ETV Bharat / city

TMC-BJP : বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে পঞ্চায়েত সভাপতিকে অপসারণ তৃণমূল সদস্যদের - Malda

কালিয়াচক-2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে অপসারণ করলেন তৃণমূল সদস্যরা ৷ দলীয় সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে সাহায্য নিয়েছেন বিজেপির ৷ একই রকম ঘটনা ঘটেছে রতুয়া-1 নম্বর ব্লকের দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও ৷ একই ভাবে সেখানে প্রধানকে অপসারণ করা হয়েছে ৷ কারণ হিসাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করছেন অপসারিত নেতারা ৷

কালিয়াচক-2 পঞ্চায়েত সমিতির সংসার ভাঙল তৃণমূল
কালিয়াচক-2 পঞ্চায়েত সমিতির সংসার ভাঙল তৃণমূল
author img

By

Published : Aug 24, 2021, 10:13 PM IST

মালদা, 24 অগস্ট : বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে জেলা তৃণমূলে যেন ঘর ভাঙার পালা চলছে । দলের নির্দেশ উপেক্ষা করেই দলীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের অপসারিত করছেন তৃণমূল সদস্যরা । তার জন্য বিজেপির হাত ধরতেও ছুৎমার্গ নেই কারোও । আজও তার প্রমাণ মিলেছে রতুয়া-1 নম্বর ব্লকের দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে । বিজেপির সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান পঙ্কজ মিশ্রকে অপসারিত করেছেন শাসকদলের সদস্যরাই । তবে সব ছাপিয়ে সামনে উঠে এসেছে কালিয়াচক-2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ঘটনা । মঙ্গলবার ওই পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতিকেও অপসারণ করেছেন দলীয় সদস্যরা । এখানেও তাঁরা বিজেপির হাত ধরতে কার্পণ্য করেননি । এই ঘটনা দলীয় গোষ্ঠীকোন্দলের উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি । যদিও এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ মোথাবাড়ির বিধায়ক, রাজ্যের তিনটি দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ।

দীর্ঘদিন ধরেই কালিয়াচক-2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিংকু রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজকর্মের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল সদস্য । বিধানসভা নির্বাচনের আগে সভাপতির বিরুদ্ধে বেশ কয়েক কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতি, দলীয় প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিনের বিরোধিতা করার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে । অবশেষে সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য । এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সভাপতি । কিন্তু 19 অগস্ট আদালতের তরফে অনাস্থা প্রক্রিয়া জারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় । এদিন ছিল সেই অনাস্থা প্রস্তাবের তলবি সভা । সভাকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েত সমিতি চত্বর পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় । দফতরের 200 মিটার এলাকায় জারি করা হয় 144 ধারা । শেষ পর্যন্ত অনাস্থা নিয়ে আসা পঞ্চায়েত সমিতির 14 জন সদস্য দফতরে উপস্থিত হন । সভাপতির পক্ষের কেউ সভায় উপস্থিত না হওয়ায় 14-0 ভোটে প্রস্তাব পাশ হয়ে যায় ।

22 আসনবিশিষ্ট এই পঞ্চায়েত সমিতিতে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল 13টি, বিজেপি 5টি, কংগ্রেস 2টি এবং সিপিএম ও সিপিআই 1টি করে আসন পেয়েছিল । আজ সভাপতির বিরুদ্ধে তৃণমূলের সাত, বিজেপির পাঁচ ও কংগ্রেসের দুই সদস্য ভোট দিয়েছেন ।

বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে কালিয়াচক- 2 পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে অপসারিত করলেন শাসকদলের কর্মীরা ৷

সভাপতিকে অপসারণের পর পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ আমিনুর আলম লিপু বলেন, "পঞ্চায়েত সমিতির 22 জন সদস্যের মধ্যে আমরা 14 জন সভাপতি টিংকু রহমান বিশ্বাসের বিপক্ষে ছিলাম । আজ আমরা তাঁকে সভাপতি পদ থেকে অপসারণ করেছি । তিনি আমাদের কোনও সম্মান দিতেন না । আমাদের পরামর্শও নিতেন না । বিধানসভা নির্বাচনে তিনি আমাদের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট করেছেন । এসব কারণেই আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলাম ।"

এদিকে অপসারিত সভাপতি টিংকু রহমান বিশ্বাস বলেন, "আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার । বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাকে অপসারণ করা হয়েছে । যাঁরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, তাঁরা আবার আমার দিকে আঙুল তুলছেন । এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল ছাড়া আর কিছুই নয় । কেউ পিছন থেকে প্রতিশোধ নিচ্ছেন । এভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার থেকে তিনি সামনে আসুন । তিন বছরে আমি কী কাজ করেছি, সেটা এলাকার প্রতিটি মানুষ জানে । শুধু একটি তথ্যেই তা কিছুটা বোঝা যাবে । এই তিন বছরে 31 কোটি টাকায় এলাকায় 70 কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়েছে । আসলে কাউকে স্যালুট করে আমরা রাজনীতি করি না ।"

এলাকার রাজনীতিতে টিংকু রহমান বিশ্বাসের সঙ্গে সাবিনা ইয়াসমিনের আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয় । তবে এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ রাজ্যের মন্ত্রী । তাঁর সাফ কথা, "এটা সম্পূর্ণ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের বিষয় । তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না ।" এদিকে কালিয়াচক-2 নম্বর ব্লকের বিডিও রামল সিং বিরদী বলেন, "আজ কালিয়াচক-2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা ছিল । সভায় 22 জনের মধ্যে 14 জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন । 14-0 ভোটে টিংকু রহমান বিশ্বাসকে সভাপতি পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে । আগামী 10 দিনের মধ্যে মহকুমাশাসকের নির্দেশে নতুন সভাপতি গঠনের নির্বাচনী সভা হবে ।"

আরও পড়ুন : Suvendu Adhikari : কন্টাই সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরানো হল শুভেন্দুকে

মালদা, 24 অগস্ট : বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে জেলা তৃণমূলে যেন ঘর ভাঙার পালা চলছে । দলের নির্দেশ উপেক্ষা করেই দলীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানদের অপসারিত করছেন তৃণমূল সদস্যরা । তার জন্য বিজেপির হাত ধরতেও ছুৎমার্গ নেই কারোও । আজও তার প্রমাণ মিলেছে রতুয়া-1 নম্বর ব্লকের দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে । বিজেপির সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান পঙ্কজ মিশ্রকে অপসারিত করেছেন শাসকদলের সদস্যরাই । তবে সব ছাপিয়ে সামনে উঠে এসেছে কালিয়াচক-2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ঘটনা । মঙ্গলবার ওই পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতিকেও অপসারণ করেছেন দলীয় সদস্যরা । এখানেও তাঁরা বিজেপির হাত ধরতে কার্পণ্য করেননি । এই ঘটনা দলীয় গোষ্ঠীকোন্দলের উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি । যদিও এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ মোথাবাড়ির বিধায়ক, রাজ্যের তিনটি দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ।

দীর্ঘদিন ধরেই কালিয়াচক-2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিংকু রহমান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দলবিরোধী কাজকর্মের অভিযোগে সরব হয়েছিলেন সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূল সদস্য । বিধানসভা নির্বাচনের আগে সভাপতির বিরুদ্ধে বেশ কয়েক কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতি, দলীয় প্রার্থী সাবিনা ইয়াসমিনের বিরোধিতা করার অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে । অবশেষে সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন পঞ্চায়েত সমিতির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য । এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সভাপতি । কিন্তু 19 অগস্ট আদালতের তরফে অনাস্থা প্রক্রিয়া জারি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় । এদিন ছিল সেই অনাস্থা প্রস্তাবের তলবি সভা । সভাকে কেন্দ্র করে পঞ্চায়েত সমিতি চত্বর পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয় । দফতরের 200 মিটার এলাকায় জারি করা হয় 144 ধারা । শেষ পর্যন্ত অনাস্থা নিয়ে আসা পঞ্চায়েত সমিতির 14 জন সদস্য দফতরে উপস্থিত হন । সভাপতির পক্ষের কেউ সভায় উপস্থিত না হওয়ায় 14-0 ভোটে প্রস্তাব পাশ হয়ে যায় ।

22 আসনবিশিষ্ট এই পঞ্চায়েত সমিতিতে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল 13টি, বিজেপি 5টি, কংগ্রেস 2টি এবং সিপিএম ও সিপিআই 1টি করে আসন পেয়েছিল । আজ সভাপতির বিরুদ্ধে তৃণমূলের সাত, বিজেপির পাঁচ ও কংগ্রেসের দুই সদস্য ভোট দিয়েছেন ।

বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে কালিয়াচক- 2 পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে অপসারিত করলেন শাসকদলের কর্মীরা ৷

সভাপতিকে অপসারণের পর পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ আমিনুর আলম লিপু বলেন, "পঞ্চায়েত সমিতির 22 জন সদস্যের মধ্যে আমরা 14 জন সভাপতি টিংকু রহমান বিশ্বাসের বিপক্ষে ছিলাম । আজ আমরা তাঁকে সভাপতি পদ থেকে অপসারণ করেছি । তিনি আমাদের কোনও সম্মান দিতেন না । আমাদের পরামর্শও নিতেন না । বিধানসভা নির্বাচনে তিনি আমাদের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে ভোট করেছেন । এসব কারণেই আমরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলাম ।"

এদিকে অপসারিত সভাপতি টিংকু রহমান বিশ্বাস বলেন, "আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার । বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আমাকে অপসারণ করা হয়েছে । যাঁরা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, তাঁরা আবার আমার দিকে আঙুল তুলছেন । এই ঘটনা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল ছাড়া আর কিছুই নয় । কেউ পিছন থেকে প্রতিশোধ নিচ্ছেন । এভাবে প্রতিশোধ নেওয়ার থেকে তিনি সামনে আসুন । তিন বছরে আমি কী কাজ করেছি, সেটা এলাকার প্রতিটি মানুষ জানে । শুধু একটি তথ্যেই তা কিছুটা বোঝা যাবে । এই তিন বছরে 31 কোটি টাকায় এলাকায় 70 কিলোমিটার রাস্তা তৈরি হয়েছে । আসলে কাউকে স্যালুট করে আমরা রাজনীতি করি না ।"

এলাকার রাজনীতিতে টিংকু রহমান বিশ্বাসের সঙ্গে সাবিনা ইয়াসমিনের আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয় । তবে এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ রাজ্যের মন্ত্রী । তাঁর সাফ কথা, "এটা সম্পূর্ণ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের বিষয় । তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না ।" এদিকে কালিয়াচক-2 নম্বর ব্লকের বিডিও রামল সিং বিরদী বলেন, "আজ কালিয়াচক-2 নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা ছিল । সভায় 22 জনের মধ্যে 14 জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন । 14-0 ভোটে টিংকু রহমান বিশ্বাসকে সভাপতি পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছে । আগামী 10 দিনের মধ্যে মহকুমাশাসকের নির্দেশে নতুন সভাপতি গঠনের নির্বাচনী সভা হবে ।"

আরও পড়ুন : Suvendu Adhikari : কন্টাই সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরানো হল শুভেন্দুকে

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.