দুর্গাপুর, 19 মার্চ : ভোট মরশুমে কয়লা পাচার কাণ্ড ঘুম কেড়েছে রাজ্য়ের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের ৷ সিবিআই, আয়কর বিভাগের অনুসন্ধান পৌঁছে গিয়েছে শাসক ঘনিষ্ঠ ব্য়বসায়ীদের অন্দরে ৷ চলছে ধরপাকড় ৷ নাম জড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের ডাকসাইটে নেতাদেরও ৷ এমন একটা প্রেক্ষাপটে এবার পাল্টা চাপে পদ্ম শিবির ৷ আসানসোল-দুর্গাপুরের কুখ্যাত দুই কয়লা মাফিয়া ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে ৷ আর তারপরই শুরু হয়েছে রাজ্য পুলিশ ও গোয়েন্দাদের তৎপরতা ৷ প্রায় 16 বছরের পুরনো মামলায় শ্রীঘরে যেতে হয়েছে এঁদেরই একজনকে ৷ অন্য়জনের ফ্ল্য়াটে পড়েছে ভবানী ভবনে হাজিরার নোটিস ৷
আদতে রানিগঞ্জের বাসিন্দা মাঝবয়সী রাজু ঝা ৷ বাম আমলেই কয়লা মাফিয়া হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন রাজু ৷ শোনা যায়, সেই সময় শাসক শিবিরের সঙ্গে তাঁর গোপন সখ্য থাকলেও সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক ছিল না ৷ এদিকে, পালাবদলের পর 2011 সাল থেকে 2015 সাল পর্যন্ত আসানসোল-দুর্গাপুরে কয়লা মাফিয়াদের রাজত্ব কার্যত স্তব্ধ করে দেয় প্রশাসন ৷ 2015 সালের পর শিবির বদলে ফের শুরু হয় কালো ব্য়বসা ৷ রাজু ঝা-র হাতে থাকা সিন্ডিকেটের দখল নেয় অনুপ মাঝি ওরফে লালা ৷ সম্প্রতি এই লালাই বারবার উঠে এসেছেন খবরের শিরোনামে ৷ যাঁকে নিয়ে বিড়ম্বনা বেড়েছে শাসক শিবিরের ৷
লালার এই উত্থানের পর থেকেই বিজেপির দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন রাজু ৷ সম্প্রতি বিজেপিতে যোগদানও করেন তিনি ৷ ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষিত হওয়ার আগেই নেমে যান দলের সংগঠনের কাজে ৷ পরবর্তীতে জামুড়িয়া, রানিগঞ্জে বিজেপির হয়ে ভোটপ্রচারও করতে দেখা যায় তাঁকে ৷ রাজুর এই সক্রিয়তা নজর কাড়ে তৃণমূলের ৷ 2005 সালে বাঁকুড়ার মেজিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছিল রাজুর বিরুদ্ধে ৷ গত 14 মার্চ সেই মামলাতেই তাঁকে গ্রেফতার করে সিআইডি ৷
আরও পড়ুন : বিজেপিতে যোগ দেওয়া কয়লা মাফিয়ার ফ্ল্যাটে সিআইডি অভিযান
শুক্রবার রাজুকে বাঁকুড়া থেকে দুর্গাপুরে আনা হয় ৷ পেশ করা হয় দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে ৷ সেখানে আরও কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত করা হয় তাঁকে ৷ তাঁকে সাতদিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক । রাজুর অভিযোগ, তাঁকে চক্রান্ত করে ফাঁসানো হচ্ছে ৷ ভোট মরশুমে তিনি বিজপিতে যোগ দেওয়াতেই ষড়যন্ত্র করেছে তৃণমূল ৷ অন্য়দিকে, আসানসোল-দুর্গাপুরের আর এক কয়লা মাফিয়া জয়দেব খাঁ-ও পড়েছেন বেকায়দায় ৷ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরই তাঁর উপর নজর পড়েছে সিআইডির ৷ সম্প্রতি জয়দেবের দুর্গাপুরের বিধাননগরের ফ্ল্য়াটে হানা দেন রাজ্য়ের গোয়েন্দারা ৷ কাউকে না পেয়ে ফ্ল্য়াটের দরজাতেই সাঁটিয়ে আসেন ভবানী ভবনে হাজিরার নোটিস ৷