মালদা, 1 অক্টোবর : পুজোর পর করোনা সংক্রমণ বাড়বাড়ন্ত হতে পারে ৷ সেই আশঙ্কায় এখন থেকেই তৎপর স্বাস্থ্য দফতর । বিশেষত রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালগুলিতে শিশুদের চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করে দেওয়া হয়েছে । রাজ্যের কয়েকটি মেডিক্যাল এবং কলকাতার একটি হাসপাতালকে শিশু চিকিৎসায় উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসাবেও গড়ে তোলা হচ্ছে । তার মধ্যে রয়েছে মালদা মেডিক্যালও । কিন্তু মেডিক্যালে একসঙ্গে অনেক শিশু ভর্তি হলে তার প্রভাব পড়তে পারে চিকিৎসা পরিষেবায় । তাই এই জেলার গ্রামীণ হাসপাতালগুলির সঙ্গে কিছু স্বাস্থ্যকেন্দ্রকেও তৈরি রাখছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ । এমনটাই জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় ।
তিনি বলেন, "জ্বর ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে আমরা বিশেষ অফিসার নিয়োগ করেছি । সব্যসাচী চক্রবর্তী চাইল্ড অফিসার হিসাবে কাজ করছেন । আমরাও মালদা মেডিক্যাল-সহ সব জায়গায় শিশুদের চিকিৎসা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছি ৷ মালদা মেডিক্যালে জ্বর-সহ অন্যান্য উপসর্গে কয়েকটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে । কিন্তু এর সঙ্গে কোভিডের সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই । গত তিন মাসে ছ’মাস থেকে 12 বছর বয়সী 119টিরও বেশি বাচ্চা পোস্ট কোভিড সিনড্রোম নিয়ে ভর্তি হয়েছিল । তার মধ্যে একজন অন্য কারণে মারা গিয়েছিল । বাকিরা সব সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে । সরকারি ব্যবস্থাপনায় তাদের খুব ভাল চিকিৎসা হচ্ছে । অনেক দামি ইনজেকশনও তাদের দেওয়া হচ্ছে । এভাবেই কোভিড সংক্রান্ত সংক্রমণজনিত রোগ থেকে তাদের বাঁচানো যাচ্ছে । এখনও পর্যন্ত এসব উপসর্গ নিয়ে চারটি শিশু ভর্তি রয়েছে । এরা মাল্টিসিস্টেম ইনফ্ল্যামেটরি সিনড্রোম বা এমআইএসসিতে আক্রান্ত (Multisystem Inflammatory Syndrome in Children) ।"
আরও পড়ুন : Child Malutrition: শিশু অপুষ্টিতে প্রথমসারিতে মালদা, সচেতনতা ক্যাম্প কেন্দ্রের
তিনি আরও বলেন, "মালদা জেলায় তিনটি গ্রামীণ হাসপাতাল ও তিনটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নতুন করে শিশুদের জন্য 20টি শয্যা বিশিষ্ট বিশেষ ওয়ার্ড তৈরি করা হচ্ছে । এছাড়া আমরা জেলার 15টি ব্লকের হাসপাতালগুলিতে পাইপলাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি । সেসব কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে । অক্সিজেনের জন্য কোনও প্রত্যন্ত গ্রামের রোগীকে যাতে মালদা মেডিক্যালে ছুটে আসতে না হয়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা । এই ব্যবস্থায় প্রতিটি শয্যায় রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে এবং যেকোনও রোগী প্রতি মিনিটে দুই থেকে আট লিটার কিংবা তারও বেশি অক্সিজেন পাবেন ।”
সম্প্রতি মালদা মেডিক্যালে কয়েকটি শিশুর মৃত্যুকে ঘিরে জেলা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে । অধিকাংশ মানুষেরই ধারণা ছিল, বোধহয় করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে । যদিও মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ প্রথম থেকেই দাবি করেন, করোনা নয় ৷ অন্যান্য একাধিক কারণে এইসব শিশুদের মৃত্যু হয়েছে । বেশিরভাগ শিশুই নিউমোনিয়া কিংবা সেপটিসিমিয়ায় মারা গিয়েছে । তবে এখনও করোনা আতঙ্কে রয়েছে জেলাবাসী । এই অবস্থায় উৎসব মরশুম শুরু হওয়ার আগে গোটা জেলায় শিশু চিকিৎসার পরিকাঠামো বৃদ্ধির কথা বলে জেলাবাসীকে খানিকটা যেন নিশ্চিন্ত করার চেষ্টা করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ।
আরও পড়ুন : Malda Medical : মালদা মেডিক্যালে শিশু মৃত্যু বেড়ে হল 3 ; অস্বাভাবিক নয়, দাবি কর্তৃপক্ষের