয়ে হতাশার সুর ফুটে উঠেছে ডিস্ট্রিবিউটর শতদীপ সাহার গলায় ৷ শতদীপের সঙ্গে ইটিভি ভারতের তরফে যোগাযোগ করা হলে তিনি অত্যন্ত হতাশার সুরে জানান, "এখনও অবধি কেউ এগিয়ে আসেননি ছবিটা দেখানোর জন্য। বাংলায় এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক একটা ঘটনা। বাংলার জন্যও দুর্ভাগ্যজনক।"
প্রসঙ্গত, পরিচালক সুদীপ্ত সেন কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলনে এসে বলেন, "ছবিটা না চালানোর জন্য ডিস্ট্রিবিউটরদের কাছে বারবার ফোন আসছে ছবিটা না দেখাতে দেওয়ার জন্য।" প্রশ্ন উঠছে তা হলে কি এই কারণেই পিছিয়ে যাচ্ছেন সিনেমা হলের মালিকেরা? জানা নেই তার উত্তর। "এই ছবি সেন্সর বোর্ড থেকে পাশ হয়েছে এবং একটি সিনও বাদ পড়েনি।"- সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন স্বয়ং পরিচালক। যে ছবি মানুষকে ভুল বার্তা দেয় কিংবা যে দৃশ্য দেখার উপযোগী নয় তার উপর সেন্সরের কাঁচি চলে। এখানে তেমন কিছু ঘটেনি বলেই অন্যান্য রাজ্যে বহাল তবিয়তে চলছে এই ছবি বলে জাবি করেছিলেন পরিচালক।
শুক্রবারই প্রযোজক বিপুল শাহ তাঁর কথাবার্তায় জানিয়ে দেন ছবিটা বাংলায় দেখাতে না দিলে আদালতের পথে হাঁটবেন তাঁরা। আর শনিবারেও পরিস্থিতির বদল না ঘটায় পরিচালক সুদীপ্ত সেনের কাছে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় ৷ তাঁরা কি আদৌও আদালতের দ্বারস্থ হবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে পরিচালক স্বল্প বাক্যে উত্তর দিয়ে বলেন, "আর কী করতে পারি ?..."
এই প্রসঙ্গে ইটিভি ভারত যোগাযোগ করেছিল অভিনেতা তথা এক সময়ের সেন্সর বোর্ডের সদস্য ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, "আমি কোনও ছবি ব্যান করার পক্ষে নই। বিশেষ করে যে ছবি সম্পর্কে আমরা খুব কম জানি বা আমরা দেখিনি ৷ সেই ছবি দুম করে ব্যান করে দেওয়ার পক্ষে আমি নই। কিছু কিছু ছবি আসে যেগুলো দেখালে মানুষের কাছে ভুল মেসেজ যায়। আমি নিজে তিন-চার বছর সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলাম। যে ছবি মানুষের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দেয় সেই ছবি সেন্সর নিজেরাই সার্টিফিকেট দেয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে তো সেটা হয়নি। এরা তো সেন্সর সার্টিফিকেট পেয়েছে। আর সেটা তাই দেখানো হচ্ছে অন্যান্য রাজ্যে।"
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী চাইলে তাঁর পাশে বসে 'দ্য কেরালা স্টোরি' দেখতে রাজি পরিচালক সুদীপ্ত
অভিনেতা আরও বলেন, " আমি নিজেও দেখার সুযোগ পাইনি ছবিটা। তবে, ছবিটা না দেখার মতো হলে তো অল ইন্ডিয়া লেবেলে ছবিটা দেখানো হত না। আমি যতদূর শুনেছি হিন্দু এবং খ্রিস্টান মেয়েদের মুসলিম বানিয়ে আইএসআই-তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এটাই হচ্ছে ছবির মূল বিষয়বস্তু। আমার মনে হয় এই ঘটনাও প্রত্যেকটা মানুষের জানা উচিত। কনভার্ট হওয়াটা বড় কথা নয়। যে কোনও মানুষ যে কোনও সময়ে যে কোনও ধর্ম নিতে পারেন। কিন্তু তারপর কী হচ্ছে, কাউকে ধর্মান্তরিত করানোর পিছনে কী উদ্দেশ্য কাজ করছে সেটা জানা দরকার। এই দিকটাই তুলে ধরা হয়েছে ছবিটাতে। তাই আমার মনে হয় ছবিটা দেখা উচিত সকলের।"