শিলিগুড়ি, 26 জুলাই: শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনেও সবুজ ঝড় ৷ একতরফা ভাবে জয়লাভ করল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ 22টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে 21টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়লাভ করেছে শাসক দল ৷ 21টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন ৷ পাশাপাশি চারটি পঞ্চায়েত সমিতিতেও সভাপতি ও সহকারী সভাপতি তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে নির্বাচিত হয়েছে (TMC Wins in Gram Panchayat and Panchayat Samiti of Siliguri Mahakuma Parishad) ৷ কিন্তু একটি গ্রাম পঞ্চায়েত আসনের নির্বাচন এ দিন স্থগিত রাখা হয়েছে কোরাম অর্থাৎ, পঞ্চায়েতের সব সদস্য উপস্থিত না থাকায় ৷
ওই বাকি থাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনাও ছড়ায়। পাশাপাশি দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও একটি উপপ্রধান আসনে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে দু’জন শাসকদলের প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৷ তাঁদের মধ্যে একজন উপপ্রধান প্রার্থী জয়ী হন ৷ তবে, প্রধানের পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থী পরাজিত হয়েছেন ৷
দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অলোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘22টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে 21টিতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীরা প্রধান ও উপপ্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কোরাম না হওয়ায় নির্বাচন স্থগিত রাখা হয়েছে ৷ এ বার তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরে শিলিগুড়ির গ্রামাঞ্চলে উন্নয়ন হবে ৷’’
শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি তথা মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন বলেন, ‘‘একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল কংগ্রেসের তফসিলি জাতি ও উপজাতির পঞ্চায়েত সদস্য না থাকায় জোর করে পুলিশ দিয়ে নির্বাচন আটকাতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ যেদিনই নির্বাচন হবে ওই গ্রাম পঞ্চায়েত আমরাই দখল করব ৷ সেটা খালি সময়ের অপেক্ষা ৷’’
আরও পড়ুন: শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি-সহকারি সভাধিপতির নাম ঘোষণা তৃণমূলের
মহকুমা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, নকশালবাড়ি ব্লকের বিন্নাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান পদটি তফসিলি জাতি ও উপজাতির জন্য সংরক্ষিত ৷ কিন্তু, নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের একজন তফসিলি জাতি ও উপজাতির প্রার্থী জয়ী হয়নি ৷ তবে, বিজেপির দু’জন তফসিলি জাতি ও উপজাতির সদস্য পঞ্চায়েতে জয়ী হয়েছেন ৷ ফলে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধান বিজেপির প্রার্থীদেরই বাধ্য হয়ে সমর্থন করতে হবে তৃণমূলকে ৷ কিন্তু, এ দিন ওই দুই প্রার্থী অনুপস্থিত থাকায় নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায় ৷ যার ফলে বিন্নাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয় ৷
পরে পুলিশবাহিনী পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয় ৷ অন্যদিকে, মাটিগাড়া ব্লকের আঠারোখাই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের পদের নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শাসক দলেরই এক মহিলা পঞ্চায়েত সদস্য ৷ তবে তিনি নির্বাচনে পরাজিত হন ৷ একইভাবে ফাঁসিদেওয়া ব্লকের যাসনি জামতারা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পদে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন শাসক দলের আরেক নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য ৷ কিন্তু, তিনি ওই নির্বাচনে জয়ী হলে তাঁকে উপপ্রধান হিসাবে নির্বাচিত করতে বাধ্য হয় শাসকদল ৷