কলকাতা, 4 জুলাই: দীর্ঘ 13 দিনের লড়াইয়ের পর আজ সব শান্ত । (Tarun Majumdar passes away)৷ সকাল 11.20তে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন কিংবদন্তি পরিচালক তরুণ মজুমদার । বাংলা সিনেমার ইতিহাসে একটি যুগের অবসান ঘটল (Tarun Majumdar dies)।
1931 সালে পূর্ববঙ্গের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম ৷ পড়াশোনা শেষ করে সিনেমার বিজ্ঞাপনের কাজ করলেও নজর ছিল পরিচালনায় ৷ ততদিনে বাঙালি দেখে ফেলেছে পথের পাঁচালী ৷ দর্শকদের মজিয়ে রেখেছেন উত্তর-সুচিত্রা ৷ এরই মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়ালেন নতুন পরিচালক ৷ 1959 সালে তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় প্রথম মুক্তি পেল উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত 'চাওয়া পাওয়া' ৷ তবে তাঁকে প্রথম জাতীয় পুরস্কার এনে দেয় 'কাঁচের স্বর্গ'৷ 1962 সালে ৷
বাংলা ছবিতে তরুণ মজুমদার রবীন্দ্রসঙ্গীতকে যেভাবে ব্যবহার করেছেন, তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না ৷ দর্শককে একাধিক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন । পলাতক, নিমন্ত্রণ, সংসার সীমান্তে, গণদেবতা, বালিকা বধূ, কুহেলী, শ্রীমান পৃথ্বীরাজ, ফুলেশ্বরী, দাদার কীর্তি, ভালোবাসা ভালোবাসা, পরশমণি, আলো এবং সাম্প্রতিককালে ভালোবাসার বাড়ি ৷ 'ভালোবাসার বাড়ি'তে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন বাংলা টেলিভিশনের আজকের জনপ্রিয় অভিনেতা প্রতীক সেন । বর্ষীয়ান পরিচালককে ঘিরে আবেগে ভেসে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বলেছিলেন, "ওঁর মতো এনার্জেটিক মানুষ বিরল । এই বয়সেও এতটুকু ক্লান্ত হতে দেখিনি তাঁকে । ইউনিটের সবাই ক্লান্ত হয়ে গেলেও তিনি ক্লান্ত হতেন না কখনও ।"
আরও পড়ুন: সিনে দুনিয়ায় ফের নক্ষত্রপতন, প্রয়াত তরুণ মজুমদার
পদ্মশ্রীর পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তরুণ মজুমদার । চারটি জাতীয় পুরস্কার তাঁর ঝুলিতে । এ ছাড়াও রয়েছে 7টি বিএফজেএ পুরস্কার, 5টি ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড ৷ তাঁকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্র বানানোর উদ্যোগ নিয়েছেন বাম যুবনেতা শতরূপ ঘোষ । কিংবদন্তির প্রয়াণে শোকাহত টলিউড ৷ শোকবার্তা দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
শেষ হল দীর্ঘ একটা অধ্যায় ৷ বাংলা সংস্কৃতি জগৎ হারাল আরও এক কিংবদন্তিকে ৷ তবে সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের কাছে তিনি বরাবর থাকবেন চিরতরুণ ৷ মানুষের 'ভালোবাসার বাড়ি'তে জ্বলজ্বল করবে 'দাদার (পড়ুন তরুণ মজুমদার) কীর্তি'...