শিলিগুড়ি ও কলকাতা, 11 জুলাই : ক্রমশ ভঙ্গুর হচ্ছে দার্জিলিং জেলা সিপিএম (CPIM) । শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করে একের পর এক দল ছাড়ার হিড়িক সিপিএমের অন্দরে ।
এর আগে জেলা সম্পাদকমণ্ডলী বাছাই নিয়ে দার্জিলিং জেলা দলীয় কার্যালয়েই নেতৃত্ব ও কর্মী সমর্থকদের একাংশের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমকে (Bengal CPIM Secretary Md Salim) । এবার শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে সিপিএম ছাড়লেন ছয় নেতা । তাঁরা যোগ দিতে পারেন সিপিআই (CPI)-তে৷ এই নিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর (CPIM Leader Sujan Chakraborty) বক্তব্য, "যে কেউ দলত্যাগ করতেই পারেন । ব্যক্তিগত ব্যাপার । তবে, কী কারণে দলত্যাগ করলেন, তা জেলা কমিটি প্রয়োজন অনুযায়ী খতিয়ে দেখবেন । প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে কথা বলবেন ।"
সুজনের আরও বক্তব্য, "সাধারণত অন্যদল থেকে আসা কাউকে আমাদের দলে নেওয়ার আগে বিশ্লেষণ করা হয় । সিপিআই নিয়েছে, তাদের বিষয় ।"
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, দার্জিলিং জেলা সিপিএমের দলীয় কার্যালয় অনিল বিশ্বাস ভবনে সিপিএমের প্রাক্তন জেলা কমিটির সদস্য পার্থ মৈত্র-সহ জ্যোতি দে সরকার, উজ্জ্বল ঘোষ, বিপুল ঘোষ, বিজয় চৌধুরী ও অজিত গঙ্গোপাধ্যায় অব্যাহতি চেয়ে চিঠি দেন ।
পার্থ মৈত্র বলেন, "দলটা ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে, একের পর এক পরাজয় । অথচ তা নিয়ে কোনও বিশ্লেষণ করা হচ্ছে না । দলের কয়েকজন নেতা সিন্ডিকেট করে দল চালাচ্ছে । দলে থাকতে হলে নেতাদের কথায় চলতে হবে । এক নেতাকে ঘটা করে সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় অব্যাহতি দেওয়া হল, অন্যদিকে, আবার তাঁকে ফিরয়ে আনা হল । এসব কেন করা হচ্ছে ? ফলে দলের গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট হচ্ছে ।"
অন্যদিকে সোমবার মুজাফফর আহমেদ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে সুজন চক্রবর্তী একাধিক বিষয়ে মতামত প্রকাশ করেন । শিয়ালদহ মেট্রো রেল উদ্বোধন নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বৈরথের বিষয়ে সুজনের দাবি, মমতার দেখানো পথেই বিজেপি হেঁটেছে । উল্লেখ্য, পরে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয় ৷ সেই নিয়ে সুজনের মতে মুখ্যমন্ত্রীর থাকা উচিত ছিল ৷
এছাড়া তিনি ছাত্রনেতা আনিস খানের রহস্যমৃত্যুর তদন্তে সিটের চার্জশিটের বিরোধিতা করে আদালতের হস্তক্ষেপে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন । কার্যত, আনিস খানের বাবার সুরেই রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলেন । মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বিনা অনুমতি প্রবেশের ঘটনায় যে নতুন তথ্য উঠে এসেছে, তা নিয়ে সুজনের মত, ‘‘রেইকি করেছে । একাধিক অভিযোগ করছে পুলিশ । অথচ, রাজ্য গোয়েন্দা দফতর কিছু জানতে পারল না । যারা দায়িত্ব থাকেন, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না ।"
21 জুলাই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) টুইটের পাল্টা সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumder) বক্তব্য বিষয়ে সুজনের দাবি, "মুখ্যমন্ত্রী বারবার ফরেন্সিক তদন্তের কথা বলেন । এক্ষেত্রে কেন ফরেন্সিক তদন্ত হওয়া দরকার । কে সত্য কথা বলছেন, তা জানা উচিত । একসঙ্গে তো দুজনের কথা সত্যি হতে পারে না ।"