মালদা, 19 জুন : কখনও রাস্তার জমা জলে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা ৷ কখনও আবার রাস্তার জমা জলে ধানের চারা রোপণ ৷ বর্ষায় বেহাল রাস্তা ৷ আর এভাবেই প্রতিবাদ চলছে চাঁচল 1 ব্লকে ৷ আজ জল জমা রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ওই ব্লকের নগাছিয়া গ্রামের মানুষ ৷ তাদের অভিযোগ, এই রাস্তার সংস্কারের জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান, BDO , মহকুমাশাসক, বিধায়ক সব জায়গায় বারবার আবেদন জানানো হয়েছে ৷ ফোন করা হয়েছে " দিদিকে বলো"র নম্বরে ৷ কিন্তু সব জায়গা থেকে মিলেছে শুধুই প্রতিশ্রুতি ৷ রাস্তা সংস্কার আজও হয়নি৷ ফলে বর্ষা শুরু হতেই নাজেহাল হতে হচ্ছে কয়েক হাজার মানুষকে ৷
গত তিন বছর ধরে নগাছিয়া গ্রামের মূল রাস্তাটি বেহাল হয়ে রয়েছে ৷ সামান্য বৃষ্টিতেই প্রায় দেড় কিলোমিটার ওই রাস্তায় জল জমে যায় ৷ সেখান দিয়ে যাতায়াত করতে কাদায় মাখামাখি হতে হয় সবাইকে ৷ অথচ এই রাস্তার ধারেই রয়েছে একটি প্রাথমিক স্কুল, একটি জুনিয়র হাইস্কুল ৷ প্রতিদিন পড়ুয়ারা স্কুলে যায় ৷ যাতায়াত করতে হয় স্থানীয় রানিকামাত, শিহিপুর, রতনপুর, রামপুর গ্রামের বাসিন্দাদেরও ৷ সব মিলিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষ ওই রাস্তা ব্যবহার করে ৷ তাই দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের সব মহলে রাস্তা সংস্কারের জন্য আবেদন জানিয়েছে গ্রামবাসীরা ৷ কিন্তু এখনও কাজের কাজ কিছু হয়নি ৷ তাই আজ রাস্তার জমা জলে ধানের চারা লাগিয়ে বিক্ষোভ দেখাল এলাকার মানুষ ৷
গ্রামের বাসিন্দা হরষিত ঘোষ বলেন, “বৃষ্টি হলে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না ৷ রাস্তার জল বাড়িতেও ঢুকে যাচ্ছে ৷ পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে সবাইকে অনেকবার রাস্তা সংস্কার করার আবেদন জানিয়েছি ৷ কোনও কাজ হয়নি ৷ তাই আজ রাস্তায় আমরা ধানের চারা পুঁতে দিচ্ছি ৷ যাতায়াতই যখন করা যাবে না, তখন রাস্তায় অন্তত ধান উৎপাদন হোক ৷ তিন বছর ধরে আমাদের প্রবল সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ৷ এই রাস্তা দিয়ে অনেক ছেলেমেয়ে স্কুলে যায় ৷ কাদায় পিছলে পড়ছে তারা ৷ অথচ কারও কোনও হেলদোল নেই ৷ তাই আজ আমরা এভাবেই নিজেদের ক্ষোভ জানিয়েছি৷” আরেক গ্রামবাসী ফিরদৌস আলম বলেন, “তিন বছর ধরে এই রাস্তা বেহাল ৷ বৃষ্টি পড়লেই রাস্তায় হাঁটু পর্যন্ত জল জমে যাচ্ছে ৷ প্রশাসনের সব মহলে এই রাস্তা সংস্কারের আবেদন জানিয়েও কোনও কাজ হচ্ছে না ৷ এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে ৷ কিন্তু বেহাল রাস্তায় সবাইকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ৷ তাই বাধ্য হয়ে আজ আমরা এভাবে বিক্ষোভ দেখিয়েছি ৷” এবিষয়ে চাঁচল 1-এর BDO সমীরণ ভট্টাচার্য বলেন, “নগাছিয়া গ্রামের বেহাল রাস্তার কথা আজই জানতে পেরেছি ৷ আমি চাঁচল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের সঙ্গে এনিয়ে কথা বলেছি ৷ তাঁকে রাস্তার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে ৷ রাস্তার পরিস্থিতি খারাপ থাকলে তাঁকে দ্রুত স্কিম তৈরি করে ব্লকে পাঠাতে বলা হয়েছে ৷ আমরা সেই স্কিম খুব তাড়াতাড়ি অনুমোদন করে রাস্তা সংস্কারের ব্যবস্থা নেব ৷”