কলকাতা , ১৫ ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী । নিছক সাংবাদিক বৈঠক না করে আইনি পথে বিষয়টির মোকাবিলা করার বার্তা দেন তিনি । অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ করছেন না । অন্যদিকে, তহ্বা সিদ্দিকির দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেন নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন ৷ মানুষ যেন তাঁকে ভুল না বোঝেন, সেই কাজ যে মমতারই করা উচিত সে কথাও একবার স্মরণ করিয়ে দেন তহ্বা ৷ তাঁর আরও বার্তা রাজ্য সরকার BJP-র পক্ষে না বিপক্ষে আছে, সেটা তৃণমূল সরকারকেই স্পষ্ট করতে হবে ৷
সারা রাজ্যে ইতিমধ্যেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে । জাতীয় সড়ক অবরোধ ৷ চলেছে দফায় দফায় বিক্ষোভ । মুর্শিদাবাদ জেলার কৃষ্ণপুর স্টেশনে ভাঙচুর করা হয় । আগুন লাগানো হয় ট্রেনে ৷ শনিবার বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ উত্তেজিত জনতা আগুন লাগায় লালগোলা স্টেশনে ৷ এরপর 34 নম্বর জাতীয় সড়কে সূতি টোল প্লাজ়াতেও আগুন লাগায় বিক্ষোভকারীরা ৷ টোল প্লাজ়ার কর্মীরা আতঙ্কিত হয় এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান ৷ সারাগাছি স্টেশনেও আগুন ধরায় বিক্ষোভকারীরা । টিকিট কাউন্টারে চলে লুটপাট । পরিস্থিতি সামাল দিতে পরে প্রশাসনের তরফে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয় । যদিও মুখ্যমন্ত্রী বারবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন । রাজ্যবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন এ রাজ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল কার্যকরী হবে না ।
তৃণমূলের সরকারি টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করে বিক্ষোভকারীদের আইন হাতে তুলে না নেওয়ার বার্তা দেওয়া হয় । মুখ্যমন্ত্রীর তরফে লেখা হয়, 'গণতান্ত্রিক পথে আন্দোলন করুন । আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না । পথ অবরোধ, রেল অবরোধ করবেন না । সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না রাজ্য সরকার । বাসে আগুন লাগিয়ে, ট্রেনে পাথর ছুড়ে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে '৷
এই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী বলেন, " সুপ্রিম কোর্টে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে কেন মামলা করছেন না মুখ্যমন্ত্রী । শুধুমাত্র সাংবাদিক বৈঠকে বলছেন এই রাজ্যে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকরী হবে না । কিন্তু কোনও উপযুক্ত পদক্ষেপ করছেন না । অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী ব্যবস্থা না নিলে বিরামহীন অচলাবস্থা তৈরি করা হবে সমগ্ৰ রাজ্যে । NRC এবং CAA-র বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী কতটুকু আন্তরিক সে বিষয়ে প্রশ্ন তুলছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সিংহভাগই । এই মুহূর্তে ব্লকে ব্লকে সংশ্লিষ্ট আইন দুটির বিরুদ্ধে প্রচার চলছে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় । রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) ডানকুনিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই আইনের বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে আমরা তাঁর পক্ষে আর নেই । "