মালদা, 4 জুন : একুশের ভোটে রাজ্যে ক্ষমতায় না আসতে পারলেও বিজেপি হেরে যায়নি । বিজেপির ভোট বেড়েছে । সিপিএম আর কংগ্রেসকে সরিয়ে মানুষ বিজেপিকেই বিশ্বাসযোগ্য প্রধান বিরোধী দল হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে । শনিবার বিজেপির সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই মন্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Bengal Opposition Leader Suvendu Adhikari) । একই সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন (BJP Leader Suvendu Adhikari Slams Mamata Banerjee Government on Various Issue of Bengal) ।
শুভেন্দু বলেন, “2021 সালে এই রাজ্যে বিজেপির 77 জন বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছেন । 2016 সালে আমরা 10 শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম । একুশে মানুষ আমাদের 38.13 শতাংশ ভোট দিয়েছেন ।’’ একই সঙ্গে তিনি ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) নিয়ে মন্তব্য করেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘এই বাংলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এসে বলল, এখানে আইনের শাসন চলে না । শুধু শাসকের আইন চলে । আজ সিবিআই 55টির বেশি এফআইআর করেছে এই রাজ্যে । সংবাদমাধ্যমে প্রতিদিন কখনও উদয়ন গুহ, কখনও শওকত মোল্লা, কখনও অনুব্রত মণ্ডল, কখনও বা রানা সিংহ রায়ের নাম উঠে আসছে । এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই নির্বাচন পরবর্তী হিংসার অভিযোগ রয়েছে ।’’
তাঁর দাবি, ‘‘আমরা বাংলার ভয় কাটাতে চাই । এখানে বিজেপি করলে কাউকে গাঁজা, কাউকে জাল নোট, কাউকে বা অস্ত্র গুঁজে মামলা দেওয়া হচ্ছে । বিজেপির মিছিলে গেলে অন্তোদ্যয়, অন্নপূর্ণার কার্ড কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে । প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা থেকে নাম কেটে দেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে । জবকার্ড থাকার পরেও 100 দিনের কাজ দেওয়া হবে না বলা হচ্ছে । একদিকে পুলিশ, অন্যদিকে লুট করে দখল করা পঞ্চায়েতের মাধ্যমে এই ভয় দেখানো হচ্ছে ।”
শুভেন্দু আরও বলেন, “বিহারের এক কোটি কৃষক প্রতি বছর পিএম কিষান সম্মাননিধি (PM Kisan Samman Nidhi) পাচ্ছেন । উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে তিন কোটি কৃষক এই প্রকল্পের আওতায় আছেন । আর আজ মালদার আম ঝরে গেলেও কৃষকরা এই প্রকল্পের সাহায্য পাচ্ছেন না । কারণ, দিদিমণি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) রাজ্যের সমস্ত কৃষকের তালিকাই কেন্দ্রকে পাঠাননি । এই রাজ্যে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প এখনও চালু হয়নি ।’’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (TMC MP Abhishek Banerjee) দুবাইয়ে চিকিৎসা করতে যাওয়া প্রসঙ্গেও তিনি মুখ খোলেন৷ বলেন, ‘‘মাননীয়ার ভাইপো স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা না করিয়ে চোখ দেখাতে দুবাই ছুটেছেন ।’’
একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই রাজ্যে চাকরি বিক্রি হয়েছে । এই জেলাতেও চাকরি বিক্রি করেছে । এই জেলার তৃণমূলের সভাপতি আইসিডিএসে চাকরি দেবে বলে তুলছেন । আমি ওদের ঘরে ছিলাম । সব জানি । টাকা নিয়ে চাকরি দিতে না পেরে এখনও অনেকে তৃণমূলকে আঁকড়ে বেঁচে রয়েছেন । তাই চোর ধরতে হবে, জেল ভরতে হবে ।’’
তাঁর দাবি, ‘‘এখানে পরেশ অধিকারীর মেয়ে চাকরি পায় । প্রকৃত যোগ্যরা চাকরি পান না । এসএসসির পর প্রাইমারিতে দুর্নীতি নিয়ে আন্দোলন করতে হবে । রাজ্যে অনেক তৃণমূলের নেতানেত্রী রয়েছেন, যাঁদের বাড়ির অযোগ্য লোকজন চাকরি পেয়েছে । সঠিক সময়ে আমরা সেই তালিকা প্রকাশ করব ।”
আরও পড়ুন : Suvendu on KK Death : কে কে-র মৃত্যুতে শুভেন্দুর নিশানায় তৃণমূল, ইডি তদন্তের দাবি বিরোধী দলনেতার