ETV Bharat / city

রতুয়ায় দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে গাছ চুরির অভিযোগ তৃণমূলের

দলনেত্রীর মালদা সফরের আগে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে ৷ রতুয়ার বিধায়কের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে গাছ চুরির অভিযোগ দায়ের করলেন দলেরই জনপ্রতিনিধিরা ৷

FIR against MLA
বিধায়কের বিরুদ্ধে গাছ চুরির অভিযোগ
author img

By

Published : Feb 21, 2020, 4:53 AM IST

মালদা, 20 ফেব্রুয়ারি : সামনে পৌর নির্বাচন ৷ আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন ৷ তার আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী কৌশল বোঝাতে মার্চের 4 তারিখ সাংগঠনিক সভা করতে মালদায় আসছেন তৃণমূল নেত্রী ৷ আসছেন শুভেন্দু অধিকারীও ৷ তার আগে রতুয়ায় 40 টি আমগাছ কেটে নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এল শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল ৷

রতুয়ার রুকুন্দিপুরে ওয়াকফ বোর্ডের জমিতে থাকা 40টি আমগাছ কেটে নেওয়ার ঘটনায় এর আগে কংগ্রেস ও CPI(M)-এর বিরুদ্ধে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান ৷ কিন্তু সেই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিলেন সেখানকার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি দাবি করেছিলেন, এসব তৃণমূলের ঝান্ডাধারী সমাজবিরোধীদের কাজ৷ এই কাজের সঙ্গে কংগ্রেস কিংবা CPI(M)-এর কোনও সম্পর্ক নেই ৷ তিনি আরও দাবি করেন, গোটা ঘটনাটি তিনি দলনেত্রীকে জানিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ৷ এই ঘটনায় আগে থেকেই উত্তপ্ত ছিল রতুয়া ৷ সেই আগুনে ঘি ঢালল ওই এলাকার শাসকদলের জনপ্রতিনিধি ও নেতৃত্বের একাংশ ৷ এই ঘটনায় দলেরই বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ও হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাক আলমের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা ৷ গোটা ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ আজ দলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের ফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ৷

ওয়াকফ বোর্ডের 12.4 একর জমিতে ছিল 137 টি আমগাছ ৷ সম্প্রতি সেখানকার ৪০টি গাছ কেটে নেয় দুষ্কৃতীরা ৷ এনিয়ে ওয়াকফ বোর্ডের এগজ়িকিউটিভ অফিসার নাভেদ আক্তার রতুয়া থানা এলাকার তৃণমূল নেতা শেখ ইয়াসিনসহ দুই মিল মালিক উদয় মিশ্র ও হাজি আবদুল হকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷ ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিধায়ক আবদুল গণির নির্দেশেই সেই FIR দায়ের করা হয় ৷ এদিকে এই ঘটনায় জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে রতুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আলমগির রেজা চৌধুরি জানান, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে CPI(M) ও কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা ৷ তাঁর অভিযোগ, এই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগ রয়েছে দলের বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ও হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাক আলমের ৷ এদিকে সমরবাবু ETV ভারতকে বলেন, কংগ্রেস কিংবা CPI(M) নয়, তাঁর দলের ঝান্ডাধারী সমাজবিরোধীরাই এই কাজ করেছে ৷ তিনি এনিয়ে দলনেত্রীর কাছে নালিশ জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ৷ কারণ এই সমস্ত সমাজবিরোধীদের জন্যই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দল ৷ অভিযোগে সমরবাবু কারও নাম না বললেও তাঁর নিশানায় যে রতুয়ার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা শেখ ইয়াসিন, তা বুঝতে কারও অসুবিধে হয়নি ৷

চুপ করে থাকেননি ইয়াসিনও ৷ তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, রতুয়ায় সমরবাবুর কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই ৷ কিন্তু গোটা এলাকা জুড়ে বিভিন্ন জনহিতকর কাজের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁর নাম এলাকার সবাই জানে৷ তাঁর এই জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত বিধায়ক ৷ তাই তিনি তাঁর বিরুদ্ধে এসব মিথ্যে অভিযোগ নিয়ে আসছেন ৷ এদিকে গোটা ঘটনা নিয়ে অস্বস্তিতে থাকা জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর জানিয়ে দেন, অভিযোগ পেয়ে গোটা ঘটনায় পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ দোষীদের অবশ্যই শাস্তি হবে ৷ কাউকে রেয়াত করা হবে না ৷ দোষীদের রাজনৈতিক পরিচয় এখানে গৌণ ৷ এখানেই শাসকদলের বিবাদের শেষ নয় ৷ এই ঘটনায় আজ সমরবাবু ও মোস্তাক আলমের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় গাছ চুরির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শেখ ইয়াসিনের বিবি, মালদা জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ পায়েল খাতুনসহ রতুয়া 1 ও 2 পঞ্চায়েত সমিতি এবং 10টি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক তৃণমূল জনপ্রতিনিধি ৷ এতে শামিল হয়েছেন এলাকার বেশ কয়েকজন প্রথম সারির তৃণমূল নেতাও ৷ তাঁদেরই একজন, জেলা পরিষদ সদস্য হুমায়ুন কবির বলেন, "আমাদের বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়, হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলমকে সঙ্গে নিয়ে ওয়াকফ বোর্ডের আমবাগান কাটাচ্ছেন ৷ তিনি এই ঘটনায় আমাদের দিকে অভিযোগ তুলছেন ৷ এভাবে তিনি দলের বদনাম করছেন ৷ এই ঘটনায় আমরা সমস্ত জনপ্রতিনিধি তাঁর বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷" একই অভিযোগ করেছেন রতুয়া পঞ্চায়েত সমিতির শাসকদলের সদস্য শুভম সরকার ৷

গোটা ঘটনা নিয়ে কলকাতা থেকে সমরবাবু বলেন, "তৃণমূলের ফেট্টি বাঁধলেই সবাই তৃণমূল হয় না ৷ রতুয়ার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্নীতি নিয়ে আমি সরব হয়েছি ৷ বিভিন্ন জায়গায় নালিশ জানিয়েছি ৷ আমার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের তারই প্রতিফলন ৷ এসব সমাজবিরোধীদের একটা কায়দা আছে ৷ যখন যে ক্ষমতায় থাকে তারা সেই দলে ভিড়ে যায় ৷ ওয়াকফ বোর্ডের জমিতে থাকা আমগাছ কারা কেটেছে তা এলাকার মানুষই বলবে ৷ নিজেদের দোষ ঢাকতে এরা অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে ৷ এসব ঘটনায় আমি কখনই যুক্ত নই ৷ আর মোস্তাক আলমের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি৷ কিন্তু তিনি ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য ৷ তিনি এনিয়ে খোঁজখবর নিতেই পারেন৷"

মালদা, 20 ফেব্রুয়ারি : সামনে পৌর নির্বাচন ৷ আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন ৷ তার আগে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচনী কৌশল বোঝাতে মার্চের 4 তারিখ সাংগঠনিক সভা করতে মালদায় আসছেন তৃণমূল নেত্রী ৷ আসছেন শুভেন্দু অধিকারীও ৷ তার আগে রতুয়ায় 40 টি আমগাছ কেটে নেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এল শাসকদলের গোষ্ঠী কোন্দল ৷

রতুয়ার রুকুন্দিপুরে ওয়াকফ বোর্ডের জমিতে থাকা 40টি আমগাছ কেটে নেওয়ার ঘটনায় এর আগে কংগ্রেস ও CPI(M)-এর বিরুদ্ধে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান ৷ কিন্তু সেই অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছিলেন সেখানকার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি দাবি করেছিলেন, এসব তৃণমূলের ঝান্ডাধারী সমাজবিরোধীদের কাজ৷ এই কাজের সঙ্গে কংগ্রেস কিংবা CPI(M)-এর কোনও সম্পর্ক নেই ৷ তিনি আরও দাবি করেন, গোটা ঘটনাটি তিনি দলনেত্রীকে জানিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ৷ এই ঘটনায় আগে থেকেই উত্তপ্ত ছিল রতুয়া ৷ সেই আগুনে ঘি ঢালল ওই এলাকার শাসকদলের জনপ্রতিনিধি ও নেতৃত্বের একাংশ ৷ এই ঘটনায় দলেরই বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ও হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাক আলমের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা ৷ গোটা ঘটনায় প্রবল অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ আজ দলের জেলা সভানেত্রী মৌসম নুরের ফোনেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ৷

ওয়াকফ বোর্ডের 12.4 একর জমিতে ছিল 137 টি আমগাছ ৷ সম্প্রতি সেখানকার ৪০টি গাছ কেটে নেয় দুষ্কৃতীরা ৷ এনিয়ে ওয়াকফ বোর্ডের এগজ়িকিউটিভ অফিসার নাভেদ আক্তার রতুয়া থানা এলাকার তৃণমূল নেতা শেখ ইয়াসিনসহ দুই মিল মালিক উদয় মিশ্র ও হাজি আবদুল হকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷ ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিধায়ক আবদুল গণির নির্দেশেই সেই FIR দায়ের করা হয় ৷ এদিকে এই ঘটনায় জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে রতুয়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান আলমগির রেজা চৌধুরি জানান, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে CPI(M) ও কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা ৷ তাঁর অভিযোগ, এই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগ রয়েছে দলের বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় ও হরিশ্চন্দ্রপুরের কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাক আলমের ৷ এদিকে সমরবাবু ETV ভারতকে বলেন, কংগ্রেস কিংবা CPI(M) নয়, তাঁর দলের ঝান্ডাধারী সমাজবিরোধীরাই এই কাজ করেছে ৷ তিনি এনিয়ে দলনেত্রীর কাছে নালিশ জানিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ৷ কারণ এই সমস্ত সমাজবিরোধীদের জন্যই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দল ৷ অভিযোগে সমরবাবু কারও নাম না বললেও তাঁর নিশানায় যে রতুয়ার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা শেখ ইয়াসিন, তা বুঝতে কারও অসুবিধে হয়নি ৷

চুপ করে থাকেননি ইয়াসিনও ৷ তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, রতুয়ায় সমরবাবুর কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই ৷ কিন্তু গোটা এলাকা জুড়ে বিভিন্ন জনহিতকর কাজের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাঁর নাম এলাকার সবাই জানে৷ তাঁর এই জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত বিধায়ক ৷ তাই তিনি তাঁর বিরুদ্ধে এসব মিথ্যে অভিযোগ নিয়ে আসছেন ৷ এদিকে গোটা ঘটনা নিয়ে অস্বস্তিতে থাকা জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর জানিয়ে দেন, অভিযোগ পেয়ে গোটা ঘটনায় পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ দোষীদের অবশ্যই শাস্তি হবে ৷ কাউকে রেয়াত করা হবে না ৷ দোষীদের রাজনৈতিক পরিচয় এখানে গৌণ ৷ এখানেই শাসকদলের বিবাদের শেষ নয় ৷ এই ঘটনায় আজ সমরবাবু ও মোস্তাক আলমের বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় গাছ চুরির লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শেখ ইয়াসিনের বিবি, মালদা জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ কর্মাধ্যক্ষ পায়েল খাতুনসহ রতুয়া 1 ও 2 পঞ্চায়েত সমিতি এবং 10টি গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক তৃণমূল জনপ্রতিনিধি ৷ এতে শামিল হয়েছেন এলাকার বেশ কয়েকজন প্রথম সারির তৃণমূল নেতাও ৷ তাঁদেরই একজন, জেলা পরিষদ সদস্য হুমায়ুন কবির বলেন, "আমাদের বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়, হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলমকে সঙ্গে নিয়ে ওয়াকফ বোর্ডের আমবাগান কাটাচ্ছেন ৷ তিনি এই ঘটনায় আমাদের দিকে অভিযোগ তুলছেন ৷ এভাবে তিনি দলের বদনাম করছেন ৷ এই ঘটনায় আমরা সমস্ত জনপ্রতিনিধি তাঁর বিরুদ্ধে রতুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি ৷" একই অভিযোগ করেছেন রতুয়া পঞ্চায়েত সমিতির শাসকদলের সদস্য শুভম সরকার ৷

গোটা ঘটনা নিয়ে কলকাতা থেকে সমরবাবু বলেন, "তৃণমূলের ফেট্টি বাঁধলেই সবাই তৃণমূল হয় না ৷ রতুয়ার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের দুর্নীতি নিয়ে আমি সরব হয়েছি ৷ বিভিন্ন জায়গায় নালিশ জানিয়েছি ৷ আমার বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের তারই প্রতিফলন ৷ এসব সমাজবিরোধীদের একটা কায়দা আছে ৷ যখন যে ক্ষমতায় থাকে তারা সেই দলে ভিড়ে যায় ৷ ওয়াকফ বোর্ডের জমিতে থাকা আমগাছ কারা কেটেছে তা এলাকার মানুষই বলবে ৷ নিজেদের দোষ ঢাকতে এরা অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে ৷ এসব ঘটনায় আমি কখনই যুক্ত নই ৷ আর মোস্তাক আলমের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি৷ কিন্তু তিনি ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য ৷ তিনি এনিয়ে খোঁজখবর নিতেই পারেন৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.