ETV Bharat / city

প্রচারে "মন্ত্রী" রবী, কমিশনে বিরোধীরা; 'উন্নয়নে গা জ্বলছে', পালটা তৃণমূলের

উপনির্বাচনের জন্য দলীয় প্রচারে গিয়ে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়াম পরিদর্শনে যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । আর তাই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করেছেন তিনি একযোগে এই অভিযোগে সরব বিরোধীরা ।

রবীন্দ্রনাথ ঘোষ
author img

By

Published : May 13, 2019, 9:19 PM IST

Updated : May 13, 2019, 11:54 PM IST

মালদা, 13 মে : হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসেছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । কিন্তু প্রচারের ফাঁকেই গতকাল তিনি কেন্দপুকুর হাইস্কুলের মাঠে গিয়ে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন । কাজের তদারকি করেন । এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারে এসে সরকারি কাজ পরিদর্শন ও তদারকির অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ প্রধান তিন বিরোধী দল । উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে তারা কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে । যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেন মালদা জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল সরকার । তাঁর পালটা দাবি, রবীন্দ্রনাথবাবু কোনও নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেননি ।

আগামী 19 মে রাজ্যের 6টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন । নির্বাচন রয়েছে হবিবপুর কেন্দ্রেও । গত শনি ও রবিবার এই বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় ছোটো ছোটো সভা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । তাঁর সঙ্গে ছিল দলের জেলা নেতৃত্ব । গতকাল বিকেলে নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকেই কেন্দপুকুর হাইস্কুলের মাঠে চলে যান তিনি । ওই মাঠে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি স্টেডিয়াম । সেই স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে জোরকদমে । সেই কাজের তদারকি করেন । আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিরোধী শিবির থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে । আজ এই বিষয়টি নিয়ে ETV ভারতের সামনে মুখ খুলেছেন জেলার বিরোধী ও শাসকদলের শীর্ষ নেতারা ।

BJP-র জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, "গতকাল রাতেই আমরা বিষয়টি শুনেছি । গতকাল রবিবাবু হবিবপুরের বিভিন্ন এলাকায় পাড়ায় পাড়ায় ঘুরেছেন । নির্বাচনী প্রচারের মধ্যে তিনি যে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়ে কাজের তদারকি করেছেন, সেটা আমাদের দলের ছেলেরা দেখেছে । তারা গতকালই রবিবাবুর সামনে এনিয়ে প্রতিবাদ করেছিল । এই কাজ আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি বহির্ভূত । এই নিয়ে আজই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছি । রবিবাবু একজন মন্ত্রী । নির্বাচনী আচরণবিধি নিশ্চয়ই তাঁকে বোঝানোর প্রয়োজন পড়ে না । কিন্তু তিনি মন্ত্রিত্ব ও দলীয় ক্যাডারদের একই পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে এসেছেন । তাছাড়া উনি কোনও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না । দলের নিকৃষ্ট ক্যাডাররা যে কাজ করে, মন্ত্রী হয়ে তিনি একই কাজ করেন ।"

ভিডিয়োয় দেখুন

জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, "একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তিনি প্রচারে যেতেই পারেন । কিন্তু মন্ত্রী হিসাবে তিনি এখন কোনও সরকারি কাজ পরিদর্শন করতে পারেন না । আতঙ্ক থেকেই তিনি এই কাজ করেছেন । মালদা জেলা নির্বাচন আধিকারিকও নিজেকে শাসকদলের দাসে পরিণত করেছেন । সব দেখেও তিনি না দেখার ভান করছেন । গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি ।"

CPI(M) জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র আবার মন্ত্রীর রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন৷ তিনি বলেন, "গতকাল হবিবপুরের কেন্দপুকুরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী এসেছিলেন । হবিবপুরে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী 19 মে । নির্বাচনের জন্য গোটা দেশের পাশাপাশি হবিবপুরেও এখন নির্বাচন আচরণবিধি লাগু রয়েছে । আগামী 27 মে পর্যন্ত তা লাগু থাকবে । এই অবস্থায় একজন মন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে দলীয় নেতা হিসাবে আসতেই পারেন । কিন্তু গতকাল তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেন্দপুকুরে রাজ্য সরকারের একটি প্রকল্প পরিদর্শনে যান । নির্বাচনী প্রচার ও সরকারি কাজের তদারকি একসঙ্গে মেলানো যায় না । এতে ভোটারদের প্রভাবিত করার পাশাপাশি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করা হয়েছে । আমরা এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি । নির্বাচনী আচরণবিধির বইপত্র সবার কাছে আছে । সেটা মন্ত্রীর কাছেও আছে । আসলে এসব নিয়ে পড়াশোনা করেন না । শেখেন না, জানেনও না ।"

যদিও এই ইশুতে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মালদা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল সরকার । তিনি বলেন, "বিরোধীরা তো বিরোধিতা করবেই । গতকাল উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ উপনির্বাচন উপলক্ষ্যে হবিবপুরে প্রচারে গেছিলেন । তবে তিনি কোথাও মন্ত্রীর প্রোটোকল ব্যবহার করেননি । এমন কী মন্ত্রীর গাড়িও ব্যবহার করেননি । হবিবপুরে সভা করার পর তিনি পার্বতীডাঙায় আরেকটি সভা করতে যাচ্ছিলেন । সেই রাস্তাতেই কেন্দপুকুর পড়ে । রাস্তার পাশেই সেখানে স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে । তাই পার্বতীডাঙা যাওয়ার পথে তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়ামটি দেখেছেন । তখন সেখানে কোনও সরকারি লোক ছিল না । কোনও মিস্ত্রি কাজ করছিল না । কোনও ঠিকাদারও ছিল না । যে কোনও লোকই কোনও কাজ দাঁড়িয়ে দেখতে পারে । তিনিও সেই কাজ দেখেছেন । সেটা যদি বিরোধীদের গায়ে লাগে তবে তা লাগতেই পারে । আসলে বিরোধীরা ক্ষমতায় থাকলেও সেখানে কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি । তাই এখন উন্নয়ন দেখে তাদের গা জ্বলছে । ভোটারদের প্রভাবিত করা হয়নি ।"

মালদা, 13 মে : হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসেছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । কিন্তু প্রচারের ফাঁকেই গতকাল তিনি কেন্দপুকুর হাইস্কুলের মাঠে গিয়ে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন । কাজের তদারকি করেন । এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর বিরুদ্ধে প্রচারে এসে সরকারি কাজ পরিদর্শন ও তদারকির অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ প্রধান তিন বিরোধী দল । উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে তারা কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছে । যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেন মালদা জেলা তৃণমূল সভাপতি দুলাল সরকার । তাঁর পালটা দাবি, রবীন্দ্রনাথবাবু কোনও নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেননি ।

আগামী 19 মে রাজ্যের 6টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন । নির্বাচন রয়েছে হবিবপুর কেন্দ্রেও । গত শনি ও রবিবার এই বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় ছোটো ছোটো সভা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । তাঁর সঙ্গে ছিল দলের জেলা নেতৃত্ব । গতকাল বিকেলে নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকেই কেন্দপুকুর হাইস্কুলের মাঠে চলে যান তিনি । ওই মাঠে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি স্টেডিয়াম । সেই স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলছে জোরকদমে । সেই কাজের তদারকি করেন । আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিরোধী শিবির থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে । আজ এই বিষয়টি নিয়ে ETV ভারতের সামনে মুখ খুলেছেন জেলার বিরোধী ও শাসকদলের শীর্ষ নেতারা ।

BJP-র জেলা সভাপতি সঞ্জিত মিশ্র বলেন, "গতকাল রাতেই আমরা বিষয়টি শুনেছি । গতকাল রবিবাবু হবিবপুরের বিভিন্ন এলাকায় পাড়ায় পাড়ায় ঘুরেছেন । নির্বাচনী প্রচারের মধ্যে তিনি যে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়ে কাজের তদারকি করেছেন, সেটা আমাদের দলের ছেলেরা দেখেছে । তারা গতকালই রবিবাবুর সামনে এনিয়ে প্রতিবাদ করেছিল । এই কাজ আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি বহির্ভূত । এই নিয়ে আজই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছি । রবিবাবু একজন মন্ত্রী । নির্বাচনী আচরণবিধি নিশ্চয়ই তাঁকে বোঝানোর প্রয়োজন পড়ে না । কিন্তু তিনি মন্ত্রিত্ব ও দলীয় ক্যাডারদের একই পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে এসেছেন । তাছাড়া উনি কোনও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না । দলের নিকৃষ্ট ক্যাডাররা যে কাজ করে, মন্ত্রী হয়ে তিনি একই কাজ করেন ।"

ভিডিয়োয় দেখুন

জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় বলেন, "একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তিনি প্রচারে যেতেই পারেন । কিন্তু মন্ত্রী হিসাবে তিনি এখন কোনও সরকারি কাজ পরিদর্শন করতে পারেন না । আতঙ্ক থেকেই তিনি এই কাজ করেছেন । মালদা জেলা নির্বাচন আধিকারিকও নিজেকে শাসকদলের দাসে পরিণত করেছেন । সব দেখেও তিনি না দেখার ভান করছেন । গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি ।"

CPI(M) জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র আবার মন্ত্রীর রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন৷ তিনি বলেন, "গতকাল হবিবপুরের কেন্দপুকুরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী এসেছিলেন । হবিবপুরে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী 19 মে । নির্বাচনের জন্য গোটা দেশের পাশাপাশি হবিবপুরেও এখন নির্বাচন আচরণবিধি লাগু রয়েছে । আগামী 27 মে পর্যন্ত তা লাগু থাকবে । এই অবস্থায় একজন মন্ত্রী নির্বাচনী প্রচারে দলীয় নেতা হিসাবে আসতেই পারেন । কিন্তু গতকাল তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেন্দপুকুরে রাজ্য সরকারের একটি প্রকল্প পরিদর্শনে যান । নির্বাচনী প্রচার ও সরকারি কাজের তদারকি একসঙ্গে মেলানো যায় না । এতে ভোটারদের প্রভাবিত করার পাশাপাশি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘণ করা হয়েছে । আমরা এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি । নির্বাচনী আচরণবিধির বইপত্র সবার কাছে আছে । সেটা মন্ত্রীর কাছেও আছে । আসলে এসব নিয়ে পড়াশোনা করেন না । শেখেন না, জানেনও না ।"

যদিও এই ইশুতে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মালদা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল সরকার । তিনি বলেন, "বিরোধীরা তো বিরোধিতা করবেই । গতকাল উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ উপনির্বাচন উপলক্ষ্যে হবিবপুরে প্রচারে গেছিলেন । তবে তিনি কোথাও মন্ত্রীর প্রোটোকল ব্যবহার করেননি । এমন কী মন্ত্রীর গাড়িও ব্যবহার করেননি । হবিবপুরে সভা করার পর তিনি পার্বতীডাঙায় আরেকটি সভা করতে যাচ্ছিলেন । সেই রাস্তাতেই কেন্দপুকুর পড়ে । রাস্তার পাশেই সেখানে স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে । তাই পার্বতীডাঙা যাওয়ার পথে তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে নির্মীয়মাণ স্টেডিয়ামটি দেখেছেন । তখন সেখানে কোনও সরকারি লোক ছিল না । কোনও মিস্ত্রি কাজ করছিল না । কোনও ঠিকাদারও ছিল না । যে কোনও লোকই কোনও কাজ দাঁড়িয়ে দেখতে পারে । তিনিও সেই কাজ দেখেছেন । সেটা যদি বিরোধীদের গায়ে লাগে তবে তা লাগতেই পারে । আসলে বিরোধীরা ক্ষমতায় থাকলেও সেখানে কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি । তাই এখন উন্নয়ন দেখে তাদের গা জ্বলছে । ভোটারদের প্রভাবিত করা হয়নি ।"

Intro:মালদা, ১৩ মে : হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে এসে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিরুদ্ধে সরকারি কাজ পরিদর্শন ও তদারকির অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে প্রধান তিন বিরোধী দল৷ বিরোধী দলগুলি আজই নির্বাচন কমিশনের কাছে উপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ দায়ের করছে বলে জানিয়েছে৷ যদিও বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের মালদা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি দাবি করেছেন, রবিবাবু কোনও নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ করেননি৷ Body:         উল্লেখ্য, আগামী ১৯ মে রাজ্যের মোট ৬টি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে৷ তার মধ্যে রয়েছে হবিবপুর কেন্দ্রটিও৷ এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচারের ময়দানে নেমে পড়েছে প্রতিটি রাজনৈতিক দল৷ শনিবার ও রবিবার এই বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় ছোটো ছোটো সভা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ৷ সঙ্গে ছিলেন দলের জেলা নেতৃত্ব৷ গতকাল বিকেলে নির্বাচনি প্রচারের ফাঁকেই কেন্দপুকুর হাইস্কুলের মাঠে চলে যান তিনি৷ ওই মাঠে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি স্টেডিয়াম৷ তার সীমানা প্রাচীর তৈরির কাজও চলছে জোরকদমে৷ সেই সব কাজের তদারকি করেন রবিবাবু৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলীয় নেতৃত্ব৷ এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিরোধী শিবির থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে৷ আজ বিষয়টি নিয়ে ইটিভি ভারতের সামনে মুখ খুলেছেন বিরোধী ও শাসক দলের জেলার শীর্ষ নেতারা৷
         রবিবাবুর বিরুদ্ধে নির্বাচনি বিধিভঙ্গের অভিযোগ এনে আজ বিজেপির জেলা সভাপতি সঞ্জিৎ মিশ্র বলেন, "গতকাল রাতেই আমরা বিষয়টি শুনেছি৷ গতকাল রবিবাবু হবিবপুরের বিভিন্ন এলাকায় পাড়ায় পাড়ায় ঘুরেছেন৷ নির্বাচনি প্রচারের মধ্যে তিনি যে নির্মীয়মান স্টেডিয়াম পরিদর্শনে গিয়ে কাজের তদারকি করেছেন, সেটা আমাদের দলের ছেলেরা দেখেছে৷ তারা গতকালই রবিবাবুর সামনে এনিয়ে প্রতিবাদ করেছিল৷ এই কাজ আদর্শ নির্বাচনি আচরণবিধি বহির্ভূত৷ এনিয়ে আজই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাচ্ছি৷ রবিবাবু একজন মন্ত্রী৷ নির্বাচনি আচরণবিধি নিশ্চয়ই তাঁকে বোঝানোর প্রয়োজন পড়ে না৷ কিন্তু তিনি মন্ত্রীত্ব ও দলীয় ক্যাডারদের একই পর্যায়ে নামিয়ে নিয়ে এসেছেন৷ তাছাড়া উনি কোনও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না৷ দলের নিকৃষ্ট ক্যাডাররা যে কাজ করে, মন্ত্রী হয়ে তিনি একই কাজ করেন৷ তিনি মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গই ভারতবর্ষ৷ এখানে তাঁরা ক্ষমতায় আছেন৷ তাই তাঁদের যা ইচ্ছে, এখানে তাঁরা তাই করবেন৷"
         জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি কালীসাধন রায় এপ্রসঙ্গে বলেন, "শুধু হবিবপুরে নয়, গোটা দেশেই এখন আদর্শ আচরণবিধি চালু রয়েছে৷ সেই অবস্থায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী সেই আচরণবিধি জানেন না, কোথায় তাঁর যাওয়া উচিত আর অনুচিত, তা তিনি জানেন না, এটা আমরা বিশ্বাস করি না৷ মালদা জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রে হারবেন নিশ্চিত হওয়ার পর হবিবপুর বিধানসভা কেন্দ্রে হেরে যাওয়ার আতঙ্কে জনগণকে প্রভাবিত করার জন্য তিনি অত্যন্ত সচেতনভাবে এই কাজ করেছেন৷ গতকাল রবীন্দ্রনাথ ঘোষ হবিবপুরে নির্বাচনি প্রচারে যান৷ একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসাবে তিনি প্রচারে যেতেই পারেন৷ কিন্তু মন্ত্রী হিসাবে তিনি এখন কোনও সরকারি কাজ পরিদর্শন করতে পারেন না৷ আতঙ্ক থেকেই তিনি এ'কাজ করেছেন৷ মালদা জেলা নির্বাচন আধিকারিকও নিজেকে শাসকদলের দাসে নিজেকে পরিণত করেছেন৷ সব দেখেও তিনি না দেখার ভান করছেন৷ গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই আমরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছি৷"
         এই ঘটনায় সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র আবার মন্ত্রীর রাজনৈতিক জ্ঞান নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন৷ তিনি বলেন, "গতকাল হবিবপুরের কেন্দপুকুরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী এসেছিলেন৷ হবিবপুরে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ মে৷ নির্বাচনের জন্য গোটা দেশের পাশাপাশি হবিবপুরেও এখন নির্বাচন আচরণবিধি লাগু রয়েছে৷ আগামী ২৭ মে পর্যন্ত তা লাগু থাকবে৷ এই অবস্থায় একজন মন্ত্রী নির্বাচনি প্রচারে দলীয় নেতা হিসাবে আসতেই পারেন৷ কিন্তু গতকাল তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কেন্দপুকুরে রাজ্য সরকারের একটি প্রকল্প পরিদর্শনে যান৷ তিনি সেখানে কাজের তদারকি করেন৷ নির্বাচনি প্রচার ও সরকারি কাজের তদারকি একসঙ্গে মেলানো যায় না৷ এতে ভোটারদের প্রভাবিত করার পাশাপাশি নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়েছে৷ আমরা এনিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাচ্ছি৷ নির্বাচন আচরণবিধির বইপত্র সবার কাছে আছে৷ সেটা মন্ত্রীর কাছেও আছে৷ আসলে এসব তাঁরা পড়াশোনা করেন না, শেখেন না, জানেনও না৷"
Conclusion:         যদিও এই ইশ্যুতে বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের মালদা জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল সরকার৷ তিনি বলেন, "বিরোধীরা তো বিরোধিতা করবেই৷ তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে যেসব উন্নয়ন হয়েছে, তারও বিরোধিতা করে৷ গতকাল উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ উপনির্বাচন উপলক্ষ্যে হবিবপুরে প্রচারে গিয়েছিলেন৷ তবে তিনি কোথাও মন্ত্রীর প্রটোকল ব্যবহার করেননি৷ এমনকি মন্ত্রীর গাড়িও তিনি ব্যবহার করেননি৷ হবিবপুরে সভা করার পর তিনি পার্বতীডাঙায় আরেকটি সভা করতে যাচ্ছিলেন৷ সেই রাস্তাতেই কেন্দপুকুর পড়ে৷ রাস্তার পাশেই সেখানে স্টেডিয়াম তৈরি হচ্ছে৷ তাই পার্বতীডাঙা যাওয়ার পথে তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে নির্মীয়মান স্টেডিয়ামটি দেখেছেন৷ তখন সেখানে কোনও সরকারি লোক ছিল না, কোনও মিস্ত্রি কাজ করছিল না, কোনও ঠিকাদারও ছিল না৷ যে কোনও লোকই কোনও কাজ দাঁড়িয়ে দেখতে পারে৷ তিনিও সেই কাজ দেখেছেন৷ সেটা যদি বিরোধীদের গায়ে লাগে, তবে তা লাগতেই পারে৷ আসলে বিরোধীরা ক্ষমতায় থাকলেও সেখানে কোনও উন্নয়ন করতে পারেনি৷ তাই এখন উন্নয়ন দেখে তাদের গা জ্বলছে৷ এতে কোথাও কোনও নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়নি৷ ভোটারদেরও প্রভাবিত করা হয়নি৷"
Last Updated : May 13, 2019, 11:54 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.