কলকাতা, 7 জুলাই: দিনকয়েক আগেই 'নর্থ আমেরিকা বেঙ্গলি কনফারেন্স' বা 'এনএবিসি'-তে বাংলার শিল্পীদের চূড়ান্ত অপমান ও হেনস্তার প্রতিবাদে সামাজিক মাধ্যমে এই নিয়ে মুখ খুলেছেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী থেকে শুরু করে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী জয়তী চক্রবর্তী। কিন্তু শুক্রবার সেই সব প্রতিবাদ ভিডিয়ো উড়ে গিয়েছে জয়তী চক্রবর্তীর ফেসবুক প্রোফাইল থেকে ৷ জানা গিয়েছে, সঙ্গীতশিল্পীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়ার পরেই সোশাল মাধ্যম থেকে মুছে গিয়েছে প্রতিবাদ বার্তা ৷ যা নিয়ে ফের একবার ধিক্কার জানিয়েছেন অনুরাগীরা ৷
আমেরিকার ঐতিহ্যবাহী বঙ্গ সম্মেলনে শিল্পীদের অপমানের প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন সকল শিল্পীরাই ৷ পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী ও সঙ্গীত শিল্পী জয়তী চক্রবর্তীর পাশে দাঁড়িয়েছেন তেজেন্দ্রনারায়ণ মজুমদার, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়, ইমন চক্রবর্তী, উপালি চট্টোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে। হেনস্তা হওয়ার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ লাইভে তুলে ধরেন শিল্পী জয়তী চক্রবর্তী। আর তার দু'দিন যেতে না যেতেই তাঁর সেই ফেসবুক পেজটি হ্যাক হল। তাঁর 'এনএবি সি'র সাম্প্রতিক ঘটনা সংক্রান্ত পোস্ট-সহ বেশ কিছু পোস্ট উধাও হয় প্রথমে। এরপর সেই পেজটি একেবারে অকেজো করে দেওয়া হয়। কে বা কারা এই কাজটি করেছেন সেই ব্যাপারে সন্দিহান শিল্পী স্বয়ং।
শিল্পীর সঙ্গে এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইটিভি ভারতকে বলেন, "হ্যাঁ আমার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফেসবুক পেজটি হ্যাক করা হয়েছে লাইভের দু'দিন কাটতে না কাটতেই। আমি তখন ফ্লাইটে দেশের পথে। ফোনে স্বাভাবিকভাবেই কোনও কাজ করা সম্ভব ছিল না। সেই সময়েই হ্যাক করা হয় এবং পেজটি অকেজো করে দেওয়া হয়। অনেক পোস্ট ছিল আমার পেজটাতে।"
- " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="">
তা হলে কি ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কেউই ঘটিয়েছে এই কাণ্ড? প্রশ্নের জবাবে শিল্পী বলেন, "আমার কাছে কোনও প্রমাণ নেই। তাই আমি জোর দিয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে, সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিতে পারছি না। প্রথমে ওই পোস্টটাই কেন মুছে দেবে। ওর সঙ্গে আরও কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট মুছে ফেলা হয়। তারপর অকেজো করা হয় আমার পেজটা। "
এহেন ঘটনার পর 'এনএবিসি' নিয়ে কী সিদ্ধান্ত শিল্পীর? জয়তী চক্রবর্তী বলেন, "আমি তো আর কখনোই যাব না। তবে ওখানে আরও অনেক ভালো ভালো গানের অনুষ্ঠান হয়। আমি সেখানে নিশ্চয়ই যাব। আমার প্রথম দু'টি অনুষ্ঠান এনএবিসি-তে ছিল স্বপ্নের মতো। সোনার অক্ষরে লিখে রাখার মতো। 2009 আর 2011- এই দুটি আমার জীবনের সেরা দুটো 'এনএবিসি'। 2009 'এনএবিসি'র মাধ্যমেই আমি প্রথম বিদেশ দেখি। আমি সেদিনও বলেছি আজও বলব, ওখানে সবাই খারাপ নয়। অনেকেই খুব ভালো। তাই অনেক ভালো অভিজ্ঞতাও রয়েছে আমার ফেলে আসা দিনের।"
- " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="">
আরও পড়ুন: আমেরিকার বঙ্গ সম্মেলনে বাংলার শিল্পীদের চূড়ান্ত অপমান ! তুমুল চর্চা সোশালে
তিনি আরও বলেন, "অল্প ভুলত্রুটি সব জায়গায় হয়। সেগুলো ধরার মতো নয়। কিন্তু এবারের ঘটনা আমাকে ভাবিয়েছে। আমি এত কথা বলেছি তার কারণ আমি দেখেছি প্রত্যেক গুণী মানুষ কীভাবে অসম্মানিত হয়েছেন। আমি তো আর যাব না, পরে যাঁরা যাবেন তাঁরা যেন এভাবে এরকম সমস্যার সম্মুখীন না হন সেই কারণেও আমি সবটা সামনে আনতে চেয়েছি। হয়ত পরবর্তীতে আর এরকম হবে না। তবু এহেন ঘটনা সবার জানা দরকার। অনেকেই অনেক কথা লিখছে সামাজিক মাধ্যমে। সেই সব অর্বাচীনদের নিয়ে আমি ভাবিত নই একেবারেই।"