ETV Bharat / city

মহানন্দার ভাঙনে বিপজ্জনক নদীবাঁধ, পরিদর্শন খগেন মুর্মুর - মহানন্দার নদীবাঁধ পরিদর্শন সাংসদ খগেন মুর্মুর

বিপজ্জনক অবস্থা নদীবাঁধের ৷ রাতের ঘুম কেড়েছে স্থানীয়দের ৷ বাঁধ পরিদর্শন করলেন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু ৷ তিনি রাজ্যের সেচমন্ত্রীর সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করার আশ্বাস দেন ৷

Mahananda
মহানন্দার ভাঙনে বিপজ্জনক নদীবাঁধ
author img

By

Published : Jan 1, 2021, 12:22 PM IST

মালদা, 1 জানুয়ারি : প্রতি বছর বাঁধ কাটছে মহানন্দা ৷ বর্ষা এলেই রাতের ঘুম উড়ছে এলাকাবাসীর ৷ কোনও কারণে নদীবাঁধ ধসে পড়লে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বেশ কয়েকটি গ্রামের আড়াই থেকে তিন হাজার ঘরবাড়ি ৷ বাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসী আর্জি জানিয়েছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতকে । আবেদন জানিয়েছে ব্লক ও জেলা প্রশাসনকেও ৷ কাজ হয়নি ৷ তাই শেষ পর্যন্ত এলাকার সাংসদের কাছে হত্যে দিয়েছিল গ্রামবাসীরা ৷ শেষ পর্যন্ত বছরের শেষ দিন বাঁধের পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন সাংসদ ৷ কথা দিলেন, শুখা মরশুমেই যাতে সেচ দপ্তর এই বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করে তার জন্য তিনি প্রয়োজনে রাজ্যের সেচমন্ত্রীরও দ্বারস্থ হবেন ৷

গত কয়েক বছর ধরেই পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাতিয়ান মোড়, নাগেশ্বরপুর প্রভৃতি এলাকায় মহানন্দার অল্পবিস্তর ভাঙন চলছে ৷ প্রতি বছর নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বাঁধের একাংশ ৷ ছাতিয়ান মোড়ের মণ্ডলপাড়ায় মহানন্দা বড় বাঁক নিয়েছে ৷ ভাঙনের কারণ সেই বাঁক ৷ নদীর ওপারে মালদা শহরের দিকে মহানন্দায় চর পড়ছে ফি বছর ৷ ফলে নদীর জল সেদিকে যেতে না পেরে ধাক্কা খাচ্ছে মণ্ডলপাড়া এলাকার বাঁধে ৷ নদীর চরিত্র অনুযায়ী, প্রথমে বাঁধের নিচের অংশে ভাঙন হচ্ছে ৷ পরে উপরের অংশ ধসে যাচ্ছে নদীতে ৷ স্থানীয়দের আশঙ্কা, এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মহানন্দা নতুন খাত ধরে বইতে শুরু করবে ৷ তার স্রোতে তলিয়ে যাবে কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার বাড়িঘর ৷ দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রশাসনের সব মহলে আসন্ন বিপদের কথা জানিয়েছে ৷ কোনও কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তারা এলাকার সাংসদ খগেন মুর্মুর দ্বারস্থ হয় ৷

এলাকার বাসিন্দা সত্যনারায়ণ শ্রীবাস্তব জানাচ্ছেন, “এই বাঁধ নির্মাণের 50-55 বছর হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু এখনও বাঁধের কোনও সংস্কার হয়নি ৷ প্রতি বছর বর্ষায় নদীর জল বাড়লেই বাঁধে ধস নামে ৷ এভাবে বাঁধের ভিতর সুড়ঙ্গ তৈরি হয়ে গিয়েছে ৷ বর্ষা বা বন্যা হলেই ভয়ে রাতের ঘুম উড়ে যায় ৷ কখন কোথায় বাঁধ ভেঙে সুড়ঙ্গ দিয়ে নদীর জল ভিতরে চলে আসবে বোঝা যায় না ৷ বাঁধ সংস্কারের জন্য আমরা একাধিকবার পঞ্চায়েতের মাধ্যমে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানিয়েছি ৷ কাজ না হওয়ায় আমরা শেষ পর্যন্ত সাংসদের দ্বারস্থ হয়েছি ৷”

এলাকার আরেক বাসিন্দা, পুরাতন মালদা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা নিতাই মণ্ডলের বক্তব্য, “এভাবে ভাঙন চললে মহানন্দা নতুন গতিপথ তৈরি করে নিতে পারে ৷ এনিয়ে এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে ৷ স্থানীয়রা এই কাজ করার জন্য পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন জানালেও এই কাজ করা পঞ্চায়েতের ক্ষমতার বাইরে ৷ প্রশাসনও এই কাজ করতে এগিয়ে আসেনি ৷ তাই আমরা সবাই সাংসদ খগেন মুর্মুকে বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছি ৷ আমরা চাই, চলতি শুখা মরশুমেই এই কাজ করা হোক ৷”

সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উকিল মণ্ডল বলেন, “প্রতি বছর বর্ষা আসলে আমরা আতঙ্কে থাকি ৷ জলের স্তর বেশি হলে তার ধাক্কায় গোটা বাঁধই ধসে গিয়ে পুরো এলাকা নদীতে তলিয়ে যেতে পারে ৷ আমি বিষয়টি বিডিও থেকে শুরু করে জেলাশাসক, সব জায়গায় জানিয়েছি ৷ কিন্তু কাজ হয়নি ৷ ফলে আমরা বাধ্য হয়ে বিষয়টি সাংসদকে জানাই ৷ তিনি আজ এলাকা পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ৷ এরপরও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে ধরনায় বসব ৷ কারণ, ছাতিয়ান মোড়ের মণ্ডলপাড়ায় মহানন্দার ভাঙন না আটকানো গেলে নদীর অভিমুখও পালটে যাওয়ার সম্ভাবনা ৷”

গতকাল মণ্ডলপাড়া এলাকায় মহানন্দার বাঁধ পরিদর্শনে যান সাংসদ খগেন মুর্মু ৷ তিনি বলেন, “এলাকার মানুষ অনেকদিন আগে বাঁধ রক্ষায় কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমার কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন ৷ ইতিমধ্যে আমি এনিয়ে জেলা সেচ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি ৷ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ররা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, চলতি শুখা মরশুমেই বাঁধ রক্ষার কাজে হাত দেওয়া হবে ৷ আজ আমি এলাকা পরিদর্শন করলাম ৷ মহানন্দার ভাঙনে এই জায়গার বেশ কিছু অংশ সত্যিই বিপন্ন ৷ এবার যাতে শুখা মরশুমেই এই কাজ করা হয়, তা আমি দেখছি ৷ প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আমি রাজ্যের সেচমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব ৷”

মালদা, 1 জানুয়ারি : প্রতি বছর বাঁধ কাটছে মহানন্দা ৷ বর্ষা এলেই রাতের ঘুম উড়ছে এলাকাবাসীর ৷ কোনও কারণে নদীবাঁধ ধসে পড়লে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বেশ কয়েকটি গ্রামের আড়াই থেকে তিন হাজার ঘরবাড়ি ৷ বাঁধ রক্ষায় এলাকাবাসী আর্জি জানিয়েছে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতকে । আবেদন জানিয়েছে ব্লক ও জেলা প্রশাসনকেও ৷ কাজ হয়নি ৷ তাই শেষ পর্যন্ত এলাকার সাংসদের কাছে হত্যে দিয়েছিল গ্রামবাসীরা ৷ শেষ পর্যন্ত বছরের শেষ দিন বাঁধের পরিস্থিতি পরিদর্শন করলেন সাংসদ ৷ কথা দিলেন, শুখা মরশুমেই যাতে সেচ দপ্তর এই বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করে তার জন্য তিনি প্রয়োজনে রাজ্যের সেচমন্ত্রীরও দ্বারস্থ হবেন ৷

গত কয়েক বছর ধরেই পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাতিয়ান মোড়, নাগেশ্বরপুর প্রভৃতি এলাকায় মহানন্দার অল্পবিস্তর ভাঙন চলছে ৷ প্রতি বছর নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বাঁধের একাংশ ৷ ছাতিয়ান মোড়ের মণ্ডলপাড়ায় মহানন্দা বড় বাঁক নিয়েছে ৷ ভাঙনের কারণ সেই বাঁক ৷ নদীর ওপারে মালদা শহরের দিকে মহানন্দায় চর পড়ছে ফি বছর ৷ ফলে নদীর জল সেদিকে যেতে না পেরে ধাক্কা খাচ্ছে মণ্ডলপাড়া এলাকার বাঁধে ৷ নদীর চরিত্র অনুযায়ী, প্রথমে বাঁধের নিচের অংশে ভাঙন হচ্ছে ৷ পরে উপরের অংশ ধসে যাচ্ছে নদীতে ৷ স্থানীয়দের আশঙ্কা, এভাবে ভাঙন চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে মহানন্দা নতুন খাত ধরে বইতে শুরু করবে ৷ তার স্রোতে তলিয়ে যাবে কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার বাড়িঘর ৷ দীর্ঘদিন ধরে তারা প্রশাসনের সব মহলে আসন্ন বিপদের কথা জানিয়েছে ৷ কোনও কাজ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তারা এলাকার সাংসদ খগেন মুর্মুর দ্বারস্থ হয় ৷

এলাকার বাসিন্দা সত্যনারায়ণ শ্রীবাস্তব জানাচ্ছেন, “এই বাঁধ নির্মাণের 50-55 বছর হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু এখনও বাঁধের কোনও সংস্কার হয়নি ৷ প্রতি বছর বর্ষায় নদীর জল বাড়লেই বাঁধে ধস নামে ৷ এভাবে বাঁধের ভিতর সুড়ঙ্গ তৈরি হয়ে গিয়েছে ৷ বর্ষা বা বন্যা হলেই ভয়ে রাতের ঘুম উড়ে যায় ৷ কখন কোথায় বাঁধ ভেঙে সুড়ঙ্গ দিয়ে নদীর জল ভিতরে চলে আসবে বোঝা যায় না ৷ বাঁধ সংস্কারের জন্য আমরা একাধিকবার পঞ্চায়েতের মাধ্যমে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আবেদন জানিয়েছি ৷ কাজ না হওয়ায় আমরা শেষ পর্যন্ত সাংসদের দ্বারস্থ হয়েছি ৷”

এলাকার আরেক বাসিন্দা, পুরাতন মালদা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা নিতাই মণ্ডলের বক্তব্য, “এভাবে ভাঙন চললে মহানন্দা নতুন গতিপথ তৈরি করে নিতে পারে ৷ এনিয়ে এলাকার মানুষ আতঙ্কে রয়েছে ৷ স্থানীয়রা এই কাজ করার জন্য পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন জানালেও এই কাজ করা পঞ্চায়েতের ক্ষমতার বাইরে ৷ প্রশাসনও এই কাজ করতে এগিয়ে আসেনি ৷ তাই আমরা সবাই সাংসদ খগেন মুর্মুকে বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছি ৷ আমরা চাই, চলতি শুখা মরশুমেই এই কাজ করা হোক ৷”

সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান উকিল মণ্ডল বলেন, “প্রতি বছর বর্ষা আসলে আমরা আতঙ্কে থাকি ৷ জলের স্তর বেশি হলে তার ধাক্কায় গোটা বাঁধই ধসে গিয়ে পুরো এলাকা নদীতে তলিয়ে যেতে পারে ৷ আমি বিষয়টি বিডিও থেকে শুরু করে জেলাশাসক, সব জায়গায় জানিয়েছি ৷ কিন্তু কাজ হয়নি ৷ ফলে আমরা বাধ্য হয়ে বিষয়টি সাংসদকে জানাই ৷ তিনি আজ এলাকা পরিদর্শন করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ৷ এরপরও কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আমরা জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে ধরনায় বসব ৷ কারণ, ছাতিয়ান মোড়ের মণ্ডলপাড়ায় মহানন্দার ভাঙন না আটকানো গেলে নদীর অভিমুখও পালটে যাওয়ার সম্ভাবনা ৷”

গতকাল মণ্ডলপাড়া এলাকায় মহানন্দার বাঁধ পরিদর্শনে যান সাংসদ খগেন মুর্মু ৷ তিনি বলেন, “এলাকার মানুষ অনেকদিন আগে বাঁধ রক্ষায় কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমার কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন ৷ ইতিমধ্যে আমি এনিয়ে জেলা সেচ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি ৷ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ররা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন, চলতি শুখা মরশুমেই বাঁধ রক্ষার কাজে হাত দেওয়া হবে ৷ আজ আমি এলাকা পরিদর্শন করলাম ৷ মহানন্দার ভাঙনে এই জায়গার বেশ কিছু অংশ সত্যিই বিপন্ন ৷ এবার যাতে শুখা মরশুমেই এই কাজ করা হয়, তা আমি দেখছি ৷ প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে আমি রাজ্যের সেচমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব ৷”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.