শিলিগুড়ি, 25 মে : কখনও সম্পূর্ণ লকডাউন, কখনও আংশিক লকডাউন, আবার কখনও প্রায় লকডাউন ৷ পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, করোনা আবহে ঘরবন্দি শিশুদের জীবন। আর তার জেরেই তাদের মধ্যে ঝোঁক বাড়ছে মোবাইল ও ল্য়াপটপ ব্যবহারের প্রতি ৷ অনলাইন ক্লাস থেকে শুরু করে মোবাইলে অনলাইন গেম, কিংবা ইউটিউবে কার্টুন দেখা ৷ আপাতত এতেই মজে রয়েছে শিশুরা ৷ আর তাতেই পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে শিশুদের চরিত্রে ৷ যা নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবক থেকে শুরু করে শিশু বিশেষজ্ঞ, সকলেই ৷
করোনার প্রথম ঢেউ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই হাজির দ্বিতীয় ঢেউ ৷ সংক্রমণ রুখতে রাজ্য়জুড়ে কার্যত লকডাউন জারি করেছে প্রশাসন ৷ বন্ধ রয়েছে স্কুল, কলেজ-সহ সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৷ সংক্রমণ যাতে না ছড়ায়, সেই কারণেই বন্ধ রয়েছে পার্ক, চিড়িয়াখানা ৷ ফলে মাঠে, ময়দানে শিশুদের খেলাধুলো বন্ধ ৷ বন্ধ তাদের স্কুলে যাওয়া ৷ বদলে রোজের ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে ৷ এ এক বিরাট পরিবর্তন ৷ যা বদলে দিয়েছে শৈশবের চেনা ছন্দ ৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, 24 ঘণ্টা বাড়ির চার দেওয়ালে বন্দি থেকে প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়ে যাচ্ছে শিশুদের ৷ বাড়িতে মন বসাতে বাবা, মায়ের মোবাইল, ল্যাপটপকে হাতিয়ার করছে তারা ৷ কিন্তু তাতে যে কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে শিশুদের, তা হয়তো অনেকেই বুঝতে পারছেন না ৷
অনলাইন ক্লাস করার পাশাপাশি মোবাইলে গেম খেলে, কার্টুন দেখে দিন কাটছে শিশুদের ৷ সমবয়সী বন্ধুদের সঙ্গে সামনা-সামনি দেখা করা, বা খেলা করার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না ৷ একঘেঁয়ে জীবনে ক্রমশ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে তারা ৷ পড়াশোনায় আগ্রহ ও মনোযোগ কমছে ৷ বাড়ছে খাবারের প্রতি অনীহা ও জেদ ৷ পাশাপাশি, একাটানা মোবাইল ব্যবহারের ফলে চোখের সমস্য়াও বাড়ছে ৷
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শ্রেয়সী সেন এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে ৷ পাশাপাশি, একটানা লকডাউন পরিস্থিতিতে শিশুদের চরিত্রেও মারাত্মক কিছু বদল আসছে ৷ প্রভাব পড়ছে তাদের শরীর ও মনে ৷ এক্ষেত্রে মোবাইল, ল্যাপটপ থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে অভিভাবকদের ৷’’
আরও পড়ুন : করোনা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে গ্রামে প্রচার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের
পৌষালী সিংহ রায় নামে শিলিগুড়ির এক বাসিন্দা তাঁর শিশু সন্তান সম্পর্কে বলেন, ‘‘খুব চিন্তা হচ্ছে ৷ অনলাইন ক্লাস করানো থেকে ঘরে আটকে রাখা, সবকিছুর জন্যই শিশুর হাতে মোবাইল ধরিয়ে দিতে হচ্ছে ৷ স্কুল বন্ধ থাকায় ভীষণ মনমরা হয়ে থাকে ৷’’ এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের শিশুদের সঙ্গে আরও বেশি করে সময় কাটানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা ৷