ETV Bharat / entertainment

Soumitra Chatterjee: জীবনের প্রথম অডিশনেই ফেল করেছিলেন বাঙালির চিরকালের ফেলুদা

author img

By

Published : Nov 15, 2022, 2:16 PM IST

আজ থেকে প্রায় ঠিক দু'বছর আগে একটা ভীষণ দু:স্বপ্নের 15 নভেম্বর কাটিয়েছিল আপামর বাংলা ৷ এই দিনেই ইহ-জগতকে চিরদিনের মতো বিদায় জানিয়েছিলেন কিংবদন্তি নায়ক সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায় ৷ তাঁর প্রয়াণ দিবসে ফিরে দেখা এই কিংবদন্তিকে ৷

RIP Soumitra Chatterjee
জীবনের প্রথম অডিশনেই ফেল করেছিলেন বাঙালির চিরকালের ফেলুদাকে

কলকাতা, 15 নভেম্বর: আজ থেকে প্রায় ঠিক দু'বছর আগে ভীষণ দু:স্বপ্নের একটি 15 নভেম্বর কাটিয়েছিল আপামর বাংলা ৷ এই দিনেই ইহ-জগতকে চিরদিনের মতো বিদায় জানিয়েছিলেন কিংবদন্তি নায়ক সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায় (Soumitra Chatterjee )৷ হ্য়াঁ নায়ক, কারণ পার্শ্ব চরিত্র হয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়েও প্রধান চরিত্রের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তিনি হয়ে উঠেছেন তাঁর অভিনয় গুণে ৷ তা সে উদয়ন পণ্ডিতই হোক বা কর্মাশিয়াল ছবির ছকে বাধা খলনায়ক চরিত্রই হোক ৷ সৌমিত্র অনন্য তাঁর নিজস্ব প্রতিভার গুণে ৷ এই কিংবদন্তির জন্ম নদিয়ার কৃষ্ণনগরে ৷ সালটা ছিল 1935 ৷ তাঁর বাবা ছিলেন আইনজীবী ৷ সৌমিত্রবাবুর পড়াশোনা শুরু কৃষ্ণনগরের সেন্ট জন্স বিদ্যালয়ে ৷ এরপর হাওড়া জিলা স্কুল হয়ে কলকাতা সিটি কলেজ থেকে পাশ করেন তিনি (Remembering Soumitra Chatterjee )৷

তাঁর কর্মজীবন অবশ্য় শুরু হয় কিছুটা অন্যভাবেই ৷ আকাশবাণীর ঘোষক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি । অভিনয়ের খিদেটা অবশ্য় মনের মধ্য়ে ছিল আগে থেকেই ৷ কিন্তু কার্তিক বসুর 'নীলাচলে মহাপ্রভু' ছবিতে অডিশন দিয়েও সুযোগ পাননি ৷ কিন্তু তখন কি কেউ ভাবতেও পেরেছিল সেই সৌমিত্রই হবেন সত্য়জিৎ রায়ের কালজয়ী সব ছবির নায়ক ৷ কার্যত তাঁর হাত ধরেই উত্তমের পাশাপাশি বাঙালি পেল আরেক নায়ককে ৷ যিনি সংস্কৃতি প্রিয় বাঙালির অবিসংবাদিত আইকন হয়ে উঠলেন খুব সহজেই ৷ তাঁর কবিতা, সংগীত প্রেম থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি অঙ্গভঙ্গি নকল করতে শুরু করলেন তাঁর অনুরাগীরা ৷ সত্য়জিৎ রায়ের 'অপুর সংসার'-এর অপু হিসাবে ছবির জগতে পা রাখা সৌমিত্র বাঙালির মনন ও আবেগে গড়লেন স্থায়ী সাম্রাজ্য ৷

এরপর সত্য়জিৎ রায়ের হাত ধরেই কখনও তিনি ফেলুদা হয়েছেন, কখনও হয়েছেন উদয়ন পণ্ডিত ৷ কখনও যেমন জটিল রহস্য়ের জট ছাড়িয়ে চিৎকার করে উঠেছেন, "আছে, আছে । আমাদের টেলিপ্যাথির জোর আছে ৷" কখনও তেমনই তাঁর কণ্ঠে শোনা গিয়েছে প্রতিবাদের বাণী ৷ তখন তাঁর গলার স্লোগান হয়ে উঠেছে, "দড়ি ধরে মারো টান । রাজা হবে খান খান..."৷ তবে সত্য়জিৎই যে তাঁকে শুধু নানান ভাবে ব্যবহার করেছেন তা কিন্তু নয় ৷ তপন সিংহের 'ক্ষুধিত পাষাণ' (1960), 'ঝিন্দের বন্দি' (1961); অসিত সেনের সঙ্গে 'স্বরলিপি' (1961), অজয় করের সঙ্গে 'সাত পাকে বাঁধা' (1963) , 'পরিণীতা' (1969) এবং তরুণ মজুমদারের 'সংসার সীমান্তে' (1975) কিংবা 'গণদেবতা' (1978)-র ছবিও যেমন তাঁর ঝুলিতে রয়েছে তেমনই তাঁর ঝুলিতে রয়েছে 'বেলাশেষে', 'পোস্ত'-এর মতো ছবিও ৷ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন সমান প্রাসঙ্গিক (Remembering Soumitra Chatterjee on his death Anniversary) ৷

আরও পড়ুন: তারার দেশে সুপারস্টার ! প্রয়াত জনপ্রিয় তেলেগু অভিনেতা কৃষ্ণা

আদতেই তাঁর প্রয়াণ এক ইন্দ্রপতন বাংলা ছবির জগতের জন্য ৷ সৌমিত্রর অভাব কোনওদিনই পূরণ হবে না বাঙালি মনে ৷ শিল্পী হারিয়ে গেলেও তাঁর শিল্প চিরশাশ্বত ৷ ঠিক যেমন বিপ্লবীর মৃত্যু থামাতে পারে না বিপ্লবকে, তেমনই সৌমিত্রও অমর তাঁর ফেলুদা, উদয়ন পণ্ডিতদের মাঝেই ৷

কলকাতা, 15 নভেম্বর: আজ থেকে প্রায় ঠিক দু'বছর আগে ভীষণ দু:স্বপ্নের একটি 15 নভেম্বর কাটিয়েছিল আপামর বাংলা ৷ এই দিনেই ইহ-জগতকে চিরদিনের মতো বিদায় জানিয়েছিলেন কিংবদন্তি নায়ক সৌমিত্র চট্টোপাধ্য়ায় (Soumitra Chatterjee )৷ হ্য়াঁ নায়ক, কারণ পার্শ্ব চরিত্র হয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়েও প্রধান চরিত্রের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তিনি হয়ে উঠেছেন তাঁর অভিনয় গুণে ৷ তা সে উদয়ন পণ্ডিতই হোক বা কর্মাশিয়াল ছবির ছকে বাধা খলনায়ক চরিত্রই হোক ৷ সৌমিত্র অনন্য তাঁর নিজস্ব প্রতিভার গুণে ৷ এই কিংবদন্তির জন্ম নদিয়ার কৃষ্ণনগরে ৷ সালটা ছিল 1935 ৷ তাঁর বাবা ছিলেন আইনজীবী ৷ সৌমিত্রবাবুর পড়াশোনা শুরু কৃষ্ণনগরের সেন্ট জন্স বিদ্যালয়ে ৷ এরপর হাওড়া জিলা স্কুল হয়ে কলকাতা সিটি কলেজ থেকে পাশ করেন তিনি (Remembering Soumitra Chatterjee )৷

তাঁর কর্মজীবন অবশ্য় শুরু হয় কিছুটা অন্যভাবেই ৷ আকাশবাণীর ঘোষক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি । অভিনয়ের খিদেটা অবশ্য় মনের মধ্য়ে ছিল আগে থেকেই ৷ কিন্তু কার্তিক বসুর 'নীলাচলে মহাপ্রভু' ছবিতে অডিশন দিয়েও সুযোগ পাননি ৷ কিন্তু তখন কি কেউ ভাবতেও পেরেছিল সেই সৌমিত্রই হবেন সত্য়জিৎ রায়ের কালজয়ী সব ছবির নায়ক ৷ কার্যত তাঁর হাত ধরেই উত্তমের পাশাপাশি বাঙালি পেল আরেক নায়ককে ৷ যিনি সংস্কৃতি প্রিয় বাঙালির অবিসংবাদিত আইকন হয়ে উঠলেন খুব সহজেই ৷ তাঁর কবিতা, সংগীত প্রেম থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি অঙ্গভঙ্গি নকল করতে শুরু করলেন তাঁর অনুরাগীরা ৷ সত্য়জিৎ রায়ের 'অপুর সংসার'-এর অপু হিসাবে ছবির জগতে পা রাখা সৌমিত্র বাঙালির মনন ও আবেগে গড়লেন স্থায়ী সাম্রাজ্য ৷

এরপর সত্য়জিৎ রায়ের হাত ধরেই কখনও তিনি ফেলুদা হয়েছেন, কখনও হয়েছেন উদয়ন পণ্ডিত ৷ কখনও যেমন জটিল রহস্য়ের জট ছাড়িয়ে চিৎকার করে উঠেছেন, "আছে, আছে । আমাদের টেলিপ্যাথির জোর আছে ৷" কখনও তেমনই তাঁর কণ্ঠে শোনা গিয়েছে প্রতিবাদের বাণী ৷ তখন তাঁর গলার স্লোগান হয়ে উঠেছে, "দড়ি ধরে মারো টান । রাজা হবে খান খান..."৷ তবে সত্য়জিৎই যে তাঁকে শুধু নানান ভাবে ব্যবহার করেছেন তা কিন্তু নয় ৷ তপন সিংহের 'ক্ষুধিত পাষাণ' (1960), 'ঝিন্দের বন্দি' (1961); অসিত সেনের সঙ্গে 'স্বরলিপি' (1961), অজয় করের সঙ্গে 'সাত পাকে বাঁধা' (1963) , 'পরিণীতা' (1969) এবং তরুণ মজুমদারের 'সংসার সীমান্তে' (1975) কিংবা 'গণদেবতা' (1978)-র ছবিও যেমন তাঁর ঝুলিতে রয়েছে তেমনই তাঁর ঝুলিতে রয়েছে 'বেলাশেষে', 'পোস্ত'-এর মতো ছবিও ৷ জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি ছিলেন সমান প্রাসঙ্গিক (Remembering Soumitra Chatterjee on his death Anniversary) ৷

আরও পড়ুন: তারার দেশে সুপারস্টার ! প্রয়াত জনপ্রিয় তেলেগু অভিনেতা কৃষ্ণা

আদতেই তাঁর প্রয়াণ এক ইন্দ্রপতন বাংলা ছবির জগতের জন্য ৷ সৌমিত্রর অভাব কোনওদিনই পূরণ হবে না বাঙালি মনে ৷ শিল্পী হারিয়ে গেলেও তাঁর শিল্প চিরশাশ্বত ৷ ঠিক যেমন বিপ্লবীর মৃত্যু থামাতে পারে না বিপ্লবকে, তেমনই সৌমিত্রও অমর তাঁর ফেলুদা, উদয়ন পণ্ডিতদের মাঝেই ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.