কলকাতা, 2 জুলাই : আমহার্স্ট স্ট্রিটের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে কোরোনা সন্দেহে এক মৃতদেহ উদ্ধারে তৎপরতা দেখাল কলকাতা পুলিশ। বাড়ির দোতলা থেকে স্বাস্থ্য দপ্তর দেহ নামাতে অস্বীকার করায় ছয় পুলিশকর্মী PPE কিট পরে মৃতদেহ নামালেন। ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাগানের সুদেব সরকার রোডে। মৃতের নাম অমিত ভট্টাচার্য (46)।
সুদেব সরকার রোডে অবস্থিত একটি ত্রিতল বাড়িতে মোট তিনটি পরিবার থাকে। উপরের দু'টি তলে দুই ভাই এবং নিচের তলায় দিদি তার পরিবার নিয়ে থাকেন। তিনতলায় ছোটো ভাই নিজের পরিবার নিয়ে থাকলেও দোতলায় বসবাসকারী অমিত ভট্টাচার্য একাই থাকতেন। তাঁর দিদিই প্রতিদিন তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন। গতরাতে তাঁর স্বামী অমিতকে খাবার দিতে যান। দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পরও সাড়া না মেলায় ফুলবাগান থানায় খবর দেন জামাইবাবু। পুলিশ আসার আগেই তাঁরা বুঝতে পারেন মৃত্যু হয়েছে অমিতের।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অমিতের ওজন ছিল 140 কেজি। দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। এদিকে তিনতলায় বসবাসকারী অমিতের ভাই কোরোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাঁর পরিবার কোয়ারানটিনে রয়েছে। এই কারণেই অমিতের মৃত্যু নিয়ে সংশয়ে পড়েছিল পুলিশ। কারণ প্রোটোকল অনুযায়ী, কোরোনা আক্রান্তের মৃতদেহ পুলিশ উদ্ধার করতে পারে না। ফুলবাগান থানার তরফে স্বাস্থ্য দপ্তরে ফোন করে মৃতদেহ উদ্ধারের অনুরোধ করা হয়। কিন্তু আমহার্স্ট স্ট্রিটের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেই স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে জানানো হয়, এত রাতে যাওয়া সম্ভব নয়।
থানা থেকে সমস্ত বিষয় লালবাজারে জানানো হলে পুলিশ কর্তাদের হস্তক্ষেপে স্বাস্থ্য দপ্তরের দুই কর্মী আসেন। কিন্তু, দোতলা থেকে 140 কেজি মৃতদেহ দুইজন কীভাবে নামাবেন, তা নিয়ে আরেক প্রস্থ নাটক শুরু হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা দেহ আপাতত বাড়িতেই রেখে দেওয়ার প্রস্তাব দিলে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন পুলিশকর্মীরা। ছয়জন পুলিশ PPE কিট পরে ওই মৃতদেহ নামান এবং ময়নাতদন্তের জন্য পাঠান। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করেছে ফুলবাগান থানার পুলিশ।