মালদা, 6 অগস্ট: স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা হচ্ছে না। তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ছ‘বছরের এক খুদে (The Child does not Get Treatment on Swasthya Sathi Card)। রাজ্যে অর্থের অভাবে চিকিৎসা না-পেয়ে এক শিশুর মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়ার ছবিটা সত্যিই অমানবিক। এই ছবি ধরা পড়েছে দু‘দিন আগেই মন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া তজমুল হোসেনের সংসদীয় ক্ষেত্র হরিশ্চন্দ্রপুরে।
হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার ছ‘বছরের অভি ঋষি । বাবা হিন্দোল ঋষি পরিযায়ী শ্রমিক। মা নমিতা ঋষি ও ঠাকুমা সীমাদেবী গৃহ পরিচারিকার কাজ করেন । এভাবেই চলে মুশহর সম্প্রদায়ের এই পরিবার। পিছিয়ে পড়া জাতির অন্তর্ভুক্ত হলেও তাঁদের সেই সরকারি শংসাপত্র নেই। তাই বিপিএল তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। মাস দুয়েক আগে গ্রামের আর পাঁচটা বাচ্চার মতো সেও আম পাড়তে গাছে উঠেছিল। দুর্ঘটনাবশত গাছ থেকে পড়ে যায় সে। নীচে থাকা আরেকটি শুকনো গাছের ডাল তার পেটে লাগে । তারপর থেকে পেটে ব্যাথা। হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকরা খুদের রোগ ধরতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত মালদা মেডিক্যালে তাকে নিয়ে যাওয়া হলে পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানান, অভির ডানদিকের কিডনি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেটি বাদ দিতে হবে। অস্ত্রোপচারে কয়েক লাখ টাকা খরচ হবে। ছেলেকে সুস্থ করতে হাতে যা ছিল, সব খরচ করে ফেলেছে এই পরিবার। ছেলে ঠিক হয়নি।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে হাসপাতালের বেড মেলেনি, 13 ঘণ্টা ঘুরে প্রৌঢ়ের মৃত্যু
মাঝেমধ্যেই পেটে জল জমছে তার । এক্ষেত্রে অগতির গতি হতে পারত স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। কিন্তু সেই কার্ডে চিকিৎসা হবে না-বলে জানিয়ে দিয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল। হিন্দোলবাবু বলেন, “এলাকায় কাজ না-পেয়ে দিল্লিতে কাজ করতে যাই। সেখানে থাকার সময় ছেলের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে আসি। যতটা সম্ভব, ছেলের চিকিৎসা করিয়েছি। আবাস যোজনার ঘরের টাকাও ছেলের চিকিৎসায় শেষ করে ফেলেছি। এখন আমি নিঃস্ব। সাহায্য না-পেলে ছেলেটাকে বাঁচানো যাবে না। ছেলেকে বাঁচাতে প্রাশাসনের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন অসহায় বাবা ৷
অবশ্য ঘটনাটি জানতে পেরেই ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন চাঁচলের মহকুমাশাসক কল্লোল রায়। তিনি জানিয়েছেন, বাচ্চাটিকে যথাযথ সাহায্য করার জন্য আজই তিনি সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিওকে নির্দেশ দিচ্ছেন।