মালদা, 9 ফেব্রুয়ারি : মাসির বাড়ি বেড়াতে গিয়ে প্রেমিকাকে বিয়ে করে বাড়ি ফিরেছিল একাদশ শ্রেণির এক পড়ুয়া৷ স্বাভাবিকভাবেই এনিয়ে তাঁকে বকাবকি করেছিলেন বাবা-মা৷ আজ দুপুরে বাড়িতে কেউ না থাকাকালীন একই শাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে নবদম্পতি৷ ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার থানার কোতওয়ালি গ্রামের সাহাপাড়ায়৷
আত্মঘাতী ছাত্রের নাম নির্মল সাহা৷ এলাকায় বাপন নামেই তাকে চেনে সবাই৷ সদ্য আঠারোতে পা দিয়েছে সে৷ স্থানীয় আড়াপুর পরেশনাথ হাইস্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ত৷ বাবা নব সাহা পেশায় রাজমিস্ত্রি৷ মা নিয়তিদেবী সাংসদ ও জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুরের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন৷ প্রতিদিনের মতো আজ সকালে কাজে বেরিয়ে পড়েন নববাবু ও নিয়তিদেবী৷ সেই সময় নববিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে নিজের ঘরে ছিল বাপন৷ বাড়িতে কেউ ছিল না৷
মৌসমের বাড়িতে রান্নার কাজ সেরে বাড়ি ফিরেই নিয়তিদেবী দেখেন, ছেলের ঘরের দরজা বন্ধ৷ অনেক ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া না পেয়ে তিনি দরজার ফাঁক দিয়ে দেখেন, ঘরের ভিতরে ছেলে ও তার সদ্য বিয়ে করা স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে৷ তাঁর চিৎকারে ছুটে আসে এলাকার লোকজন৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ইংরেজবাজার থানার পুলিশও৷
নিয়তিদেবী বলেন, “ক’দিন আগে ছেলে ফরাক্কায় মাসির বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল৷ গতকাল রাতে আমরা ঘুমিয়ে পড়ার পর ছাদের দরজা দিয়ে চুপিসারে ঘরের ভিতরে ঢোকে৷ তার সঙ্গে মেয়েটিও ছিল৷ ওরা দু’জনে দু’জনকে ভালোবসত৷ আজ সকালে আমরা বিষয়টি জানতে পারি৷ কাউকে কিছু না জানিয়ে বিয়ে করার জন্য ছেলেকে একটু বকাবকিও করি৷ ছেলে জানায়, মেয়েটির বাড়ি ফরাক্কা৷ এর বেশি মেয়েটির বিষয়ে আর কিছু জানি না৷ সকালে আমরা দু’জনে কাজে চলে যাই৷ বাড়িতে মেয়ে ছিল৷ সে’ও কোনও কারণে বাইরে গিয়েছিল৷ কাজ থেকে ঘরে ফিরে এই দৃশ্য দেখি৷”
আরও পড়ুন : ক্যানসার আক্রান্ত ছেলে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আশায় প্রশাসনের দরজায় মা
এলাকার মানুষজনের বক্তব্য, নির্মলের বয়স সবে আঠারো হয়েছে৷ মেয়েটির বয়সও সতেরোর বেশি নয়৷ বিয়ের পরেই অভিভাবকদের বকুনি খেয়ে তারা যে এভাবে আত্মঘাতী হবে, তা কেউ মেনে নিতে পারছে না৷ এই ঘটনায় আপাতত দুটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ তবে এখনও মেয়েটির বাড়ির খোঁজ মেলেনি৷