ETV Bharat / elections

18 মার্চ পুরুলিয়ায়, 2 দিন পর কাঁথিতে মোদি

ফের রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ আগামী 18 মার্চ পুরুলিয়ায় ও 20 মার্চ কাঁথিতে জনসভা করবেন তিনি ৷ ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, পুরুলিয়া এবার বিজেপির তুরুপের তাস ৷ তবে কাঁথিতে পাল্লা ভারী তৃণমূলেরই ৷ সেক্ষেত্রে দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলায় মোদির সভা কী প্রভাব ফেলে, এখন সেটাই দেখার ৷

west bengal assembly election 2021_Wb_kol_Prime Minister Narendra Modi is coming to the state again. Prime Minister Narendra Modi will hold public rallies in Purulia on March 18 and Kathi on March 20.
18 মার্চ ফের রাজ্যে আসছেন মোদি
author img

By

Published : Mar 8, 2021, 2:32 PM IST

Updated : Mar 8, 2021, 6:22 PM IST

কলকাতা, 8 মার্চ : ব্রিগেড সমাবেশের 11 দিনের মাথায় আবারও বঙ্গসফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সোমবারই প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে এ কথা জানানো হয়েছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে ৷ সূত্রের খবর, 18 এবং 20 মার্চ দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলায় জনসভা করবেন মোদি ৷ প্রথম সভাটি হবে পুরুলিয়ায় ৷ দ্বিতীয়টির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিকে ৷ প্রসঙ্গত, পুরুলিয়া জেলার ন’টি বিধানসভা কেন্দ্রের সবকটি এবং কাঁথির অন্তর্গত দু’টি বিধানসভা আসনেই ভোট হবে প্রথম দফায়, আগামী 27 মার্চ ৷

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া বিজেপির তুরুপের তাস হতেই পারে ৷ কারণ 2018 সালে এই পুরুলিয়া থেকেই উত্থান শুরু হয়েছিল গেরুয়া শিবিরের ৷ সে বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে 29 মে নিখোঁজ হন তরুণ বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাত ৷ সুপুরডি গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় পরদিন 30 মে ৷ এর একদিন পরই 1 জুন নিখোঁজ হন আরও এক বিজেপি কর্মী ৷ ডাভা গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবকের নাম দুলাল কুমার ৷ নিখোঁজ হওয়ায় দু’দিন পর 3 জুন উদ্ধার হয় দুলালের ঝুলন্ত দেহ ৷ দু’টি ঘটনাতেই নাম জড়ায় তৃণমূলের ৷ যদিও এখনও পর্যন্ত দোষীদের কাউকেই নিশ্চিতভাবে শনাক্ত করা যায়নি বা তাদের শাস্তি দেওয়া হয়নি ৷

এমন একটা আবহে পুরুলিয়ার মানুষ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকতে শুরু করে ৷ যার সরাসরি প্রভাব পড়ে উনিশের লোকসভা নির্বাচনে ৷ তৃণমূলের হাত থেকে জেলার একমাত্র লোকসভা আসনটি ছিনিয়ে নেয় বিজেপি ৷ মৃগাঙ্ক মাহাতর জায়গায় নতুন সাংসদ হন জ্যোতির্ময় সিং মাহাত ৷ উনিশের লোকসভা ভোটের হিসাব অনুসারে, পুরুলিয়া জেলার মোট ন’টি (পুরুলিয়া, জয়পুর, কাশীপুর, বাঘমুণ্ডী, বলরামপুর, মানবাজার, বান্দোয়ান, রঘুনাথপুর ও পাড়া) বিধাসভা আসনের মধ্যে কেবলমাত্র মানবাজার বাদে বাকি সবক’টিতেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি ৷ অথচ 2016 সালের ভোটে এই ন’টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটিতেই জিতেছিল তৃণমূল ৷ বাকি দু’টি ঝুলিতে পুরেছিল কংগ্রেস ৷

আরও পড়ুন : বিনামূল্যে গ্যাস দিয়ে দেখাক মোদি সরকার, চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন মমতা

কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট একেবারে আলাদা ৷ মনে করা হচ্ছে, পশ্চিমের রুখা-শুখা এই জেলায় এবার পদ্মের চাষই জমবে ৷ ইতিমধ্যে বিজেপি যে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করেছে, সেই অনুযায়ী, কেবলমাত্র দু’টি আসন ছাড়া বাকি সাতটিতেই প্রার্থী নিয়ে বড় কোনও জটিলতা নেই ৷ যে আসন দু’টি নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে একটি হল বাঘমুণ্ডী ৷ যেটি আজসু (অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন)-কে ছেড়ে দিয়েছে বিজেপি ৷ দলের এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নয় বিজেপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা ৷ তাঁরা চান, ওই আসনে এলাকারই কোনও প্রতিনিধিকে দাঁড় করাক দল ৷

অন্যদিকে, যে বলরামপুর থেকে বিজেপির উত্থান শুরু, ঝামেলা বেধেছে সেখানেও ৷ এই আসনটিতে প্রার্থী হিসাবে বাণেশ্বর মাহাতর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি নেতৃত্ব ৷ অথচ বাণেশ্বরের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে দলেরই একটা বড় অংশের ৷ তাঁরা চাইছেন বাণেশ্বরের বদলে সুযোগ দেওয়া হোক স্বচ্ছ ভাবমূর্তির গোপীনাথ গোস্বামীকে ৷

এছাড়া, কাশীপুর কেন্দ্রে এখনও কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি গেরুয়াশিবির ৷ মনে করা হচ্ছে বিকল্প কাউকে না পেলে এই আসনে প্রার্থী করা হতে পারে দলের জেলা সভাপতি বিদ্য়াসাগর চক্রবর্তীকে ৷

এই অবস্থায় আগামী 27 মার্চ ভোট হলে বিজেপির পাল্লা ভারী থাকবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷ ফল নিয়ে আশাবাদী জেলার তৃণমূলস্তরের কর্মীরাও ৷ প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন পুরুলিয়া সফর নিয়ে উচ্ছ্বসিত তাঁরা ৷ বিজেপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অনুমান, মোদির সভার পর জেলায় বিজেপির প্রতি মানুষের ভরসা আরও বাড়বে ৷ কাজ করার বাড়তি উৎসাহ পাবেন দলের নিচুতলার কর্মীরাও ৷ তবে একইসঙ্গে ইতিউতি যে দু-একটা কোন্দল দেখা দিয়েছে, সেগুলোরও সমাধান করতে হবে ৷

মোদির আসন্ন বঙ্গসফরের পরবর্তী গন্তব্য পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ৷ স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের ময়নাতদন্ত বলছে, এখানকার প্রেক্ষাপট পুরুলিয়ার একেবারে উল্টো ৷ এমনকী, শুভেন্দু অধিকারীর দলবদল নিয়ে প্রথমে বেশ হাওয়া গরম হলেও এখন সেই হাওয়াই বইছে উল্টো দিকে ৷ কাঁথিতে বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে দু’টি ৷ কাঁথি উত্তর এবং কাঁথি দক্ষিণ ৷ 2016 সালের নির্বাচনে এই দু’টোই ছিল মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের তৃণমূলের দখলে ৷ কাঁথি উত্তরে জিতেছিলেন বনশ্রী মাইতি এবং কাঁথি দক্ষিণে জয় এসেছিল শুভেন্দুর ভাই দিব্য়েন্দুর ঝুলিতে ৷ পরবর্তীতে তমলুকের সাংসদ হন দিব্য়েন্দু ৷ ফলে ছাড়তে হয় বিধায়ক পদ ৷ 2017 সালের উপনির্বাচনে দিব্য়ন্দুর জায়গায় আসেন তৃণমূলেরই চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ৷

আরও পড়ুন : ঘাসফুলে টিকিট না পেয়ে পদ্মশিবিরে একঝাঁক নেতা

এবছর কাঁথি উত্তর ও কাঁথি দক্ষিণ আসনে তৃণমূলের দুই প্রার্থী হলেন যথাক্রমে তরুণ জানা এবং জ্য়োতির্ময় কর ৷ এই তরুণ জানা এক সময় শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হলেও এখন তা অতীত ৷ বরং ইদানীং তৃণমূলে তাঁর ওজন বেড়েছে ৷ সদ্য গঠিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কোর কমিটির সদস্যপদও পেয়েছেন তরুণ ৷ অন্যদিকে, জ্য়োতির্ময় কর তৃণমূলেরই পটাশপুরের বিদায়ী বিধায়ক ৷

লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, কাঁথি উত্তরের বিদায়ী বিধায়ক বনশ্রী মাইতি ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেছেন ৷ কিন্তু গেরুয়াবাহিনী তাঁকে টিকিট দেয়নি ৷ বদলে প্রার্থী হয়েছেন কাঁথি পুরসভার 9 নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সুনিতা সিনহা ৷ বিজেপিতে তাঁর যোগদানেরও কাণ্ডারী ছিলেন সেই শুভেন্দুই ৷ অন্যদিকে, কাঁথি দক্ষিণ আসনে বিজেপির দাঁও অরূপকুমার দাস ৷

তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, কাঁথির দু’টি আসনেই জেতার সম্ভাবনা রয়েছে তৃণমূলের ৷ কারণ, শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের আগে যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজপিতে এসেছিলেন, তাঁদের ক্ষোভের কারণ ছিল অধিকারী পরিবার ৷ এখন বিজেপিতেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেই অধিকারী বাড়িই মেজো ছেলে ৷ যা মেনে নিতে পারছেন না বিজেপির নিচুতলার স্থানীয় কর্মীরা ৷ এমনকী, ভোটারদের উপরও এর একটা প্রভাব পড়েছে ৷

এই অবস্থায় কাঁথিতে মোদির একটা সভা সবকিছু বদলে দেবে, তেমনটা মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ৷ বরং তাঁদের মতে, নন্দীগ্রামের প্রার্থী হওয়ায় মমতার কাঁথি-সহ আশপাশের এলাকায় প্রচারের সুযোগ অনেক বেশি ৷ যার সুফল পাবে গোটা দল ৷

কলকাতা, 8 মার্চ : ব্রিগেড সমাবেশের 11 দিনের মাথায় আবারও বঙ্গসফরে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ সোমবারই প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে এ কথা জানানো হয়েছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে ৷ সূত্রের খবর, 18 এবং 20 মার্চ দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলায় জনসভা করবেন মোদি ৷ প্রথম সভাটি হবে পুরুলিয়ায় ৷ দ্বিতীয়টির জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিকে ৷ প্রসঙ্গত, পুরুলিয়া জেলার ন’টি বিধানসভা কেন্দ্রের সবকটি এবং কাঁথির অন্তর্গত দু’টি বিধানসভা আসনেই ভোট হবে প্রথম দফায়, আগামী 27 মার্চ ৷

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পুরুলিয়া বিজেপির তুরুপের তাস হতেই পারে ৷ কারণ 2018 সালে এই পুরুলিয়া থেকেই উত্থান শুরু হয়েছিল গেরুয়া শিবিরের ৷ সে বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে 29 মে নিখোঁজ হন তরুণ বিজেপি কর্মী ত্রিলোচন মাহাত ৷ সুপুরডি গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় পরদিন 30 মে ৷ এর একদিন পরই 1 জুন নিখোঁজ হন আরও এক বিজেপি কর্মী ৷ ডাভা গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবকের নাম দুলাল কুমার ৷ নিখোঁজ হওয়ায় দু’দিন পর 3 জুন উদ্ধার হয় দুলালের ঝুলন্ত দেহ ৷ দু’টি ঘটনাতেই নাম জড়ায় তৃণমূলের ৷ যদিও এখনও পর্যন্ত দোষীদের কাউকেই নিশ্চিতভাবে শনাক্ত করা যায়নি বা তাদের শাস্তি দেওয়া হয়নি ৷

এমন একটা আবহে পুরুলিয়ার মানুষ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকতে শুরু করে ৷ যার সরাসরি প্রভাব পড়ে উনিশের লোকসভা নির্বাচনে ৷ তৃণমূলের হাত থেকে জেলার একমাত্র লোকসভা আসনটি ছিনিয়ে নেয় বিজেপি ৷ মৃগাঙ্ক মাহাতর জায়গায় নতুন সাংসদ হন জ্যোতির্ময় সিং মাহাত ৷ উনিশের লোকসভা ভোটের হিসাব অনুসারে, পুরুলিয়া জেলার মোট ন’টি (পুরুলিয়া, জয়পুর, কাশীপুর, বাঘমুণ্ডী, বলরামপুর, মানবাজার, বান্দোয়ান, রঘুনাথপুর ও পাড়া) বিধাসভা আসনের মধ্যে কেবলমাত্র মানবাজার বাদে বাকি সবক’টিতেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি ৷ অথচ 2016 সালের ভোটে এই ন’টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতটিতেই জিতেছিল তৃণমূল ৷ বাকি দু’টি ঝুলিতে পুরেছিল কংগ্রেস ৷

আরও পড়ুন : বিনামূল্যে গ্যাস দিয়ে দেখাক মোদি সরকার, চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লেন মমতা

কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট একেবারে আলাদা ৷ মনে করা হচ্ছে, পশ্চিমের রুখা-শুখা এই জেলায় এবার পদ্মের চাষই জমবে ৷ ইতিমধ্যে বিজেপি যে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করেছে, সেই অনুযায়ী, কেবলমাত্র দু’টি আসন ছাড়া বাকি সাতটিতেই প্রার্থী নিয়ে বড় কোনও জটিলতা নেই ৷ যে আসন দু’টি নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে একটি হল বাঘমুণ্ডী ৷ যেটি আজসু (অল ঝাড়খণ্ড স্টুডেন্টস ইউনিয়ন)-কে ছেড়ে দিয়েছে বিজেপি ৷ দলের এই সিদ্ধান্তে মোটেই খুশি নয় বিজেপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা ৷ তাঁরা চান, ওই আসনে এলাকারই কোনও প্রতিনিধিকে দাঁড় করাক দল ৷

অন্যদিকে, যে বলরামপুর থেকে বিজেপির উত্থান শুরু, ঝামেলা বেধেছে সেখানেও ৷ এই আসনটিতে প্রার্থী হিসাবে বাণেশ্বর মাহাতর নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি নেতৃত্ব ৷ অথচ বাণেশ্বরের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ রয়েছে দলেরই একটা বড় অংশের ৷ তাঁরা চাইছেন বাণেশ্বরের বদলে সুযোগ দেওয়া হোক স্বচ্ছ ভাবমূর্তির গোপীনাথ গোস্বামীকে ৷

এছাড়া, কাশীপুর কেন্দ্রে এখনও কোনও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি গেরুয়াশিবির ৷ মনে করা হচ্ছে বিকল্প কাউকে না পেলে এই আসনে প্রার্থী করা হতে পারে দলের জেলা সভাপতি বিদ্য়াসাগর চক্রবর্তীকে ৷

এই অবস্থায় আগামী 27 মার্চ ভোট হলে বিজেপির পাল্লা ভারী থাকবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷ ফল নিয়ে আশাবাদী জেলার তৃণমূলস্তরের কর্মীরাও ৷ প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন পুরুলিয়া সফর নিয়ে উচ্ছ্বসিত তাঁরা ৷ বিজেপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের অনুমান, মোদির সভার পর জেলায় বিজেপির প্রতি মানুষের ভরসা আরও বাড়বে ৷ কাজ করার বাড়তি উৎসাহ পাবেন দলের নিচুতলার কর্মীরাও ৷ তবে একইসঙ্গে ইতিউতি যে দু-একটা কোন্দল দেখা দিয়েছে, সেগুলোরও সমাধান করতে হবে ৷

মোদির আসন্ন বঙ্গসফরের পরবর্তী গন্তব্য পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ৷ স্থানীয় রাজনৈতিক মহলের ময়নাতদন্ত বলছে, এখানকার প্রেক্ষাপট পুরুলিয়ার একেবারে উল্টো ৷ এমনকী, শুভেন্দু অধিকারীর দলবদল নিয়ে প্রথমে বেশ হাওয়া গরম হলেও এখন সেই হাওয়াই বইছে উল্টো দিকে ৷ কাঁথিতে বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে দু’টি ৷ কাঁথি উত্তর এবং কাঁথি দক্ষিণ ৷ 2016 সালের নির্বাচনে এই দু’টোই ছিল মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের তৃণমূলের দখলে ৷ কাঁথি উত্তরে জিতেছিলেন বনশ্রী মাইতি এবং কাঁথি দক্ষিণে জয় এসেছিল শুভেন্দুর ভাই দিব্য়েন্দুর ঝুলিতে ৷ পরবর্তীতে তমলুকের সাংসদ হন দিব্য়েন্দু ৷ ফলে ছাড়তে হয় বিধায়ক পদ ৷ 2017 সালের উপনির্বাচনে দিব্য়ন্দুর জায়গায় আসেন তৃণমূলেরই চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ৷

আরও পড়ুন : ঘাসফুলে টিকিট না পেয়ে পদ্মশিবিরে একঝাঁক নেতা

এবছর কাঁথি উত্তর ও কাঁথি দক্ষিণ আসনে তৃণমূলের দুই প্রার্থী হলেন যথাক্রমে তরুণ জানা এবং জ্য়োতির্ময় কর ৷ এই তরুণ জানা এক সময় শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হলেও এখন তা অতীত ৷ বরং ইদানীং তৃণমূলে তাঁর ওজন বেড়েছে ৷ সদ্য গঠিত পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কোর কমিটির সদস্যপদও পেয়েছেন তরুণ ৷ অন্যদিকে, জ্য়োতির্ময় কর তৃণমূলেরই পটাশপুরের বিদায়ী বিধায়ক ৷

লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, কাঁথি উত্তরের বিদায়ী বিধায়ক বনশ্রী মাইতি ইতিমধ্যেই শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেছেন ৷ কিন্তু গেরুয়াবাহিনী তাঁকে টিকিট দেয়নি ৷ বদলে প্রার্থী হয়েছেন কাঁথি পুরসভার 9 নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সুনিতা সিনহা ৷ বিজেপিতে তাঁর যোগদানেরও কাণ্ডারী ছিলেন সেই শুভেন্দুই ৷ অন্যদিকে, কাঁথি দক্ষিণ আসনে বিজেপির দাঁও অরূপকুমার দাস ৷

তথ্যাভিজ্ঞ মহল বলছে, কাঁথির দু’টি আসনেই জেতার সম্ভাবনা রয়েছে তৃণমূলের ৷ কারণ, শুভেন্দু অধিকারীর দলবদলের আগে যাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজপিতে এসেছিলেন, তাঁদের ক্ষোভের কারণ ছিল অধিকারী পরিবার ৷ এখন বিজেপিতেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন সেই অধিকারী বাড়িই মেজো ছেলে ৷ যা মেনে নিতে পারছেন না বিজেপির নিচুতলার স্থানীয় কর্মীরা ৷ এমনকী, ভোটারদের উপরও এর একটা প্রভাব পড়েছে ৷

এই অবস্থায় কাঁথিতে মোদির একটা সভা সবকিছু বদলে দেবে, তেমনটা মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ৷ বরং তাঁদের মতে, নন্দীগ্রামের প্রার্থী হওয়ায় মমতার কাঁথি-সহ আশপাশের এলাকায় প্রচারের সুযোগ অনেক বেশি ৷ যার সুফল পাবে গোটা দল ৷

Last Updated : Mar 8, 2021, 6:22 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.