মালদা, 21 মে : একের পর এক কালবৈশাখীতে ধাক্কা খেল মালদার আম রফতানি । চলতি মরশুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভালমানের আম বিদেশে রফতানি করা যাবে না বলেই মনে করছে জেলা উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতর । তবুও জেলার কিছু আম বিদেশে রফতানির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট দফতরের তরফে জানা গিয়েছে (Mango Export affected in Kalbaishakhi on Malda)।
2009 সাল পর্যন্ত জেলায় উৎপাদিত আমের সিংহভাগ বাংলাদেশে রফতানি হত । কিন্তু তারপর থেকে বাংলাদেশে আম রফতানি কমতে শুরু করে । এখন সেই রফতানি সম্পূর্ণ বন্ধ । তখন এই জেলার আম অন্যান্য দেশে পাঠানোর উদ্যোগ শুরু হয় । ধীরে ধীরে কাতার, বাহারিন, ইতালি, জার্মানি প্রভৃতি দেশে মালদার আম পাঠানো শুরু হয় । সেই দেশগুলিতে এখানকার আম সমাদৃতও হয় । করোনার জন্য গত দু’বছর জেলার আম বাইরে পাঠানো যায়নি । কিন্তু এবার করোনার প্রভাব অনেকটা কম থাকায় চলতি মরশুমে মালদার আম বেশ ভাল পরিমাণে বিদেশে পাঠানো যাবে বলে মনে করা হয়েছিল । তার জন্য রফতানিকারকরাও জেলা উদ্যানপালন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন । চাষিরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন । কিন্তু একের পর এক কালবৈশাখীর ঝড় ও শিলাবৃষ্টি সেই আশায় প্রায় জল ঢেলে দিয়েছে । ঝড়ে জেলার প্রায় 37 হাজার 508 মেট্রিক টন আম ঝরে গিয়েছে (Kalbaishakhi in Malda)।
জেলা উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সামন্ত লায়েক জানাচ্ছেন, "মরশুমের শুরুতে আমাদের আশা ছিল, এবারও প্রায় সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদিত হতে পারে । কিন্তু দীর্ঘায়িত শীতে প্রথমেই জেলার প্রায় 45 শতাংশ আমগাছে মুকুলের জায়গায় নতুন পাতা গজিয়ে যায় । ফলে সেই লক্ষ্যমাত্রা নেমে আসে এক লাখ 70 হাজার মেট্রিক টনে । এরপরেও আমাদের আশা ছিল, যেহেতু এবার ফলন কম হবে, তাই উৎপাদিত আমের আকার ও মান ভাল হবে । কিন্তু একের পর এক কালবৈশাখী ঝড়ে সেই আশাও ধাক্কা খেয়েছে । বিশেষ করে গতকাল রাতে জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকেই ঝড় হয়েছে । আগের দুটি ঝড়ে প্রায় 17-18 শতাংশ আম গাছ থেকে ঝরে গিয়েছিল । গতকালের ঝড়ে অনেক জায়গায় গাছও উপড়ে গিয়েছে । জেলার প্রায় তিন হাজার 144 হেক্টর জমির আম নষ্ট হয়েছে । এর প্রাথমিক রিপোর্ট আমরা ইতিমধ্যেই জেলায় পাঠিয়েছি ।"
আরও পড়ুন : Malda Kalboishakhi Death : ঝড়ের বলি বালক, গাছ পড়ে আহত আরও 1
সামন্ত লায়েক আরও বলেন, "বিদেশে আম রফতানির জন্য এবার আমরা প্রথম থেকেই উদ্যোগ নিয়েছিলাম । অবশ্য এখনও আমরা সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি । এবারও মালদার আম বিদেশে যাবে । তবে ভাল আকার আর মানের যে আম পাঠানোর কথা ভেবেছিলাম, কালবৈশাখীর জেরে সেই ভাবনা কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল । এতে রফতানিতে প্রভাব তো পড়বেই ।"