শিলিগুড়ি, 17 সেপ্টেম্বর : উত্তরবঙ্গে শিশুদের জ্বরে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে অহেতুক উদ্বেগের কিছু নেই । আজ শিলিগুড়িতে পৌঁছে এমনটাই জানালেন কলকাতা থেকে পরিদর্শনে আসা চিকিৎসকদের বিশেষ প্রতিনিধিদল । আজ সকালে স্বাস্থ্য দফতরের পাঁচজন চিকিৎসকের একটি বিশেষ দল উত্তরবঙ্গে পৌঁছায় ।
এই বিশেষ দলে রয়েছেন, আইজিপিএমইআরের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রাজা রায়, রাজ্যের ডিরেক্টর অফ হেলথ সার্ভিস (জনস্বাস্থ্য) আধিকারিক পল্লব ভট্টাচার্য, অতিরিক্ত স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিকাশচন্দ্র মণ্ডল, সাগর দত্ত হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান দীপ্তকান্তি মুখোপাধ্যায়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের শিশু বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মিহির সরকার ৷
প্রথমে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে বৈঠক করে ওই বিশেষ প্রতিনিধিদলটি । প্রতিনিধি দলের পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উত্তরবঙ্গ জনস্বাস্থ্য বিভাগের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি সুশান্ত রায়, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক, অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা, দার্জিলিং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য-সহ হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসকরা ।
আরও পড়ুন : Malda Medical : মালদা মেডিক্যালে শিশু মৃত্যু বেড়ে হল 3 ; অস্বাভাবিক নয়, দাবি কর্তৃপক্ষের
বৈঠকে মূলত শিশুদের চিকিৎসা প্রণালী ও পরিকাঠামো নিয়ে বিশদে আলোচনা করেন তাঁরা । শিশুদের চিকিৎসার জন্য শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা । উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পাশাপাশি এদিন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল এবং জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালও পরিদর্শন করেন তাঁরা ।
এই বিষয়ে ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, "উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে 50টি শয্যা বাড়ানো হবে । করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে এই জ্বরের কোনও সম্পর্ক নেই । একটি শিশুও করোনায় সংক্রমিত হয়নি । জেলা হাসপাতালেও পরিকাঠামো পর্যাপ্ত রয়েছে । করোনা কমে যাওয়ায় প্রয়োজনে শিশুদের রাখার জন্য করোনার শয্যা ব্যবহার করা হবে । পাশাপাশি শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে অন্তত 20টি শয্যা বাড়াতে বলা হয়েছে ।"
স্বাস্থ্য বিভাগ ও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, 10 জন শিশুর নমুনা শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে পাঠানো হয় । তার মধ্যে তিন জনের আরএসভি ও একজনের ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি ধরা পড়েছে । পাশাপাশি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে শিশু বিভাগে 62 জন শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে । যার মধ্যে ন'জন জ্বরে আক্রান্ত । এই ন'জনের মধ্যে একজন ডেঙ্গু ও একজন জাপানি এনকেফালাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে । উত্তরবঙ্গ থেকে মোট 54টি নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় । যার মধ্যে তিনজন ডেঙ্গু, 13 জন ম্যালেরিয়া, তিনজন স্ক্রাব টাইফাস ও তিনজন জাপানি এনকেফালাইটিসে আক্রান্ত হয়েছে । পরিস্থিতি মোকাবিলায় সার্ভাইলেন্স বাড়াতে বলা হয়েছে । প্রত্যেক জেলায় মনিটরিং টিম তৈরি করা হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ।