শিলিগুড়ি, 7 মার্চ : আরও এক বিরল অস্ত্রোপচার সফল করে শিরোনামে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ৷ পথ দুর্ঘটনায় বুক ফুঁড়ে প্রবেশ করেছিল বাঁশের টুকরো। মরণাপন্ন রোগীর বিরল অস্ত্রোপচার করে প্রাণ বাঁচাল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকেরা (North Bengal Medical College and Hospital witnessed a rare operation on Monday)। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম প্রৌঢ়া শোভা দেবী (55) বিহারের কিষানগঞ্জের বাসিন্দা। রবিবার দুপুরে বিহারে পাঞ্জিপাড়া থেকে অটোতে কিষানগঞ্জ যাচ্ছিলেন ওই প্রৌঢ়া। সেই সময় বাঁশ বোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় অটোর। দুর্ঘটনায় মহিলার বুকের বাঁ-দিকে একটি বাঁশের টুকরো এফোর-ওফোর হয়ে ঢুকে যায় ।
এরপর প্রৌঢ়াকে প্রথমে বিহারের পূর্ণিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় কিষানগঞ্জ মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও চিকিৎসকদের সদুত্তর না-পেয়ে রবিবার গভীর রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা শোভা দেবীকে। মহিলার পরিস্থিতি বুঝে সময় নষ্ট না-করে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রপ্রচারে তৎপর হন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের চিকিৎসকেরা। গঠিত হয় আট জন চিকিৎসকের একটি মেডিকেল বোর্ড। সেখানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সার্জারি বিভাগীয় প্রধান অমরেন্দ্র সরকার, অ্যানাস্থাসিয়া বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অভিষেক গঙ্গোপাধ্যায়, সূর্য কান্ত, সঞ্চিতা দাস। সোমবার রাত তিনটে নাগাদ শুরু হয় অস্ত্রোপচার।
সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে চলে জটিল এই অস্ত্রোপচার। চিকিৎসকেরা জানান, সৌভাগ্যক্রমে মহিলার ফুসফুসের কোন ক্ষতি হয়নি। তবে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছিল। পাঁজরের চারটি হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জটিল অস্ত্রোপচারের শোভা দেবীকে সকালে আইসিইউ ট্রমা কেয়ার সেন্টারে স্থানান্তরিত করা হয়। আপাতত প্রৌঢ়ার শারীরীক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন : অস্ত্রোপচার করে মহিলার জরায়ু থেকে বাদ 5 কেজি ওজনের টিউমার !
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, "হাসপাতালের চিকিৎসকরা অসাধ্য সাধন করেছে। দ্রুত অস্ত্রোপ্রচার করাতেই রোগীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।" মেডিকেল বোর্ডের সদস্য চিকিৎসক অভিষেক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "রোগীর পরিস্থিতি দেখেই আমরা রাতারাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম দ্রুত অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে। সেইমতো তৎক্ষণাৎ মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে টানা সাড়ে চার ঘন্টা অস্ত্রোপচারের পর রোগীর প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হয়েছি ৷"