শিলিগুড়ি, 22 অক্টোবর: পাহাড় সফর শেষ করে ফের রাজ্যকে তোপ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের । গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)-এ ব্যাপক দুর্নীতিতে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি, অতিমারিতে রাজ্যে ২ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন তিনি । শুধু তাই নয়, মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে পাঠানো সত্ত্বেও, বেনজিরভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দিয়ে দায় সেরেছেন বলেও দাবি করেন রাজ্যপাল ৷ তাঁর কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সংবিধান মেনে চলুন ৷’’
দু’সপ্তাহের পাহাড় সফর সেরে শুক্রবার বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে দিল্লি রওনা দেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল ৷ তার আগে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি ৷ ধনকড় বলেন, ‘‘2011 সালে জিটিএ তৈরি হওয়ার পর প্রত্যেক বছর রাজ্যপালকে রিপোর্ট দেওয়ার কথা ছিল ৷ আজ পর্যন্ত তা হয়নি ৷ গত 10 বছরে জিটিএ-কে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে রাজ্য এবং কেন্দ্র ৷ কিন্তু তা বিয়ে কোনও রিপোর্ট দেয়নি জিটিএ ৷ কোনও অডিটও হয়নি ৷’’ এদিকে রবিবার পাহাড় সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
আরও পড়ুন: TMC Attacked inTripura: ত্রিপুরায় এবার আক্রান্ত তৃণমূল সাংসদ সুস্মিতা দেব
মাত্র এক বার নির্বাচন করিয়েই জিটিএ কেন থেমে গিয়েছে, এমন প্রশ্নও তোলেন ধনকড় ৷ তাঁর অভিযোগ, ‘‘ বার মাত্র নির্বাচন হয়েছিল জিটিএ-তে ৷ তাতেও শাসকদলের প্রতিনিধিকেই বসানো হয়েছে ৷ জিটিএ-তে বড় ধরনের দুর্নীতির আশঙ্কা রয়েছে ৷ কোনও রাজ্যের শাসন প্রক্রিয়া এমন হতে পারে না ৷’’
অর্থ কমিশনে রাজ্য সরকার বারবার এক জনকেই নিয়োগ করে চলেছে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন ধনকড় ৷ তাঁর কথায়, ‘‘অর্থ কমিশনের একমাত্র কাজ হল, সংবিধান মেনে রাজ্যপালকে প্রস্তাব পাঠানো ৷ কিন্তু শেষ অর্থ কমিশন কোনও প্রস্তাব পাঠায়নি ৷ এ নিয়ে আধিকারিকদের ডেকে পাঠিয়েছিলাম ৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যপাল নাকি কোনও সরকারি আধিকারিককে ডেকে পাঠাতে পারেন না ৷’’
আরও পড়ুন: Monsoon West Bengal : শনিবার পুরোপুরি বিদায় বর্ষার, অপেক্ষা শুরু শীতের
করোনার বিরুদ্ধে যখন যুঝছে গোটা দেশ, সেই সময় এ রাজ্যে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলেও ফের অভিযোগ করেন রাজ্যপাল ৷ তিনি বলেন, ‘‘অতিমারিতে রাজ্যে 2 হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে ৷ এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম ৷ কিন্তু ভাবতে পারিনি, এক জন অভিজ্ঞ মুখ্যমন্ত্রী চিঠি দিয়ে আমাকে চিঠি ধরাবেন ৷ তিন জনের কমিটি গড়েছেন বলে দাবি করেছেন উনি ৷ সেই কমিটির রিপোর্ট কোথায় রাজ্যপালকে অন্তত রিপোর্ট কেন দেওয়া হচ্ছে না ?’’
বিনিয়োগ টানার নামে ফি-বছর রাজ্য বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট করে, কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয় না বলেও দাবি রাজ্যপালের । তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্য বলছে ১২ লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগ এসেছে । কোথায় বিনিয়োগ ? কারা বিনিয়োগ করছেন ?’’ অন্ডাল বিমানবন্দর থেকে আমফান, বুলবুলের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে রিপোর্ট চাওয়া সত্ত্বেও, কোনও জবাব মেলেনি বলে অভিযোগ করেন ধনকড় । মুখ্যমন্ত্রীকে সংবিধান মেনে চলার পরামর্শ দেন তিনি ।