দিল্লি ও কলকাতা, 23 মে : সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ভোটগণনা চলছে । সকাল 8 টা থেকে দেশের মোট 542 টি আসনের গণনা শুরু হয় (মোট লোকসভা আসন 543 টি । তামিলনাড়ুর ভেলোরে ভোট বাতিল হয়েছে) । যদিও আজ চূড়ান্ত ফলাফল পাওয়া নাও যেতে পারে বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশন । কমিশন সূত্রে খবর, পুরো ফল আসতে 24 মে পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে ।
গণনাকেন্দ্রে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে । স্ট্রং রুমে রয়েছে প্যারা মিলিটারি ফোর্স । স্ট্রং রুম লাগোয়া কাউন্টিং হল । সেই কাউন্টিং হলের ভিতর রয়েছে CAPF । কাউন্টিং হলের গেটে পাহারায় কেন্দ্রীয় বাহিনী । সেখানেই প্রথম কর্ডন । এই কর্ডনে কাউন্টিং হলে যাওয়ার অনুমতি পত্রের পরীক্ষা হয়। এই গেট দিয়ে মোবাইল, জলের বোতল, খাবার নিয়ে প্রবেশ করা গেলেও, মূল কাউন্টিং হলের ভিতর এসবের প্রবেশ নিষিদ্ধ । কাউন্টিং হলের বাইরে মিডিয়া সেন্টারে মোবাইল রাখার জন্য নির্দিষ্ট একটি রুম । সেখানে সব জমা রাখতে হচ্ছে । তারপরই পাওয়া যাচ্ছে ভিতরে ঢোকার ছাড়পত্র । কাউন্টিং হলের ঠিক বাইরে রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দ্বিতীয় কর্ডন । কাউন্টিং হলের ভিতরে তৃতীয় কর্ডন । কাউন্টিং সেন্টারের বাইরে 100 মিটারে রয়েছে রাজ্যের সশস্ত্র বাহিনী । তারপর পুলিশ । এই 100 মিটারের বাইরে রয়েছে একটি গেট । যেখানে প্রথম দফায় অনুমতিপত্র পরীক্ষা হয় । সেখানে এই অনুমতিপত্র পরীক্ষার জন্য রয়েছেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট ।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, এরাজ্যের 42 টি লোকসভা কেন্দ্রের জন্য রয়েছে 58 টি কাউন্টিং সেন্টার । কাউন্টিং হল থাকছে 379 টি । কাউন্টিং টেবিল রয়েছে 4668 টি । সবচেয়ে বেশি কাউন্টিং সেন্টার দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে । সেখানে রয়েছে সাতটি কাউন্টিং সেন্টার । মোট 25 হাজার গণনাকর্মী কাজ করছেন নির্বাচন কমিশনের তরফে ।
এবার দেখে নিন কী পদ্ধতিতে হচ্ছে গণনা -
গণনা হবে পাঁচটি পদ্ধতিতে
1) প্রথম গণনা হবে পোস্টাল ব্যালটের ভোট । ARO-র নেতৃত্বে যে কেন্দ্রে রিটার্নিং অফিসার থাকবেন সেখানে এই পোস্টাল ব্যালট গণনা হবে । রাজ্যে 42 টি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে 58 টি গণনা কেন্দ্র ।
2) পোস্টাল ব্যালটের গণনার পর সার্ভিস ভোটারদের ভোট গণনা করা হবে । তিনটি খামের ভিতর থাকবে পোস্টাল ব্যালট । প্রথমে খোলা হবে বাইরের খাম । তারপরের খামের ভিতর থাকবে সার্ভিস ভোটারের ডিক্লেয়ারেশন ও তৃতীয় খামে থাকবে পোস্টাল ব্যালট । এই খামের ভিতর পোস্টাল ব্যালটের সঙ্গে থাকবে QR CODE । এই কোডকে স্ক্যান করা হবে । যদি স্ক্যান মিলে যায় তবেই এই ভোট গণনা করা হবে ।
3) এরপরই গণনা করা হবে EVM । EVM-এর সঙ্গে থাকা কন্ট্রোল ইউনিট নিয়ে আসা হবে স্ট্রং রুম থেকে । প্রত্যেকটি গণনা কেন্দ্র যার ভিতর কাউন্টিং হল থাকবে সেখানে সাতটি বিধানসভা×প্রায় 14 টি টেবিল× 15 থেকে 16 রাউন্ড । এভাবেই কন্ট্রোল ইউনিটের গণনা করা হবে । এই ক্ষেত্রে যদি কোনও কন্ট্রোল ইউনিট বিগড়ে যায় তখন সেই কন্ট্রোল ইউনিটের VVPAT গণনা করা হবে ।
4) কন্ট্রোল ইউনিটের গণনা শেষ হয়ে গেলে শুরু হবে VVPAT-এর গণনা । লটারির মাধ্যমে প্রত্যেক বিধানসভা থেকে পাঁচটি করে VVPAT স্ট্রং রুম থেকে নিয়ে আসা হবে কাউন্টিং হলের ভিতর । তবে গণনা হবে এক সঙ্গেই । কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, আনুমানিকভাবে প্রত্যেক বিধানসভার গণনা করতে সময় লাগতে পারে 2 ঘণ্টা ।
5) 1961 সালের নির্বাচন কমিশনের 56 D ধারা অনুযায়ী কোনও প্রার্থী বা তার এজেন্ট রিকাউন্টিং চাইতে পারে । রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিতভাবে কারণ দর্শিয়ে আবেদন করতে হবে । রিটার্নিং অফিসার চাইলে তা গ্রাহ্য করতে পারেন আবার নাও পারেন ।
একটি রাউন্ডের গণনা শেষ হয়ে যাওয়ার পর রিটার্নিং অফিসার সেই ফলাফল যোগ করে একদিকে বোর্ডে লিখে দেবেন অন্যদিকে বাইরে মাইকের সাহায্যে তা ঘোষণা করা হবে । ঘোষণা শেষ হওয়ার পরই দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য স্ট্রং রুম থেকে নতুন কন্ট্রোল ইউনিট আনা হবে কাউন্টিং হলের ভিতর ।