দার্জিলিং, 9 অক্টোবর : পুজোর মধ্যেই ঘুরতে বেরিয়েছেন । গিয়েছেন শৈলরানি দার্জিলিংয়ে । বেড়াতে গিয়ে পুজো মিস করছেন, তা আর হবে না । পর্যটন স্বাভাবিক হতেই এবার করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে দার্জিলিংয়ের চৌরাস্তার ম্যালে শুরু হয়েছে দুর্গাপুজো ৷ নবরাত্রির রীতি মেনে মহালয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে এই পুজো ৷ পৃথক রাজ্যের দাবিতে পাহাড় আন্দোলনের দুঃস্বপ্ন আর করোনার ভ্রূকুটি উড়িয়ে ধুমধামের সঙ্গে শৈলরানিতে শুরু হয়েছে দুর্গাপুজো । বেড়াতে বেরিয়ে পাহাড়ে দুর্গাপুজো পেয়ে যাওয়া বাড়তি পাওনা পর্যটকদের কাছে । তাতে বেজায় খুশি পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরা ।
দার্জিলিংয়ে প্রতি বছর পুজোয় পর্যটকদের ঢল নামে । বেড়াতে এসে পুজো দেখতে না পেয়ে কিছুটা হতাশ হতেন অনেকেই । তাই জিএনএলএফ নেতা সুভাষ ঘিসিং ম্যালে দুর্গাপুজো করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন । সেই সময় দার্জিলিং পৌরসভা ও তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের তরফে পুজোর আয়োজন করা হত । কিন্তু কয়েক বছর পুজো চলার পর রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে বন্ধ হয় ওই পুজো । সুভাষ ঘিসিং ষষ্ঠ তফশিলির দাবিতে সেই সময় পাহাড়ে প্রতিমা পুজো বন্ধ করে পাথর পুজো শুরু করেন । দু'বছর পাথরই পুজো করা হয় পাহাড়ে । তবে ক্ষমতার পালা বদলের পর বিমল গুরুং ফের প্রতিমা পুজো শুরু করেন । তবে 1999 থেকে শুরু হওয়া ওই পুজো বারবার ধাক্কা খেয়েছে গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলনের জেরে । যতবার পাহাড় অশান্ত হয়েছে ততবারই কোপ পড়েছে দুর্গাপুজোয় । কিন্তু পাহাড় শান্ত হওয়ার পর 2018 থেকে ফের শুরু হয় দুর্গাপুজো ।
পুজো উদ্যোক্তা কমিটির সদস্য রবি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "মহালয়া থেকেই আমাদের পুজো শুরু হয় । টানা ন'দিন এখানে পুজো চলে । পর্যটকরা আসেন আমাদের সঙ্গে পুজোয় অংশগ্রহণ করেন । শিলিগুড়ি থেকে প্রতিমা আসে আমাদের পুজোর । আমরা শুধু চাই, পাহাড়ে যাতে আর ওইদিন ফিরে না আসে । মায়ের আরাধনায় আমরা যাতে প্রতি বছর ব্যস্ত থাকতে পারি ।"
শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষর ভাইস চেয়ারম্যান অমর সিং রাই বলেন, "দার্জিলিং মানেই চৌরাস্তা আর ম্যাল । পর্যটকরা ঘুরতে আসলে দুর্গাপুজোকে মিস করেন । পর্যটকদের জন্য এই নিয়ে চতুর্থবার পুজোর আয়োজন করা হয়েছে ।"
পর্যটক পপি পাল বলেন, "বলে বোঝাতে পারব না কতটা ভাল লাগছে । পাহাড় ঘুরতে এসে দুর্গাপুজো পাওয়া সত্যি বাড়তি পাওনা ।" কলকাতা থেকে আগত আর এক পর্যটক প্রদীপ সোম বলেন, "কলকাতার পুজো আর দার্জিলিংয়ের পুজোর মধ্যে অনেক ফারাক রয়েছে । পাহাড়ের পুজোয় পর্যটকরা আরও বেশি মজা উপভোগ করতে পারেন ।"
টানা ন'দিন পুজো কমিটির তরফে খিচুড়ি প্রসাদ বিতরণ করা হয় । মাছ, মাংস, রসুন পেঁয়াজ খেয়ে পুজো মণ্ডপ প্রাঙ্গণে ঢোকা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে । টানা ন'দিন সেখানে মৃন্ময়ী প্রতিমা পূজিত হন । পাহাড়ে ঘন কুয়াশার মাঝে দার্জিলিং ম্যালের পুজো পাহাড়ের পর্যটনে আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে । আর সেই পুজোতে এখন পাহাড়বাসীর পাশাপাশি ঢল নামছে পর্যটকদের ।
আরও পড়ুন : Dokra Art : ডোকরা শিল্পকে বাঁচাতে নজরকাড়া থিম দুর্গাপুরের অগ্রণী সাংস্কৃতিক পরিষদের