শিলিগুড়ি, 16 অক্টোবর : পুজোর পাঁচদিনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে অস্বাভাবিক সংখ্যায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। ষষ্ঠী থেকে দশমী এই পাঁচ দিনে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে 89 জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে ৷ চতুর্থী ও পঞ্চমী ধরলে সংখ্যাটা প্রায় 118 জন ৷ যদিও মৃতদের পরিবারবর্গের এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত নয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷ বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলেই দাবি তাঁদের ৷
মৃতদের পরিবারবর্গের অভিযোগ, পুজোর ক'দিনে হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাবের কারণেই এতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রতিবারই দুর্গাপুজো থেকে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসকরা পালা করে ছুটি নেন। সেই মতো পুজোর আগে থেকেই তৈরি করা হয় চিকিৎসকদের ডিউটির রোস্টার। কিন্তু খাতায় কলমে ওই রোস্টার থাকলেও পুজোর কদিন হাসপাতালে দেখা মেলে না সিনিয়র চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞদের। এবারেও পুজোয় রোস্টার তৈরি করা হলেও আদতে দুর্গাপুজোর শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত দেখা মেলেনি কোনও সিনিয়র চিকিৎসকের, এমনই অভিযোগ উঠছে। পুজোর ক'দিন হাসপাতালের গোটা চিকিৎসা পরিষেবার দায়ভার জুনিয়র চিকিৎসক ও ইন্টার্নদের হাতে চলে গিয়েছিল বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন : Child Fever : উত্তরে লাফিয়ে বাড়ল জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে মৃত আরও 6
শিলিগুড়ি সংলগ্ন বাগডোগরার মৃত এক রোগীর দিদি নাজিমা বেগম বলেন, "পুজোর সময় আমার দাদাকে হাসপাতালে ভর্তি করাই। দাদার শ্বাসকষ্ট ছিল। কিন্তু পুজোর ক'দিন দাদাকে কোনও চিকিৎসকই দেখেননি। বেডে ফেলে রাখা হয়েছিল। যার ফলে আজ দাদা মারা যায় । ওয়ার্ডে থাকা চিকিৎসকদের কিছু জিজ্ঞাসা করতে গেলেই তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছিল।" অন্যদিকে, রায়গঞ্জ থেকে আসা আরেক রোগীর স্ত্রী রেখা দাস বলেন, "এক সপ্তাহ ধরে আমার স্বামী ভর্তি। ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে । কিন্তু একজন চিকিৎসকও গত পাঁচদিনে দেখেনি। একজন চিকিৎসকও নেই ।"
যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷ হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক বলেন, "মৃতের সংখ্যা স্বাভাবিক । অন্যান্যবারের পুজো থেকে এবারের পুজো এবং গড়ে অন্যান্যদিন হাসপাতালে যে পরিমাণ রোগীর মৃত্যু হয় তার চেয়ে বেশি হয়নি। আর পুজোর সময় যে চিকিৎসক ছিলেন না এই অভিযোগও ঠিক নয় । নিয়ম করে যেসব চিকিৎসকদের ডিউটিতে থাকার কথা ছিল তাঁরা সেই মতোই ডিউটি করেছেন।" হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, পুজো বাদে গড়ে প্রতিদিন এক হাজার দুশো থেকে এক হাজার তিনশো রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকেন। তাঁদের মধ্যে গড়ে প্রতিদিন 19 জন রোগী মারা যান, যা স্বাভাবিক ৷